জনসংযোগ বাড়াতে ‘ফ্রেন্ডশিপ কাপ’ ফুটবলের প্রতিযোগিতা আগেই শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশ। তবে সেই প্রতিযোগিতা করা হতো কেন্দ্রীয় ভাবে। এ বার প্রতিটি থানা এলাকায় আলাদা আলাদা ভাবে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে লালবাজার। সেই খেলা হবে থানা এলাকার ক্লাবগুলিকে নিয়ে।
ফ্রেন্ডশিপ কাপ ফুটবলের টাকা জোগাত স্পনসর সংস্থাগুলি। কিন্তু থানা এলাকার এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পয়সা জোগাচ্ছে খোদ সরকারই। লালবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (৩) জগমোহন এই মর্মে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রতিটি থানা এলাকায় এই প্রতিযোগিতা শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে খেলাধুলোর আয়োজন করা পুলিশের কাছে নতুন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু ভোটের আগে তড়িঘড়ি এই প্রতিযোগিতা করে রাজ্য সরকার পুলিশকে কাজে লাগিয়ে ক্লাবগুলিকে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করছে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের অন্দরে। লালবাজারের একাংশ বলছেন, কলকাতা পুলিশের ৬৯টি থানাকে ১ লক্ষ করে মোট ৬৯ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে। সদর দফতরের জন্য বাজেট ধরা হয়েছে আরও ৫ লক্ষ টাকা। তাই ভোটের আগে ‘খয়রাতি’র প্রসঙ্গ ওঠা স্বাভাবিক। এক ডেপুটি কমিশনার বলছেন, ‘‘ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা শেষ করতে বলা হয়েছে। কাজেই এর সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক যে নেই, এমনটা হলফ করে বলা যায় না।’’ যদিও জগমোহন পাশাপাশি দাবি করেছেন, ‘‘এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। রাজ্যের অনেক থানাই এমন টাকা পেয়েছে। তেমন আমরাও সরকারি টাকা পেয়েছি।’’
তবে লালবাজারের পাঠানো নির্দেশিকা নিয়ে বিভ্রান্তিও রয়েছে পুলিশের অন্দরে। পুলিশের একাংশ বলছে, ওই নির্দেশে এলাকার ১৬টি ক্লাবকে নিয়ে প্রতিটি থানাকে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে বলা হয়েছে। টি-২০ ক্রিকেট, ভলিবল, মহিলাদের ফুটবল, ক্যারাটে, জুডো, কিক বক্সিং এবং খালি হাতে লড়াই— এমন পাঁচটি খেলার মধ্যে বেছে নিতে হবে যে কোনও দু’টিকে। কলকাতা পুলিশের এক অফিসারের কথায়, ‘‘খালি হাতে লড়াই বা আনআর্মড কমব্যাট পুলিশ বা সেনা প্রশিক্ষণের বিষয়। তাতে ক্যারাটে, জুডো শেখানো হয়। তাই খালি হাতে লড়াইয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করব কী ভাবে, সেটাই বুঝতে পারছি না।’’
শুধু এখানেই শেষ নয়, এই নির্দেশ পাওয়ার পর থেকে চিন্তায় বিভিন্ন থানার অফিসারেরা। তাঁরা বলছেন, এলাকা থেকে কী ভাবে ক্লাব বাছাই করব, তা নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে। কারণ, ক্লাবগুলির নথিভুক্তির শংসাপত্র, তিন বছরের অডিট রিপোর্ট, সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, নিজস্ব জমি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ইত্যাদি যাচাই করা উচিত। দক্ষিণ শহরতলির একটি থানার ইনস্পেক্টর বলছেন, ‘‘এ সব দেখে বাছাই করতে গেলে সময় বয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy