সংগ্রহশালার প্রবেশপথ
বছর দুই আগে শহরে ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছিল দুর্গাপ্রতিমা সংগ্রহশালার। কিন্তু পর্যাপ্ত সংরক্ষণ এবং স্পষ্ট রূপরেখার অভাবে সমস্যা দেখা দিয়েছে তার রক্ষণাবেক্ষণে। বেশিরভাগ সময়েই সংগ্রহশালাটি বন্ধ থাকছে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের তরফে কেআইটি-কে ওই সংগ্রহশালার তদারকি ও মানোন্নয়নের নির্দেশ দেওয়া হল।
কলকাতার শিল্প সমন্বিত দুর্গাপ্রতিমা পুজোর পরেও যাতে আগ্রহীরা দেখতে পান, সেই লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ২০১২-এ কেএমডিএ রবীন্দ্র সরোবরে তৈরি করে ‘মা ফিরে এল’ নামে ওই সংগ্রহশালা। সে বছর ১২ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী এটির উদ্বোধন করেন। সে বছর সংগ্রহশালায় ছিল ৯টি দুর্গা ঠাকুর। কিন্তু পর্যাপ্ত জায়গা না থাকা সত্ত্বেও গত বছর তাতে যুক্ত হয় আরও পাঁচটি প্রতিমা। এ বার নতুন ক’টি প্রতিমা আসবে, পুরনো ক’টি প্রতিমা সরাতে হবে, উত্তর জানা নেই কারও।
সোমবার সংগ্রহশালায় গিয়ে দেখা গেল, শাটার নামানো। কেআইটি-র এক কর্তার নির্দেশে নিরাপত্তারক্ষী শাটার তুলে, আলো জ্বেলে দিলেন। কেএমডিএ-র দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ভাস্কর সেনগুপ্ত বলেন, “আমরা সংগ্রহশালাটি তৈরি করে দিয়েছি। কিন্তু তার তদারকি ও মানোন্নয়নের কাজ করার কথা কেআইটি-র।” কেআইটি-র পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার সুধীন নন্দী বলেন, “ক’টি প্রতিমা এ বার আসবে, মুখ্যমন্ত্রীর বাছাইয়ের সুপারিশ অনুযায়ী তা ঠিক হবে। সেই অনুযায়ী কাজ হবে।” এ ব্যাপারে একটি কমিটি তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানান সুধীনবাবু।
দক্ষিণ কলকাতার একটি পুজো কমিটির সম্পাদক কাজল সরকার বলেন, “২০১২ সালে রাখা ৯টি প্রতিমার মধ্যে ৬টি মাটির। উল্টোডাঙার একটি পুজোর প্রতিমা তামার। শ্যামবাজার অঞ্চলের এক পুজোর প্রতিমা সেরামিক্সের। ওই দু’টি রেখে দেওয়া হবে।” সংগ্রহশালায় তেলেঙ্গাবাগানের একটি পুজোর প্রতিমা ছাড়াও কসবা, চেতলা ও লেকটাউন এই তিন অঞ্চলের তিনটি প্রতিমা আছে লক্ষ্মী সরস্বতী কার্তিক গণেশ-সহ। উত্তর কলকাতার একটি পুজোর প্রতিমা ছাড়া শুধুমাত্র দুর্গা রাখা হয়েছে নাকতলা, যোধপুর পার্ক, বড়িশা ও শিকদারবাগানের একটি পুজোর।
রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামের কাছে রেল লাইনের ধার ঘেঁষে পরিত্যক্ত একটি গুদাম পরিষ্কার করে তৈরি হয়েছে এই সংগ্রহশালা। আয়তন প্রায় সাড়ে সাত হাজার বর্গফুট। প্রতিটি প্রতিমার জন্য বরাদ্দ ১৫ ফুট লম্বা, ১০ ফুট চওড়া জায়গা। কেআইটি-র এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “আমরা সংগ্রহশালার চারপাশ আরও আকর্ষণীয় করছি। গোড়ায় দর্শকদের জন্য লগবুক ছিল। এখন নেই। ফের লগবুক রাখা হবে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও আমন্ত্রণ জানাব যাতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এই সংগ্রহশালা দেখার সুযোগ পান।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy