প্রতীকী ছবি।
অন্যমনস্কতা যে এমন বিপদ ডেকে আনবে ভাবতেও পারেননি ব্যারাকপুর নোনাচন্দনপুকুরের বাসিন্দা অমিয় সেনগুপ্ত। ষাটোর্ধ্ব ওই বৃদ্ধের স্ত্রী শিবানীদেবীর মোবাইলে মঙ্গলবার দুপুরে ফোন এসেছিল ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির। সেই ফোন ছাড়ার দশ মিনিটের মধ্যেই চল্লিশ হাজার টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে অমিয়বাবুর।
অমিয়বাবু জানিয়েছেন, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ব্যারাকপুর স্টেশন শাখার একটি সেভিংস অ্যাকাউন্টে তাঁর সঞ্চিত টাকার বেশির ভাগটাই জমা রাখা আছে। মঙ্গলবার দুপুরে ফোন করে নিজেকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলে পরিচয় দেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, অমিয়বাবুর অ্যাকাউন্টে কিছু গন্ডগোল ঘটেছে। শিবানীদেবী বিষয়টি বুঝতে না পেরে অমিয়বাবুকে ফোন দেন। তিনি অ্যাকাউন্টের সমস্যার কথা শুনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
অমিয়বাবু বলেন, ‘‘দুপুর পৌনে একটা নাগাদ ফোনটা আসে। অ্যাকাউন্টে কিছু সমস্যা হচ্ছে, এ কথা জানিয়ে অ্যাকাউন্টের ডেবিট কার্ডের পিন নম্বরটি জানতে চান ওই ব্যক্তি। আমি অন্যমনস্ক ছিলাম। ভাবনাচিন্তা না করে, ভুল করে পিন নম্বরটি বলে ফেলি। আর তাতেই বিপত্তি বাধে। বলেই বুঝেছিলাম ভুল হয়েছে। কিন্তু তত ক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।’’ অমিয়বাবুর দাবি, তিনি ফোন ছেড়েই ব্যাঙ্কে ছুটেছিলেন। পাশবই আপডেট করতেই দেখেন, বেলা একটা থেকে দেড়টার মধ্যে তাঁর অ্যাকাউন্টের ৪০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে মুম্বইয়ের একটি এটিএম থেকে।
এর পর থানা, সাইবার ক্রাইম বিভাগ— সর্বত্রই অভিযোগ দায়ের করেছেন অমিয়বাবু। কিন্তু টাকার বা সেই অমিত গঙ্গোপাধ্যায় নামে পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির কোনও খোঁজ মেলেনি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ওই শাখা সূত্রে জানানো হয়েছে, এমন ঘটনা এই শাখায় প্রথম বার। তবে পিন নম্বর জেনে নিয়ে টাকা লোপাটের ঘটনা আকছার ঘটছে এ রাজ্যে।
মাস কয়েক আগে বই বাজারের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে লক্ষাধিক টাকা কয়েক দফায় তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। সে ক্ষেত্রেও জানা গিয়েছিল, মুম্বইয়ের চারটি এটিএম থেকে ওই টাকা তোলা হয়েছে। সম্প্রতি সোদপুরেও এক ব্যক্তির টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল একই কায়দায়। সে বারেও মুম্বইয়ের এটিএম থেকে টাকা তোলার খবর মিলেছিল ব্যাঙ্ক সূত্রেই।
দিন কয়েক আগেই আমির আলি নামে এক এটিএম হ্যাকারকে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম বিভাগ গ্রেফতার করে নোয়াপাড়ার একটি এটিএম থেকে কয়েক লক্ষ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে। তাঁর সঙ্গে মুম্বইয়ের কার্ড ডালিয়াতি চক্রের কোনও যোগ আছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘এই বিষয়গুলি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তবে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদেরও খেয়াল রাখতে হবে যাতে এমন ভুল না করেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy