মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রাক্কালে শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়ে প্রধান শিক্ষকদের একটি সংগঠন সব নির্দেশিকা বাংলায় লেখার আর্জি জানাল। ফাইল ছবি।
শিক্ষা দফতরের তরফে স্কুলগুলিকে যে নির্দেশিকা বা বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়, তার অধিকাংশের বয়ানের ভাষা ইংরেজি। আজ, মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রাক্কালে শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়ে প্রধান শিক্ষকদের একটি সংগঠন সব নির্দেশিকা বাংলায় লেখার আর্জি জানাল। ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর তরফে জানানো হয়েছে, তারা এই ব্যাপারে শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনের নেতৃত্বের প্রশ্ন, প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডে শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তি যেখানে হিন্দিতে দেওয়া হয়, সুদূর কেরলে শিক্ষা দফতরের অধিকাংশ নির্দেশিকা যেখানে হয় মালয়ালমে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে কেন বাংলায় নির্দেশিকা দেওয়া হবে না?
তবে শিক্ষকদের একাংশ এ-ও জানাচ্ছেন, শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তি বাংলায় এলে তাতে কোনও কোনও সময়ে বানান ভুল থাকে। অনেক ক্ষেত্রে বাক্য গঠন এমন হয় যে, তার মর্মোদ্ধার করতে সময় লাগে। সেই সঙ্গে তাঁদের মতে, এখন পঞ্চম শ্রেণি থেকে কম্পিউটার শেখানো শুরু হয়। সেই সময়ে ইংরেজির পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের বাংলা লেখা শেখানোর ব্যবস্থা করলে তারাই উপকৃত হবে।
শিক্ষক সংগঠন ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘মোবাইলেও বাংলা লেখা শেখাটা খুব জরুরি। না হলে ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লেখার ফলে বাংলার জ্ঞান বাড়ে না, ইংরেজিটাও ঠিক মতো শেখে না পড়ুয়ারা।’’ ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘বাংলা ভাষাকে মর্যাদা দিতে গেলে শিক্ষা ক্ষেত্রে এর ব্যবহারিক প্রয়োগ আরও বাড়াতে হবে।’’
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের প্রবীণ নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকারি কাজে যাতে বাংলার প্রয়োগ বেশি করে হয়, তার জন্য বহু বার রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি। ১৯৬৫ সালে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সরকারি কাজে ব্যাপক ভাবে বাংলা ব্যবহার করা হবে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত আজও বাস্তবায়িত হল না।’’
রাজ্য সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেন, ‘‘৪০ বছর আগে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ‘কাজের ভাষা বাংলা চাই’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। সত্যিই কি তা-ই হয়েছে? শুধু শিক্ষা দফতর উদ্যোগী হলেই হবে না। সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকেও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy