কলকাতার সেরা পুজোগুলো এ বার দেখা যাবে ‘ভারচুয়াল ট্যুরের’ মাধ্যমে। তা-ও আবার পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকেই। হা-পিত্যেশ করে লাইন না দিয়ে এই ট্যুরেই মণ্ডপের আনাচ কানাচে ঘুরে দেখে নেওয়া যাবে খুঁটিনাটি কারুকার্য। ভিড়ভাট্টা বা ধাক্কাধাক্কিও ঠেলতে হবে না।
কম্পিউটারের সামনে বসে ইচ্ছেমতো পুজোমণ্ডপে ঘুরে বেরোনোর এই পদ্ধতি বের করেছেন কলকাতারই জনা দশেক পেশাদার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। তাঁদের দাবি, টিভিতে দেখা পুজো পরিক্রমার মতো নয় বরং যে ভাবে মণ্ডপে ঢুকে ঘুরে ঘুরে খুঁটিনাটি দেখেন সকলে সে ভাবেই এই ট্যুর করা যাবে। গত বছর ওই পেশাদারেরা কলকাতার ১৮টি পুজোমণ্ডপে ‘ভারচুয়াল ট্যুরের’ ব্যবস্থা করেছিলেন। এ বার ৩০-৩৫টি মণ্ডপে ট্যুর করা যাবে বলে জানালেন তাঁরা। আরও জানাচ্ছেন, বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেখা যাবে পুজোগুলি। তাঁদের দাবি, আগামী বছর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আরও বেশি সংখ্যক পুজো দেখার ব্যবস্থা করা হবে।
কী করে মাথায় এল এমন পরিকল্পনা? উত্তর দিলেন ওই পেশাদারদের এক জন, লেকটাউনের বাসিন্দা অর্পণ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বললেন, “এক সময়ে কর্মসূত্রে দীর্ঘ দিন দেশের বাইরে ছিলাম। তখন পুজোর সময়ে খুব মন খারাপ হত। মনে হত যদি ওখানে বসে ঘুরে দেখা যায় শহরের পুজো।” ভাস্কর মুখোপাধ্যায় নামে এক সদস্য জানান, বড় হোটেলের ওয়েবসাইটে অনেক সময়ে ভারচুয়াল ট্যুরের ব্যবস্থা থাকে। হোটেলে যাওয়ার আগে ঘরগুলি কেমন তা জানতে অনেকে ভারচুয়াল ট্যুর করেন। বহু ভ্রমণ সংস্থাও দর্শনীয় স্থানে ভারচুয়াল ট্যুরের ব্যবস্থা করছে। কারণ অনেকেই ট্যুর করে সিদ্ধান্ত নেন সেই জায়গায় যাবেন কী না। এ সব থেকেই পুজোমণ্ডপে ট্যুরের কথায় মাথায় আসে অর্পণদের।
ওই পেশাদারেরা জানাচ্ছেন, বাঙালির দুর্গাপুজোকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতেই এই ভারচুয়াল ট্যুরের ব্যবস্থা। বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকেই ইচ্ছেমতো ঘুরে দেখা যাবে কলকাতার সেরা পুজোগুলি। তা ছাড়া ইন্টারনেটের দুনিয়ায় পুজোমণ্ডপগুলি স্থায়ী ভাবে থেকে যায়। ফলে আজকের কোনও বড় পুজোমণ্ডপ কেমন ছিল তা দশ বছর পরেও দেখা যাবে। বিশেষত বয়স্ক মানুষ যাঁদের অসুস্থতার কারণে ঘুরে দেখার সামর্থ্য নেই তাঁরা সহজেই এই ট্যুরের মাধ্যমে ঘুরে আসতে পারবেন শহরের সব সেরা পুজোমণ্ডপে।
গত বছর শহরের একটি বড় পুজোয় মূল আকর্ষণ ছিল প্রতিমার সোনার অলঙ্কার। সাধারণত ওই পুজোমণ্ডপে ঢুকতেই লেগে যায় ঘণ্টা দুই। তার পরে মণ্ডপের ভিতরে ঠেলাঠেলি আর ধস্তাধস্তি। এ সবের মধ্যে কতটা ভাল ভাবে অলঙ্কার দেখতে পেয়েছিলেন দর্শনার্থীরা? অর্পণদের দাবি, ভারচুয়াল ট্যুরের মাধ্যমে কিন্তু তার থেকে অনেক বেশি সহজেই প্রতিমার খুঁটিনাটি দেখা গিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy