Advertisement
০২ মে ২০২৪
Calcutta High Court

Calcutta High Court: টানাপড়েনের জেরে দু’বছর মর্গে দেহ! সৎকারের নির্দেশ হাই কোর্টের, নেপথ্যে সম্পত্তি?

মৃত প্রৌঢ়ের পরিচারিকার দাবি, সব সম্পত্তি তাঁর নামে ইচ্ছাপত্র (উইল) করে গিয়েছিলেন মনিব। সূত্রের খবর, সম্পত্তির মূল্য প্রায় কোটি টাকা।

কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২ ২২:২৭
Share: Save:

দু’বছর আগে মৃত্যু হয়েছে! কিন্তু এখনও দেহের সৎকার হয়নি। কারণ, এত দিন ‘ন্যায্য দাবিদার’ কাউকে পাওয়া যায়নি বলে পুলিশের দাবি। তবে এখন সেই দেহ নিয়েই শুরু হয়েছে টানাপড়েন। মৃত প্রৌঢ়ের সম্পত্তিই এর কারণ বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। দেহের অধিকার চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাড়ির পরিচারিকা। সম্পত্তির বিষয়টি বাদ রেখে হাই কোর্ট এক আত্মীয় এবং ওই পরিচারিকাকে মৃতদেহ সৎকারের নির্দেশ দিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ২০২০ সালের জুলাই মাসে দক্ষিণ কলকাতার আনন্দপুর এলাকার বাসিন্দা দেবাশিস দাসের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। মৃত্যুর পর হাসপাতালেই পড়ে ছিল দেহ। কেউ নিতে আসেননি। অন্য দিকে, মৃত দেবাশিসের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন এক মহিলা। ওই মহিলার দাবি, বিষয়-সম্পত্তি সব তাঁর নামে ইচ্ছাপত্র (উইল) করে গিয়েছিলেন মনিব। আদালতে ওই পরিচারিকা জানান, মৃত্যুর শংসাপত্র হাতে না পাওয়ায় এখন নিজেকে সম্পত্তির দাবিদার হিসাবে প্রমাণ করতে পারছেন না তিনি। পুলিশকে বার বার বলা সত্ত্বেও, তারা মৃতদেহ এবং মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে অস্বীকার করেছে। তাই হাই কোর্টে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

আনন্দপুর থানা হাই কোর্টকে জানায়, ওই পরিচারিকা মৃতের নিকটজন বা কোনও আত্মীয় নন। মৃতের সঙ্গে আইনি ভাবেও তাঁর কোনও সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই পরিচারিকাকে দেহ দেওয়া হয়নি। পুলিশ আরও জানায়, আত্মীয়ের খোঁজ পেতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দিন পর এক ব্যক্তি দেবাশিসের ‘মাসির ছেলে’ বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে মৃতদেহ নিতে আসেন। অর্থাৎ, এক দিকে, ওই পরিচারিকা এবং অন্য দিকে, ‘মাসির ছেলে’ দু’জনেই মৃতদেহের অধিকার দাবি করেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, এত দিন পর এ ভাবে মৃতদেহের অধিকার নিয়ে টানাপড়েনের মূল কারণ সম্পত্তি হতে পারে। কারণ, এই ঘটনার তদন্তের সময় প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানা গিয়েছিল, মৃত ব্যক্তির প্রায় এক কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। তাঁর নিজের বলতে কেউ নেই। তিনি বিবাহিতও ছিলেন না। শেষ কয়েক বছর বাড়িতে সর্বক্ষণ ওই পরিচারিকাই থাকতেন। তিনিই দেখাশোনা করতেন দেবাশিসের।

বুধবার বিচারপতি শম্পা সরকার নির্দেশ দেন, দেবাশিসের শেষকৃত্যের জন্য আগামী ২২ জুলাই বেলা ১১টায় পুলিশকে ‘মাসির ছেলের’ হাতেই মৃতদেহ তুলে দিতে হবে। মামলাকারী পরিচারিকা ওই শেষকৃত্যে অংশ নিতে পারবেন। আদালতের আরও নির্দেশ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইন মেনে দেবাশিসের একটি মৃত্যু শংসাপত্র পরিচারিকার হাতে তুলে দেবেন। পাশাপাশি, হাই কোর্ট স্পষ্ট করে জানায়, এই রায়ের প্রভাব মৃতের সম্পত্তির উত্তরাধিকারের উপর পড়বে না। অর্থাৎ, এই মামলায় সম্পত্তির উত্তরাধিকারী কে হবেন তা নিয়ে উচ্চ আদালত কোনও নির্দেশ দিচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE