Advertisement
২২ মে ২০২৪
Mid Day Meal Scheme

মিড-ডে মিলের খরচ কমাতে স্কুলে আনাজ ফলানোর নির্দেশিকা

এ বার রাজ্যের বিভিন্ন জেলার স্কুলগুলিতে ‘কিচেন গার্ডেন’ তৈরির নির্দেশিকা জারি করেছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু কলকাতা জেলার অনেক স্কুল চলে ভাড়া বাড়িতে।

A Photograph of mid day meal being distributed in West Bengal school.

প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য এখন মিড-ডে মিলের বরাদ্দ মাথাপিছু ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ০৭:১৭
Share: Save:

স্কুলের মিড-ডে মিল তৈরির আনাজ নিজে হাতেই বড় করবে পড়ুয়ারা। সেই সঙ্গে বাঁচবে মিড-ডে মিলের খরচও। এই লক্ষ্যেই এ বার রাজ্যের বিভিন্ন জেলার স্কুলগুলিতে ‘কিচেন গার্ডেন’ তৈরির নির্দেশিকা জারি করেছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু কলকাতা জেলার অনেক স্কুল চলে ভাড়া বাড়িতে। কোনও কোনও স্কুলে আবার জায়গার অভাব রয়েছে। সেই সব স্কুলে কী ভাবে আনাজের ফলন করা সম্ভব হবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকেরা।

শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, কলকাতা জেলার বেশ কিছু স্কুল চলে ভাড়া বাড়িতে। ফলে সেখানে ভবনের ছাদে আনাজ ফলানো সম্ভব নয়। এ ছাড়া বহু স্কুলে বাগান করার মতো জায়গার অভাব রয়েছে। তবে এইসব প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আনাজ ফলানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য এখন মিড-ডে মিলের বরাদ্দ মাথাপিছু ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। উচ্চ প্রাথমিক অর্থাৎঅষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মিড-ডে মিলের বরাদ্দ মাথাপিছু ৮ টাকা ১৫পয়সা। এছাড়া জানুয়ারি থেকে আগামী ১৬ সপ্তাহের জন্য পড়ুয়াপিছু ৩২০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অর্থাৎ, এক সপ্তাহে পড়ুয়াপিছু বরাদ্দ ২০ টাকা। এই অতিরিক্ত বরাদ্দেইসপ্তাহে পড়ুয়াদের পাতে দিতে হবে মাংস, ফল, ডিম। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হন্ডা বলেন, ‘‘এমনিতেই মাথাপিছু বরাদ্দ কম। তিন মাসের যে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে, তাতেও নিয়মিত মাংস, ফল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের দাবি, মাথাপিছু দৈনিক বরাদ্দ বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হোক। কারণ, স্কুল চত্বরে আনাজ ফলিয়ে ভাল পুষ্টিকর খাবার দেওয়া সব স্কুলের পক্ষে সম্ভব নয়। এতে যারা স্কুলের বাগানে আনাজের চাষ করতে পারবে, তাদের জন্য মেনু ভাল হবে। কিন্তু যারা তা পারবে না, তাদের মিড-ডে মিলে আনাজের বৈচিত্রও থাকবে না। এর থেকে বরং মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়ানো হোক।’’

বৌবাজারের সরু গলির মধ্যে রয়েছে জনসেবক বিদ্যালয়। ওই স্কুলের শিক্ষক রেখা যাদব বলেন, ‘‘আমাদের প্রাথমিক স্কুলটি বৌবাজারের গলির ভিতরে। সেখানে আনাজের চাষ করার মতো পরিস্থিতি একেবারেই নেই। কলকাতার এমন অনেক স্কুলেই এমন পরিস্থিতি নেই।’’ যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে কিচেন গার্ডেন নেই। তবে শিক্ষা দফতর থেকে যখন বলেছে, তখন টবের মধ্যে কিছু আনাজ ফলানো যায় কি না, সেটা দেখতে হবে।’’

কলকাতার বেশ কিছু স্কুল অবশ্য ইতিমধ্যেই সফল ভাবে আনাজের চাষ করছে। সেখানে বিভিন্ন মরশুমে নানা ধরনের আনাজ ফলাচ্ছে পড়ুয়ারা। যেমন, সন্তোষপুর ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাদের বাগানে শীতে ফলেছে বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন। গরমে সেই ছাদেই পটল, ঢ্যাঁড়সের ফলন হচ্ছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী সেন জানান, এ বার থেকে স্কুলের ছাদে আরও বেশি করে আনাজ ফলানোর চেষ্টা করা হবে। এতে আখেরে লাভবান হবে পড়ুয়ারাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE