সারিবদ্ধ: যানজটে পরপর দাঁড়িয়ে লরি। রবিবার, ডাকবাংলো মোড়ের কাছে যশোর রোডে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
আশপাশের এলাকা ফাঁকা। শুধু বারাসত শহরটাই প্রতিদিন যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে থাকছে। মাঝেমধ্যে অবস্থা এমন হচ্ছে যে, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ডাকবাংলো মোড় থেকে হেলাবটতলা পর্যন্ত মাত্র দেড় কিলোমিটার যেতেই লেগে যাচ্ছে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা। রাতে সারিবদ্ধ ট্রাকের ভিড়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে যানবাহন। অবস্থা এমন হয় যে, অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীকে হাসপাতাল নেওয়ার উপায়টুকুও থাকে না।
এমনিতেই উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বলে জেলাশাসকের দফতর, পুলিশ সুপারের অফিস, জেলা আদালত, বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা হাসপাতাল রয়েছে বারাসতে। যার জন্য প্রতিদিন প্রচুর মানুষ যাতায়াত করেন সেখানে। কলকাতা থেকেও আসা-যাওয়া করে অনেক গাড়ি। বারাসত দিয়েই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে উত্তরবঙ্গগামী বাস ও ট্রাক চলাচল করে। একই ভাবে যশোর রোড হয়ে বনগাঁ-বসিরহাট ছাড়াও বাংলাদেশগামী যানবাহন যাতায়াত করে।
অভিযোগ, এমন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যানজটমুক্ত করতে ট্রাক নিয়ন্ত্রণের কোনও উদ্যোগই দেখা যায় না পুলিশের তরফে। উল্টে ট্র্যাফিক পুলিশের বদলে যান নিয়ন্ত্রণ করেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। সন্ধ্যার পরে ডাকবাংলো মোড়ে গেলে দেখা যায়, কলকাতার দিকে যাওয়ার রাস্তা ফাঁকা। অথচ, হেলাবটতলা যাওয়ার রাস্তায় পরপর দাঁড়িয়ে ট্রাক। দু’টি ট্রাকের ফাঁকে দাঁড়িয়ে ছোট গাড়ি বা টোটো। অভিযোগ, ট্রাক থামিয়ে পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ তোলাবাজি করেন। যার জেরে আরও বাড়ে যানজট। একই অবস্থা যশোর রোড ও টাকি রোডেও।
এ বিস্তর অভিযোগ পাওয়ার পরে যানজট এড়াতে ট্রাকগুলিকে বারাসতের আগে জাগুলিয়া মোড় থেকে ঘুরিয়ে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ জারি হয়। রাত ১০টার আগে ওই দুই রাস্তায় ট্রাক ঢোকার ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা মেনে চলতে কড়াকড়িও করা হয়। ফলে কিছু দিনের জন্য যানজট কমে গেলেও এখন ফের আগের অবস্থা ফিরে এসেছে।
পুলিশের টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘জাগুলিয়া থেকে কল্যাণীর দিকে ট্রাক ঘুরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসন আলোচনা করে দেখছে।’’ অন্য দিকে, যানজটের কথা স্বীকার করে জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে হেতু জাগুলিয়া ও কল্যাণী নদিয়ার অংশ, তার জন্য ওই জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’
যানজটের পিছনে ‘নো এন্ট্রি’ না মেনে মালবাহী গাড়ি চলাচলের বিষয়টিও রয়েছে। কিছু জায়গায় দখল হয়েছে ফুটপাত। রাস্তার উপরেই চলছে গাড়ি সারাইয়ের কাজ। স্ট্যান্ড না থাকায় রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকে বাস, ট্যাক্সি, অটো, টোটো। এত বিধিনিষেধের পরেও ওই দুই জাতীয় সড়কে টোটো, অটো বা ভ্যানরিকশা বন্ধ হয়নি। বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অটো, টোটো জাতীয় সড়কে উঠে আসায় বাড়ছে যানজট। ওরা কথা শুনছে না। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy