প্রতীকী ছবি।
চার বছরের ঘুমন্ত ছেলেকে আদর করেই সকালে কাজে বেরিয়েছিলেন বাবা। কয়েক ঘণ্টা পরে ছেলের যখন ঘুম ভাঙল, তত ক্ষণে সব শেষ। বেপরোয়া লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার বাবার। বুধবার সকালে, ডানলপ এলাকায়।
পুলিশ জানায়, মৃত সুরজিৎ পুশিলাল (৩১) বেলঘরিয়া ট্র্যাফিক গার্ডের সিভিক ভলান্টিয়ার। আড়িয়াদহ বিশ্বনাথপল্লির বস্তিতে মা, স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে থাকতেন। ছেলে অরিজিৎ স্থানীয় স্কুলে পড়ে। এ দিনও সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ ডিউটিতে বেরোনোর সময়ে ঘুমন্ত শিশুপুত্রকে আদর করে সাইকেলে চেপেছিলেন সুরজিৎ। ডানলপ মোড়ে ডিউটিতে যোগ দেওয়ার কয়েক মিনিটের
মধ্যেই দুর্ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বনহুগলির দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা একটি লরি প্রথমে সামনের একটি বাসে ধাক্কা মারে। তার পরে রাস্তার ডিভাইডারের রেলিং ভেঙে ধাক্কা মারে সুরজিৎকে। আর এক সিভিক ভলান্টিয়ার বিশ্বজিৎ নস্কর বলেন, ‘‘খবর পেয়ে আমরা ছুটে আসি। প্রথমে ওঁকে বরাহনগর হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার পরে আর জি কর। সেখানেই সুরজিৎ মারা যান।’’ স্থানীয় লোকজনই লরিটিকে আটকান। পরে বরাহনগর থানার পুলিশ চালককে আটক করে।
সুরজিতের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তখনও স্বামীর মৃত্যুর খবর জানেন না স্ত্রী রূপা। তিনি শুধু জানেন দুর্ঘটনার কথা। তাই প্রতিবেশীদের থমথমে মুখ দেখে মাঝেমধ্যেই প্রশ্ন করছেন, ‘‘কেমন আছে ও?’’ মাকে জড়িয়ে ধরে বসে ছিল ছোট্ট অরিজিৎ। ফ্যালফ্যাল চোখে চার দিকে তাকিয়ে মুখ লুকোচ্ছিল মায়ের কোলে।
বিকেলে সুরজিতের দেহ আনা হয় বেলঘরিয়া ট্র্যাফিক গার্ডে। শেষ শ্রদ্ধা জানান ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশকর্মীরা। বিশ্বনাথপল্লিতে যখন শববাহী গাড়ি ঢুকল, চার বছরের অরিজিৎ তখনও জানে না, বাবা আর কোনও দিন তাকে আদর করবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy