Advertisement
১৮ মে ২০২৪

শর্ট স্ট্রিট-কাণ্ডে ‘অনুপ্রবেশের’ মামলা খারিজ

মামলা খারিজের নির্দেশিকায় সেকেন্ড ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক মৌমিতা ভট্টাচার্য উল্লেখ করেছেন, অন্যতম অভিযুক্ত পরাগ মজুমদারের স্ত্রী কল্পনা মজুমদার সুপ্রিম কোর্টে একটি আর্জি জানিয়েছিলেন। সেখানে এই মামলাটি মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আপস-মীমাংসা হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০১:৫১
Share: Save:

কাকভোরে বাড়ির দখল নিতে এক দল লোক ভিতরে ঢুকেছিল বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, তাদের আটকাতে গুলি চালিয়েছিলেন বাড়ির বাসিন্দা মমতা অগ্রবাল ও তাঁর দেহরক্ষী। মারা গিয়েছিলেন দখল নিতে আসা দলের দুই সদস্য। ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বরের শর্ট স্ট্রিটের সেই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল মহানগরকে। ওই ‘বেআইনি অনুপ্রবেশে’ জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধেও। কিন্তু মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিচারক মৌমিতা ভট্টাচার্য সেই মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন।

মামলা খারিজের নির্দেশিকায় সেকেন্ড ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক মৌমিতা ভট্টাচার্য উল্লেখ করেছেন, অন্যতম অভিযুক্ত পরাগ মজুমদারের স্ত্রী কল্পনা মজুমদার সুপ্রিম কোর্টে একটি আর্জি জানিয়েছিলেন। সেখানে এই মামলাটি মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আপস-মীমাংসা হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতে বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ এবং সঞ্জয়কিষাণ কল অনুপ্রবেশের ঘটনা-সহ সাতটি মামলা খারিজের নির্দেশ দিয়েছেন ১৭ জুলাই। তবে পুলিশকর্তাদের অনেকে বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের কাছে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হবে। বস্তুত, এই অনুপ্রবেশের মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন কলকাতা পুলিশের এসআই নুর আলিও। তাঁর আইনজীবী ফজলে আহমেদ বলেন, ‘‘মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ায় নুরও রেহাই পেয়েছেন।’’ নুর ও পরাগ ছাড়া পিনাকেশ দত্ত, রাজেশ দামানি, সমীর রিয়াজ, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ‘দখলদার দলের’ সদস্য-সহ ১৮ জনও খালাস হলেন। অভিযুক্ত তালিকায় থাকা নিরাপত্তারক্ষী সংস্থার মালিক অরূপ দেবনাথ পলাতক ছিলেন।

মঙ্গলবার আদালতে শুনানির সময়ে অভিযুক্তদের আইনজীবী সূর্যকান্ত রায় ও ফজলে আহমেদ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিলিপি জমা দেন। তার পরেই রায় ঘোষণা করেন বিচারক। তবে মমতার বিরুদ্ধে খুনের মামলা চলবে। পুলিশের একাংশের মতে, বাড়ির দখল ও তার জেরে পাল্টা গুলি, এই দ্বন্দ্বই ভিন্ন মাত্রা নিয়েছিল। কিন্তু আদালত অনুপ্রবেশের মামলাটি খারিজ করে দেওয়ায় নতুন মো়ড় পেল এই আইনি-যুদ্ধ।

পুলিশ সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার শর্ট স্ট্রিটে রতনলাল নাহাটা নামে এক ব্যবসায়ীর ১৭ কাঠা জমির উপরে একটি বাড়ি ছিল। সেটির দখল নিয়ে গোলমাল ছিলই। পুলিশের একাংশও তার খোঁজ রাখত। অভিযোগ, ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর পরাগ মজমুদারের পরিকল্পনায় ফের দখল নিতে আসে এক দল লোক। তাতে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী সংস্থার কর্মী ও বাউন্সারেরা ছিলেন। ভোরে সেই গোলমালে গুলি চালান ওই বা়ড়ির বাসিন্দা তথা মালিক রতনলাল নাহাটার ঘনিষ্ঠ মমতা অগ্রবাল ও তাঁর রক্ষী। এই ঘটনায় মামলার তদন্তভার নেয় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। ৮৭ দিনের মাথায় ওই অনুপ্রবেশ এবং হামলার ঘটনায় আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়েছিল পরাগ মজমুদার-সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে। অরূপকে অবশ্য ধরতেই পারেনি পুলিশ। খুনের ঘটনায় পরে চার্জশিট জমা পড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Case Court Trespass Short Street
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE