Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Hospital

প্রসব-ঘর উন্নয়নের নিরিখে পুরস্কৃত দুই হাসপাতাল

প্রসব-ঘরের অবস্থা ও পরিষেবার মানের যথাযথ উন্নতি করা হলে অন্তত ৪৬ শতাংশ প্রসূতি-মৃত্যু এবং অন্তত ৪০ শতাংশ শিশু-মৃত্যু বন্ধ করা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

picture of new born.

জাতীয় স্তরের স্বীকৃতি পেল রাজ্যের দুই সরকারি হাসপাতাল। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ ০৭:৫৮
Share: Save:

দেশে প্রসূতি ও শিশু-মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে হলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন প্রসব-ঘরের (লেবার রুম) পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটানো। সব রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতালে সেই মানোন্নয়ন কতটা হচ্ছে, ‘লক্ষ্য’ প্রকল্পের মাধ্যমে সেটাই পর্যবেক্ষণ করে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই প্রকল্পে এ বার জাতীয় স্তরের স্বীকৃতি পেল রাজ্যের দুই সরকারি হাসপাতাল— বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল ও বসিরহাট জেলা হাসপাতাল।

প্রসব-ঘরের অবস্থা ও পরিষেবার মানের যথাযথ উন্নতি করা হলে অন্তত ৪৬ শতাংশ প্রসূতি-মৃত্যু এবং অন্তত ৪০ শতাংশ শিশু-মৃত্যু বন্ধ করা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাই ২০১৮ সাল থেকে ‘লক্ষ্য’ (লেবার রুম কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট ইনিশিয়েটিভ) প্রকল্প চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রের ওই প্রকল্পে বেশ কয়েকটি বিষয় বিশদে পর্যবেক্ষণ করা হয়। দেখা হয় হাসপাতালের লেবার রুম (প্রসব-ঘর), মেটারনিটি অপারেশন থিয়েটার (প্রসবের সময়ে ব্যবহৃত অস্ত্রোপচার-কক্ষ) কতটা পরিচ্ছন্ন, সেখানে চিকিৎসা-বিধি কতটা মেনে চলা হচ্ছে, প্রতি সপ্তাহে প্রসবের সংখ্যা কত, তার মধ্যে প্রসূতি বা শিশু-মৃত্যুর সংখ্যা কত, প্রসূতিদের প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ কী ভাবে সামলানো হচ্ছে, প্রসূতির মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য কী ভাবে ভাল রাখা হচ্ছে-সহ সুস্থ সন্তান প্রসবের দিকগুলি। প্রথমে সেই সমস্ত মাপকাঠি খতিয়ে দেখে ফলাফল তৈরি করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেই রিপোর্ট পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। রিপোর্ট খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা এসে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তার পরেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। উৎকর্ষের বিচারে শংসাপত্র দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট সরকারি হাসপাতালকে।

স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, প্রসব-ঘরের মানোন্নয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প। রাজ্যে সেই প্রকল্পের ‘পাইলট’ হিসেবে জাতীয় স্তরে আগেই স্বীকৃতি পেয়েছিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এ বার আরও দুই হাসপাতালের মুকুটে সেই পালক যোগ হল। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, বসিরহাট ও বারুইপুর হাসপাতাল ৮৭ থেকে ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। এই স্বীকৃতি অন্যান্য হাসপাতালকেও উৎসাহিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। জানা যাচ্ছে, গত ডিসেম্বরে কেন্দ্রের এক প্রতিনিধিদল দুই হাসপাতালের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে। তাতে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল প্রসব-ঘরের ক্ষেত্রে ৯৪ শতাংশ এবং মেটারনিটি ওটি-র ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। অন্য দিকে, বসিরহাট জেলা হাসপাতাল প্রথমটিতে ৯০ শতাংশ ও দ্বিতীয়টিতে ৮৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছে।

বারুইপুর হাসপাতালের সুপার ধীরাজ রায় বলেন, “এই হাসপাতালে মাসে গড়ে ৮০০ প্রসূতিকে পরিষেবা দেওয়া হয়। এই সম্মান খুবই গর্বের।” বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপার রঞ্জন রায় বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। সমস্ত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীকে ধন্যবাদ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Delivery New Born
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE