Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
যশোর রোড

যানজটের ফাঁস এড়াতে আন্ডারপাস, উড়ালপুল

বিমানবন্দর থেকে মধ্যমগ্রাম পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে দ্রুত লয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ বার শুরু হচ্ছে বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ।

বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে রোজকার ছবিটা এখন এমনই।  ছবি: সুদীপ ঘোষ।

বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে রোজকার ছবিটা এখন এমনই। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫৬
Share: Save:

বিমানবন্দর থেকে মধ্যমগ্রাম পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে দ্রুত লয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ বার শুরু হচ্ছে বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে সমীক্ষা। স্থানীয় বাসিন্দারাই মানছেন, এই কাজ শেষ হলে কলকাতার সঙ্গে উত্তরবঙ্গ এবং বাংলাদেশের যাতায়াত সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে। পাশাপাশি, মুক্তি পাওয়া যাবে নিত্যদিনের যানজটের হাত থেকেও।

এই যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত করার জন্য মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় একটি আন্ডারপাস তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে ডাকবাংলো মোড়ের কাছে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার ১১ নম্বর রেলগেটে এবং ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে বারাসত-বসিরহাট শাখার কাজিপাড়ায় একটি করে উড়ালপুল তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তবে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ক্ষেত্রে হকার উচ্ছেদ নিয়ে তেমন সমস্যা না থাকলেও কিছু সমস্যা যে চাঁপাডালি মোড়ে রয়ে গিয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সমীক্ষকেরাই।

চাঁপাডালি মোড়ের সমস্যাটা ঠিক কোথায়? ওই মোড়ের যেখান থেকে ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক শুরু হচ্ছে, সেখান থেকে বারাসত জেলা হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ৫০০ মিটার। এলাকার দু’পাশে রয়েছে প্রচুর দোকান, বাড়ি, সরকারি আবাসন। এ ছাড়াও আছে শপিং মল, অটোস্ট্যান্ড, নার্সিংহোম। তবে রাস্তা চওড়া করার কাজে সহযোগিতার কথা বলেছেন প্রায় সবাই। এক দোকানদার জানান, রাস্তা চওড়া না হওয়ার কারণে এখন এই এলাকায় যানজট নিত্যদিনের ঘটনা। এতে তাঁদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। বারাসত হাসপাতাল থেকে কাজিপাড়া রেলগেট পর্যন্ত ১ কিলোমিটার অংশে রয়েছে আরও প্রচুর দোকান। দোকান ভাঙার ক্ষেত্রে রাজি হলেও বিকল্প ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন ওই দোকানিরাও।

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অভিমত, বারাসত-বসিরহাট শাখার কাজিপাড়ায় প্রস্তাবিত রেলসেতু তৈরি হয়ে গেলে চাঁপাডালি মোড়ের সমস্ত দোকান ভাঙতে হবে না, কিছু দোকান ভাঙলেই চলবে।

আর একটি বড় সমস্যা চাঁপাডালি মোড় লাগোয়া মাছ বাজারটি। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘মাছ বাজারটি রাস্তা থেকে ভিতরের দিকে পিছিয়ে দেওয়া হবে।’’ বাজারের এক আড়তদার গোবিন্দলাল দাস বলেন, ‘‘রাস্তা চওড়া হোক আমরাও চাই। তবে এর জন্য আমাদের ব্যবসার
কোনও ক্ষতি যাতে না হয়, সেই আবেদনও রেখেছি।’’

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার রাজীব চট্টরাজ বলেন, ‘‘৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে রেলসেতুটি ডাকবাংলো মোড় ছাড়িয়ে চলে যাবে। আর কাজিপাড়ার রেল সেতুটির দৈর্ঘ্য হবে ১২০০ মিটারের মতো। ওই সেতুর জন্য কিছু দোকানপাট ভাঙা পড়বে ঠিকই, তবে কিছু দোকান রক্ষাও পাবে।’’ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ আরও জানান, রাস্তা চওড়া হলে দোকান ছাড়া অন্য কিছু ভাঙা পড়ার তেমন সম্ভাবনা নেই।

কাজিপাড়া রেল লাইনের দু’পাশে অবশ্য চাঁপাডালি মোড়ের মতো ঘিঞ্জি দোকান তেমন নেই। যে কয়েকটি দোকান রয়েছে, সেই দোকানিরা জানিয়েছেন, দোকান ভাঙা হলে তাঁরা সরে যাবেন। তবে পুনর্বাসনের আর্জিও জানিয়েছেন সকলে। কতগুলি দোকান ভাঙতে হবে, কেমন হবে পুনর্বাসনের শর্ত— সেই বিষয়গুলি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।

বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রাস্তার দু’ধারের নর্দমা পর্যন্ত রাস্তা চওড়া করা হবে। নর্দমার উপরে ৮ ফুট চওড়া স্ল্যাব আছে। তার উপরেই রয়েছে সব দোকান। রাস্তা চওড়ার প্রয়োজনে কিছু দোকান ভাঙতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মালিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কারও যাতে অসুবিধা না হয়, তা-ও দেখা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Underpass flyover trifficjam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE