বড়িশা বিবেকানন্দ কলেজে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুগত মারজিতকে নিগ্রহের ঘটনায় ৯ জন ছাত্রীকে আগামী এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। উপাচার্যকে নিগ্রহের সময় ওই ছাত্রীরা ঘটনাস্থলে সক্রিয় ছিলেন বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে।
কলেজ সূত্রের খবর, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে বিবেকানন্দ কলেজের ৮৬ জন ছাত্রীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। টেস্টে অনুত্তীর্ণ ওই ছাত্রীরা উপাচার্যের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তবে উপাচার্য নিগ্রহের ঘটনায় প্রত্যক্ষ ভাবে ৯ জন ছাত্রী জড়িয়েছিলেন বলে ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই ৯ জন ছাত্রীকেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাসপেন্ড হওয়া ৯ জনের শিক্ষাবর্ষ যাতে নষ্ট না হয়, তার ব্যবস্থাও করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁরা অন্য কলেজে ভর্তি হতে চাইলে আপত্তি করবে না কলেজ।
বিক্ষোভে সামিল বাকি ৭৭ জন ছাত্রীর কী হবে? তাঁদের কিন্তু একেবারে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে না। ওই সব ছাত্রীকে উপাচার্যের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার কলেজে উপাচার্য নিগ্রহের ঘটনায় মূল ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল বহিরাগতদেরই। ২ বহিরাগত ছাত্রীকে চিহ্নিতও করা গিয়েছিল। অভিযুক্ত ওয়াহিদা খাতুন ও টিঙ্কু দাস কলকাতারই দেশবন্ধু কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক। এই দু’জনকে বৃহস্পতিবারই কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে সংগঠন থেকে দু’বছরের জন্য বহিষ্কার করে টিএমসিপি। মঙ্গলবার আরও বেশ কিছু বহিরাগত কলেজ চত্বরে এসেছিলেন বলে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পরিষ্কার। ওয়াহিদা, টিঙ্কু ছাড়া দেশবন্ধু কলেজের আরও ২ ছাত্রীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই ৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিবেকানন্দ কলেজের পরিচালন সমিতি।
বুধবার সুগত মারজিত জানিয়েছিলেন, কলেজের সামনে তাঁর গাড়ি প্রথম আটকে ছিলেন এক ছাত্র। সিসিটিভি ফুটেজেও তেমনটাই দেখা গিয়েছে। ওই ছেলেটির বিরুদ্ধে বেহালা থানায় এফআইআর করতে চলেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। গোটা বিষয়টিতে কলেজের পক্ষ থেকে উপাচার্যের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠিও দিতে চলেছেন বিবেকানন্দ কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কী বলছেন সুগত মারজিত? সুগতবাবু জানান, যারা সেদিন তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁদের মধ্যে বড়িশা বিবেকানন্দ কলেজের কোনও ছাত্রী ছিলেন না বলেই তিনি মনে করেন। উপাচার্যের কথায়, ‘‘কলেজে গন্ডগোল করার জন্যে যদি ক্ষমা চাইতেই হয় তা হলে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া উচিত। তবে আমার কাছে যদি ক্ষমা চাইতে আসে তবে আমি নিশ্চয়ই ক্ষমা করে দেব।’’
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সঙ্গে বিবেকানন্দ কলেজ ও দেশবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষা এবং শিক্ষিকাদের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই খতিয়ে দেখা হয় সিসিটিভির ফুটেজগুলি। দেশবন্ধু কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, ওই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে তাঁদের কলেজের তিন জন বর্তমান পড়ুয়া ও এক জন প্রাক্তনীও সামিল ছিলেন। দেশবন্ধু কলেজ ওই ছাত্রীদের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য জানালে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy