নিষেধ: ব্যারিকেড করে আটকে দেওয়া হয়েছে রাস্তা। শুক্রবার, রাজাবাজার মোড়ে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে শহরের বিভিন্ন ‘স্পর্শকাতর’ এলাকায় ঢোকা ও বেরোনোর রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতও। বাসিন্দাদের গাড়ি ছাড়া বাইরের কোনও যানবাহনও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ওই সমস্ত এলাকায়। এর জন্য বিভিন্ন রাস্তা বেছে নিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোনও কোনও এলাকায় আবার নজরদারি চালানোর জন্য মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশবাহিনীও।
লালবাজার সূত্রের খবর, স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত ওই সব এলাকার বিভিন্ন অলিগলি বৃহস্পতিবার থেকেই ব্যারিকেড করার কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবারের মধ্যে সেই কাজ শেষ হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ওই সব স্পর্শকাতর এলাকার বাসিন্দাদের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা এ দিন জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্যারিকেডের ভিতরে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। যাতে অন্য এলাকার লোকজন তাঁদের সংস্পর্শে না আসেন। শুক্রবারই কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা থানাগুলিকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় রাস্তায় বেরোনো সকলেই মাস্ক পরছেন কি না, সে দিকে নজর রাখতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদের মাইকিং এবং কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সচেতন করতেও নির্দেশ দিয়েছেন ওসিদের।
গত বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার কলকাতা-সহ চারটি জেলাকে ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করে। রাজ্য প্রশাসন আগেই করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বেশ কয়েকটি স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করেছিল। মূলত যে সব এলাকায় সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, সেই সব এলাকাই স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সব অঞ্চলে রাস্তাঘাট জীবাণুমুক্ত করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: কাজ হারানোর ভয়, তাই আধপেটা খেয়েই ডিউটি
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল থেকে বৌবাজার, নিউ মার্কেট, তালতলা ও মুচিপাড়া থানা এলাকার বিভিন্ন রাস্তার পাশাপাশি মধ্য কলকাতার প্রায় তিরিশটি ছোট রাস্তা ও গলিকে বেছে নিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে বেনিয়াপুকুর, বেলেঘাটা, বালিগঞ্জ, কড়েয়া, নারকেলডাঙা, রাজাবাজার, গিরিশ পার্ক, মানিকতলা, পার্ক সার্কাস, এন্টালি, তিলজলা, তপসিয়া-সহ শহরের বাকি স্পর্শকাতর এলাকাতেও ব্যারিকেড করা হয়েছে ঢোকা ও বেরোনোর রাস্তায়। এমনকি, ইএম বাইপাস থেকে শহরে ঢোকার বিভিন্ন ছোট রাস্তার মোড়ে গার্ডরেল দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে যান চলাচল।
পুলিশ জানায়, নারকেলডাঙা মেন রোডও সিল করে দেওয়া হয়েছে এ দিন। রাজাবাজার থেকে ফুলবাগান যাওয়ার ওই রাস্তা শহরের অন্যতম প্রধান রাজপথ হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া, আলিপুর, চেতলা, মুদিয়ালি ও ভবানীপুরের কিছু রাস্তাও বন্ধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মুখ দিয়ে এঁকে ছোঁয়াচ বাঁচানোর পাঠ স্কুলশিক্ষকের
লালবাজার সূত্রের খবর, স্পর্শকাতর এলাকার বাসিন্দারা যাতে অন্য এলাকার মানুষের সংস্পর্শে আসতে না পারেন, তার জন্যই এমন ব্যবস্থা। ওই এলাকাগুলিতে কঠোর ভাবে লকডাউন পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ অমান্য করা হচ্ছে কি না, তা দেখতে পুলিশের নজরদারি ছাড়াও ড্রোনের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
লালবাজার জানিয়েছে, গোটা শহরে লকডাউন কঠোর ভাবে পালন করার জন্য বিভিন্ন বাজারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ফাঁকা মাঠে। আবার রাস্তায় পুলিশকে গাড়ি তল্লাশির ক্ষেত্রেও আরও সতর্ক হতে বলা হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy