তবে কি কলকাতার ছেলেমেয়েরা মেধার বিচারে পিছিয়ে পড়ছে জেলার তুলনায়?
মাধ্যমিকের ফলাফলে জেলার জয়জয়কার বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই দেখা যাচ্ছে। কলকাতা দিন দিনই পিছিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাই বলে এমন ফল! শুক্রবার মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার পরে দেখা গিয়েছে, মেধাতালিকায় প্রথম দশে জায়গা পেয়েছেন ১১৪ জন। তার মধ্যে কলকাতার মাত্র এক জন। ঘটনাচক্রে, পাঠভবনের সেই ছাত্র শ্রুতর্ষি ত্রিপাঠী জেলার ছেলে। পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের আদি বাসিন্দা শ্রুতর্ষিরা এখন কলকাতায় থাকেন।কেন এমন ফল হল? তবে কি কলকাতার ছেলেমেয়েরা মেধার বিচারে পিছিয়ে পড়ছে জেলার তুলনায়? অনেকেই এমন দাবি করলেও তা মানতে নারাজ শ্রুতর্ষির স্কুলের টিচার ইনচার্জ শোভা গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘৬৯০ ও ৬৮৯-এর মধ্যে মেধার খুব পার্থক্য হয় কি! তাই জেলা ভাল ফল করেছে আর কলকাতার ছেলেমেয়েদের মেধা কম— এটা বলা যাবে না।’’ নিজের স্কুলের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের শ্রুতর্ষি প্রথম দশে থাকলেও বাকিদের ফল খারাপ বলা যাবে না। স্কুলের সার্বিক ফল ভালই।’’
দক্ষিণ কলকাতার বিনোদিনী গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দীপান্বিতা রায়চৌধুরীর মতে, এর পিছনে কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আজকাল উচ্চ মেধা সম্পন্ন ছাত্রাছাত্রীদের বাংলা মাধ্যমে পড়ার প্রবণতা কমছে। বিশেষ করে লেখাপড়ার সংস্কৃতি রয়েছে এমন পরিবারের ছেলেমেয়েদের সে ভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। তারই প্রভাব পড়ছে রেজাল্টে।’’
এই পরিস্থিতির জন্য আবার বড় শহর এলাকার ছেলেমেয়েদের অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তির দিকে আঙুল তুলেছেন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘আর্থিক ভাবে সম্পন্ন বাবা, মায়েরা দিল্লি বোর্ডের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। কলকাতা ও তার আশেপাশে এটা বেশি। জেলায় সেই সুযোগটাও কম। সে কারণেই কলকাতার ছেলেমেয়েরা জেলার থেকে মাধ্যমিকের ফলে পিছিয়ে। এর সঙ্গে ইন্টারনেট ইত্যাদি বিনোদনের সুযোগও কলকাতার ছেলেময়েদের কাছে অনেক বেশি সহজলভ্য। ফলে মূল পড়াশোনা থেকে তাদের মনোযোগ কমে যাচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত কলকাতার মাত্র এক জন পড়ুয়া প্রথম দশে থাকলেও মহানগরে পাশের হার যথেষ্টই ভাল। কলকাতার মোট ১২ হাজার ২৯২ জন ছাত্র এবং ১৪ হাজার ৮ জন ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। ছেলে ও মেয়েদের পাশের হার যথাক্রমে ৯৫ ও ৯৩.৯১ শতাংশ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy