Advertisement
০৩ জুন ২০২৪
Women's Day

Women's Day: অতিমারির পরে ঘরের কাজেও সম বণ্টন হোক

আজ, আবারও একটি নারী দিবস। বন্ধুরা মজা করে পোস্ট করছেন নারী ‘দি’ বস! এই অতিমারি-উত্তর পরিস্থিতিতে সত্যি সত্যিই কি মেয়েরা আজ বস?

n নারীশক্তি: এক হাতে ধরা সন্তানের হাত। অন্য হাতে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন স্বামীকে। আজ, মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগে শহরের পথে।

n নারীশক্তি: এক হাতে ধরা সন্তানের হাত। অন্য হাতে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন স্বামীকে। আজ, মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগে শহরের পথে। ছবি: সুমন

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২২ ০৫:০৪
Share: Save:

আজ, আবারও একটি নারী দিবস। বন্ধুরা মজা করে পোস্ট করছেন নারী ‘দি’ বস! এই অতিমারি-উত্তর পরিস্থিতিতে সত্যি সত্যিই কি মেয়েরা আজ বস? বিশেষ করে, যখন অতিমারি আমাদের বাধ্য করেছে সারা দিন ঘরবন্দি থাকতে। তখন আমরা মেয়েরা, যাঁদের সঙ্গে ঘর কথাটা সমার্থক, অর্থাৎ যাঁদের অন্যতম প্রতিশব্দ ‘ঘরণী’, তাঁরা কি সবাইকে ঘরে নিয়ে আদৌ স্বস্তিতে ছিলাম? মেয়েদের অবস্থা কি একটুও বদলেছে? বদলালে, সেটা ভালর দিকে না খারাপের দিকে?

১১১ বছর আগের কথা। নিউ ইয়র্ক শহরের কাপড় কলের মেয়েরা সব নিষেধ ভেঙে পথে মিছিল করেছিলেন তাঁদের তিনটি দাবি নিয়ে— সমান মজুরি, কাজের সময় কমিয়ে আনা আর ভোটের অধিকার। তিন নম্বর অধিকার আমরা খাতায়কলমে পেয়ে গিয়েছি। কিন্তু এখনও মেয়েরা বিরোধের স্পর্ধা দেখালে উড়ে আসে যৌন আক্রমণ, নয়তো অশ্লীল হুমকি।

এই অতিমারি কাজ কেড়েছে বহু মেয়ের। ব্যক্তিগত পরিষেবা দিতেন যে সব পেশাদার মেয়ে, যেমন গৃহ পরিচারিকা, পার্লার অথবা ফিজ়িয়োথেরাপি কর্মী— এঁদের অনেকেরই কাজ গিয়েছে। এই ধরনের কাজে যে হেতু মেয়েরাই মূলত যুক্ত ছিলেন, তাই তাঁদের জীবিকা অর্জনের উপায়ে প্রবল টান পড়েছে। এরই মধ্যে ঘরে বসে কাজ, সারা দিন পরিবারের অন্য সব সদস্যও বাড়িতে, যাঁরা বাইরের কাজ ঘরে বসে করেছেন, সেই মেয়েদের বাইরের কাজের সীমানা গিয়েছে মুছে। বাড়িতে পুরুষের বাধ্যতামূলক উপস্থিতি, কর্তৃত্ব জাহির করতে গিয়ে নিজেদের জমিদারি মনোভাবের প্রকাশ, পরিবারের নারী ও শিশুদের উপরে অন্তহীন গার্হস্থ্য হিংসা যেন সে সবেরই প্রতিফলন।

আজ মেয়েরা বাধ্য হচ্ছেন নতুন নতুন কাজ খুঁজে নিতে। কিন্তু মজুরি আর চাকরির শর্ত, কোনওটিই তো তাঁদের হাতে নেই। চারপাশে শুনছি, দেখছি, নারী দিবস সার্থক করতে আপনার নারীটির জন্য কি উপহার আনছেন? যে মেয়েকে ঠিক সময়ে কাজের জায়গায় পৌঁছতেই আজ তিন বার অটো বদলাতে হয়, তাঁর কিন্তু মাইনে বাড়েনি। অথচ, যাতায়াত ভাড়া বেড়েছে তিন গুণ। সেই একলা মায়ের হয়তো এই সব বিজ্ঞাপনে হাসার মতো অবকাশও থাকে না। মেয়েদের শ্রমিক ভূমিকা ভুলিয়ে দিতে রাষ্ট্র-বাজার-রাজনীতির ব্যবসায়ী— সকলেই তাঁদের উপভোক্তা, নয়তো সঙ্কীর্ণ জাতধর্মের গণ্ডির মধ্যে আটকে রাখতে চায়। আজ বরং নতুন করে শপথ নেওয়া হোক, বাইরের কাজের সমান অধিকার তো খাতায়কলমে আমরা মেয়েরা পেয়েছিই, এ বার এই অতিমারি-উত্তর পৃথিবীতে ঘরের কাজেও সমান বণ্টন হোক। যাতে বাইরেটা শুধুমাত্র খাতায়কলমে নয়, বাস্তবিকই আমাদের জন্য এ বার সমান হয়ে ওঠে।

আর হ্যাঁ, মধ্যবিত্ত মেয়েরা কিন্তু চারপাশের সব মেয়ের প্রতিনিধি নন। মেয়েদের নানা মাত্রার প্রান্তিকতাকে নিয়ে দিবসের শপথগুলো নতুন করে উচ্চারিত হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Women's Day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE