Advertisement
১৮ মে ২০২৪

কলকাতার কড়চা

....

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৫ ০১:০০
Share: Save:

তিরানব্বইয়ে রাজার ‘আরম্ভ’

ছবির জগত্‌ই ওঁর কাছে শেষ কথা। স্টুডিয়োয় নতুন কাজ শুরু করবার আগে তিনি প্রার্থনায় বসেন। ওঁর সামনে একের পর এক খুলে যায় সৃষ্টির বিচিত্র জগত্‌। এই সাধনার পথেই তিনি পেরিয়ে এলেন দীর্ঘ জীবনের সফল সময়গুলি। সৈয়দ হায়দার রাজার জন্ম ১৯২২-এ মধ্যপ্রদেশের বাবরিয়াতে। ছবি আঁকার জন্য ছেলেবেলা থেকেই উসখুস, উন্মুক্ত প্রকৃতি ধরা দিত ওঁর ছবিতে। তার পর ১৯৫০-এ সেই চেনা ছবিই বদলে যেতে থাকে জ্যামিতিক নকশায়। এই বছরেই তিনি ফরাসি সরকারের বৃত্তি পেয়ে চলে যান প্যারিসে। সেখানে রেখা বিলীন হয়ে রঙ প্রবল হয়ে ওঠে তাঁর ছবিতে। ১৯৭০-এর পর থেকে ওঁর ছবি পুরোপুরি জ্যামিতিক হয়ে ওঠে। যার কেন্দ্রে থাকে ‘বিন্দু’। আধ্যাত্মিক চেতনায় সম্পৃক্ত হয়ে ওঠে ছবি। ১৯৫৬-য় তিনি প্যারিসে বিশেষ সম্মান লাভ করেন। রাজা ভালবাসেন হিন্দি কবিতা পড়তে।

ওঁর ছবিতে সেই কারণে ঘুরে ফিরে আসে কবির, ফয়েজ, মুক্তিবোধ, কেদারনাথ সিংহ বা অশোক বাজপাই-এর কবিতার অনুষঙ্গ। জীবনের সিংহভাগ কাটিয়েছেন বিদেশে, কিন্তু বজায় রেখেছেন ষোলো আনা ভারতীয়ত্ব। ভারতীয় দর্শনের গভীর ভাবনা থেকেই উত্‌সারিত রাজার ছবি। ওঁর ছবির নামকরণেই প্রকাশ পায় ভারতীয় সংস্কৃতির নানা স্তর। ভারত সরকারের তিনটি পদ্ম সম্মান তিনি পেয়েছেন। কে এইচ আরা এবং এফ এন সুজার সঙ্গে মিলে রাজা প্রতিষ্ঠা করেন প্রোগ্রেসিভ আর্টিস্টস গ্রুপ। এখন দিল্লিবাসী এই শিল্পী ৯৩ পেরিয়েও কাজ করে চলেছেন। এই উপলক্ষে হিন্দুস্তান পার্কের আকার প্রকার গ্যালারিতে আয়োজিত হয়েছে ‘আরম্ভ’ শীর্ষক ওঁর সাম্প্রতিক কাজের একটি প্রদর্শনী, চলবে ২৮ মার্চ পর্যন্ত। গত ৩ মার্চ এখানেই বিশেষ আমন্ত্রিতদের সান্নিধ্যে পালিত হল শিল্পীর জন্মদিন। আগামী পরিকল্পনা কী, এই প্রশ্নে তাঁর সহাস্য উত্তর ‘এই তো সবে আরম্ভ, রাস্তা অনেক বাকি!’ সঙ্গে বাঁ দিকে প্রদর্শনীতে শিল্পীর ছবি: গোপী দে সরকার। ডান দিকের ছবি প্রদর্শনী থেকে।

শতবর্ষে

প্রথম বাংলা রঙিন ছবি ‘পথে হল দেরি’ তৈরি হয়েছিল তাঁর উপন্যাস থেকেই। তার বাইরেও ‘নতুন পাতা’, ‘আলো আমার আলো’ কিংবা ‘অতল জলের আহ্বান’। বাংলা সিনেমা সে সময় প্রায়শ গল্পের জন্য হাত পেতেছে তাঁর কাছে। প্রেমের গল্পে এমনই ছিল প্রতিভা বসুর জনপ্রিয়তা। গল্প, উপন্যাসের সংলাপও ছিল জীবনের কাছাকাছি। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত আড্ডায় বন্ধু বুদ্ধদেব বসুকে ঠাট্টা করে বলতেন, ‘হার ডায়ালগস আর বেটার দেন ইউ।’ ১৩ মার্চ সেই লেখকের শততম জন্মদিন, বিকেল ৫টায় গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের তূরীয়ানন্দ হলে তিলোত্তমা মজুমদারের হাতে প্রথম বারের প্রতিভা বসুর নামাঙ্কিত সম্মান তুলে দেবেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বিয়ের আগে পিতৃদত্ত রাণু সোম নামে গানও গাইতেন প্রতিভা। পরে তা ঢাকা পড়ে যায়। তাঁর কণ্ঠে দিলীপ রায়, নজরুলের রেকর্ডও বেরিয়েছিল। শতবর্ষে সেই গানগুলি কি পুনরুদ্ধার করা যায় না?

প্রাকৃতিক

কত রূপকল্প কত ছবি তৈরি হয়ে আছে প্রকৃতিতে। সেই সব ছবি সন্ধান করে লেন্সবন্দি করেছেন আর্ট ফটোগ্রাফিতে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত দেবাশিস ঘোষ রায়। গাছের ছাল, পাথর ও শেওলার প্রাকৃতিক কম্পোজিশনকে মাইক্রো লেন্সে ধরেছেন দেবাশিস। ড্রিমশুট এবং আইসিসিআর-এর যৌথ উদ্যোগে নন্দলাল বসু গ্যালারিতে দেবাশিসের ৭৮টি ছবির প্রদর্শনী ‘নেচার স্পিক্স’ চলবে ১৪ মার্চ পর্যম্ত। সঙ্গে তারই একটি ছবি।

জন্মদিনে

১৩৮৫ বঙ্গাব্দের বুদ্ধপূর্ণিমায় প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর বই লালন ও তাঁর গান। বইটি অন্নদাশঙ্কর রায় উত্‌সর্গ করেছিলেন বন্ধু মুহম্মদ মনসুরউদ্দিনকে। একদা পূর্ববঙ্গে চাকরিসূত্রে বিচরণ করা অন্নদাশঙ্করের জীবনজোড়া অনুধ্যানে ছিলেন ফকির লালন সাঁই। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি তার প্রথম সভাপতি অন্নদাশঙ্কর রায়ের জন্মদিন উদ্‌যাপন করে ১৫ মার্চ। এ বছর সে আয়োজন ছুঁতে চাইছে তাঁর লালনচেতনার তন্ত্রী। সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় উপস্থাপন করবেন অন্নদাশঙ্কর রায় স্মারক বক্তৃতা, ‘লালনের গান: সম্প্রীতি’। লক্ষ্মণদাস বাউল শোনাবেন লালনের গান। অন্নদাশঙ্কর রায় স্মারক পুরস্কার অর্পণ করা হবে অনুবাদ সাহিত্যে অগ্রণী মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নিম্নবর্গের জীবনবীক্ষণে একনিষ্ঠ ইতিবৃত্তকার গৌতম ভদ্রকে। ১৫ মার্চ আকাদেমি সভাঘরে, সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায়।

রবীন্দ্রগানে সুমন

রবীন্দ্রনাথ, পিয়ানো এবং তিনি। দেখা হবে সন্ধের মোহনায়। কলামন্দিরে, ১৩ মার্চ। পিয়ানোর কূল থেকে কখনও বা তানপুরার ঘাটে ভিড়বে তরী। কবীর সুমনের কথায়, “এখন আমার সত্যিকারের বেঁচে থাকা শুধু দু’জনকে নিয়ে। বাংলায় খেয়াল ও রবীন্দ্রনাথ।” যান্ত্রিক রাবীন্দ্রিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে একদিন তিনি গেয়েছেন, ‘প্রাণে গান নাই মিছে তাই রবি ঠাকুর মূর্তি গড়া!’ সেই রবীন্দ্রনাথকেই সতত আবিষ্কার করে চলেছেন তাঁর নিজস্ব মননে। আগে একবারই ঘণ্টাখানেক নাগাড়ে রবীন্দ্রগান গেয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “সুরের গভীরের সুরটাই তো আসল! সুরের আগুন চরাচরে ছড়িয়ে লোকটা আমার সর্বনাশ করে দিল!”

ব্যাচ ৮৮

সাতাশ বছর পর আবার দেখা! ১৯৮৮-তে ওঁরা পাশ করে বেরিয়েছিলেন গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে। দু’বছর আগে চেষ্টা শুরু হয় একসঙ্গে হওয়ার। খুঁজে পাওয়া গেছে চল্লিশজনকে। ১০ মার্চ বিড়লা অ্যাকাডেমিতে শুরু হচ্ছে একটি প্রদর্শনী ‘ব্যাচ ৮৮’ শীর্ষকে। উদ্বোধনে সে দিনের শিক্ষক গণেশ হালুই, থাকবেন রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং আরও অনেকে। বিজ্ঞাপন, ফটোগ্রাফি, টেক্সটাইল ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে ছড়িয়ে রয়েছেন সে দিনের ছাত্ররা। সংবর্ধনা জানানো হবে শিক্ষকদের এবং স্মৃতির পাতায় শিক্ষক ও বন্ধুদের সম্মানে প্রকাশ পাবে একটি পুস্তিকা। প্রদর্শনীটি চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত, ৩-৮ টা প্রতি দিন।

অন্তর্যাত্রা

আপাত মনে হতে পারে তীর্থযাত্রা বা ধর্মাচরণের ছবি, আদতে শৈবাল দাসের সাদাকালো স্থিরচিত্র আমাদের অস্তিত্ব স্মৃতি বিশ্বাস আর মৃত্যুর ভিতরে এক অন্তর্যাত্রায় টেনে নিয়ে যায়। সদ্য শুরু হয়েছে তাঁর ছবির প্রদর্শনী ‘বিফোর দ্য বার্থ অব টাইম’, সঙ্গে তারই একটি: ‘আ কৃষ্ণ সাধক’। দি হ্যারিংটন স্ট্রিট আর্টস সেন্টারে প্রদর্শনীটি চলবে ১৬ মার্চ পর্যন্ত, রবি বাদে প্রতি দিন ১২-৭টা। তাঁর ফোটোগ্রাফির শিল্পভাষ্য নিয়ে নবীন কিশোরের লেখা একটি বইও প্রকাশ পেয়েছে প্রদর্শনীতে। উদ্যোক্তা: তসবির।

সেতুবন্ধন

ভারতীয় সংস্কৃতির বৈভব চয়ন বা ভারত থেকে তথ্য আহরণের প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ভারত এখনও জার্মানিতে কিছুটা বহির্বিশ্ব হয়েই রয়েছে। এ জন্যে শুধু ভারতীয় সংস্কৃতির দুরূহতা দায়ী নয়, তার মূল্যায়ন বা তার সঙ্গে সম্পৃক্তির অক্ষমতাও নয়। এ জন্যে বিশেষ ভাবে দায়ী অতিমাত্রায় ইউরোপ-কেন্দ্রিকতা।... বলছিলেন মার্টিন কেম্পশেন, সম্প্রতি বাংলা আকাদেমিতে, ‘প্রণবেশ সেন স্মারক বক্তৃতা’য় (বিষয়: ‘বর্তমান জার্মান মিডিয়ায় ভারত’)। দীর্ঘকাল ধরে তিনি শান্তিনিকেতনেরই আবাসিক, তাঁকে ‘ভারত ও জার্মানির মধ্যে বন্ধুত্ব নির্মাণের একজন সার্থক বন্ধু’ বলে অভিহিত করলেন ভবেশ দাশ ও সংযুক্তা সিংহ, প্রণবেশ সেন স্মারক সমিতি’র পক্ষে। সে সন্ধ্যায় এ বক্তৃতাটির সঙ্গে গত বারের আশিস নন্দীর বক্তৃতাটিও (‘স্মার্ত সংস্কৃতি’) প্রকাশ করলেন শঙ্খ ঘোষ। পুস্তিকা দু’টির প্রকাশক পরম্পরা।

মেয়েদের জন্য

পারিবারিক হিংসায় বিপর্যস্ত বা মানসিক ভাবে অসুস্থ মহিলারা কোথায় সাহায্য পাবেন, তাঁদের জরুরি পরামর্শ কেন্দ্র কোথায়, সে সব তথ্য নিয়ে ‘সুতানুটির সখ্য’ প্রকাশ করেছে মহিলাগণের সহায়ক তথ্যপঞ্জিকা। সঠিক তথ্য দিয়ে মেয়েদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই এই প্রয়াস। সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত নানা তথ্য নিয়ে একটি প্রশিক্ষণ পুস্তিকা মহিলাগণের সহায়ক নির্দেশিকা। অন্য দিকে শুধু সুন্দরবন চর্চা পত্রিকায় উঠে এসেছে সুন্দরবনের মেয়েদের জীবনসংগ্রাম। জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়া বা মীন-বাগদা ধরা থেকে চাষের কাজ— কিছুতেই পিছিয়ে নেই তাঁরা। ‘নেশা’র কবলে পুরুষদের অধিকাংশই দুর্বল। তুলনায় সক্ষম ও উদ্যোগী মহিলারা মুখে অনাবিল হাসি নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

ত্রিভাষিক

দেড়খানা মহাদেশ, একাধিক দেশের মাতৃভাষা এস্পান্যিওল বা স্প্যানিশ। আর সেই ভাষাশ্রয়ী সাহিত্য ও সংস্কৃতির যাঁরা চর্চা করেন, সেই ‘হিস্প্যানিস্ট’রা ছড়িয়ে আছেন সারা বিশ্বে, কলকাতাতেও। তাঁরাই প্রকাশ করতে চলেছেন কলকাতার প্রথম ত্রিভাষিক পত্রিকা ‘লা সেন্দা’। ২০১৪ ছিল স্পেনীয় সাহিত্যের দুই দিকপাল, ওক্‌তাভিও পাস ও হুলিও কোরতাসার-এর জন্মশতবর্ষ। পত্রিকায় তাঁদের ও তাঁদের নিয়ে লেখা, সঙ্গে মান্টো ও প্রেমচন্দের লেখার ত্রিভাষিক পরিবেশন। ১৪ মার্চ বিকেল পাঁচটায় অবনীন্দ্র সভাঘরে ‘লা সেন্দা’র প্রকাশ-অনুষ্ঠান, প্রধান অতিথি প্রখ্যাত ভারতীয় হিস্প্যানিস্ট মালবিকা ভট্টাচার্য।

শিকড়ে ফেরা

আশি ছুঁয়েও এখনও তিনি অনবদ্য। শিল্পী শক্তি বর্মনের জন্ম ১৯৩৫-এ, অবিভক্ত বাংলাদেশে। কলকাতায় শিল্পের পাঠ নিয়ে চলে যান প্যারিসে। ১৯৫৪-য় প্রথম প্রদর্শনী কিন্তু এই শহরেই। তারপর জুরিখ, মিলান, লন্ডন, রোম কত প্রদর্শনী। প্রায় পাঁচ দশক প্যারিস প্রবাসী হলেও এই বঙ্গের সঙ্গে ওঁর নাড়ির টান প্রবল। ওঁর ছবিতে সব সময়েই একটা ‘ফ্যান্টাসি’ থাকে। ‘আমার কাজের মধ্যে দিয়ে আমি পৌঁছে যাই সেই স্বদেশের শেকড়ে, আমার ছেলেবেলায়’। আশি বছরের জন্মদিন উপলক্ষে কলকাতাতেই আয়োজিত হয়েছে একটি প্রদর্শনী। থাকছে অনেক দুর্লভ ছবি।

আসছেন শিল্পীও। ১২ মার্চ বিকেলে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে দিল্লির আর্ট অ্যালাইভ গ্যালারির সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, সঙ্গে শক্তি বর্মন— আ প্রাইভেট ইউনিভার্স বইটি উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ। প্রদর্শনী ২১ মার্চ পর্যন্ত, ১২-৮ টা।

নিজস্ব ভাষ্য

অভিনয়ের থেকেও পারফরম্যান্স বলাই বেশি ভাল।’ জানালেন অবন্তী চক্রবর্তী। শেক্সপিয়র অবলম্বনে ‘লেডি ম্যাকবেথ’-এর একক ভূমিকায় তিনি, এক ঘণ্টার প্রযোজনা। ‘নির্দেশনার সঙ্গে নিজেই লেডি ম্যাকবেথ-এর চরিত্রটা করছি, অনেক দিন পর অভিনয় করতে ইচ্ছে হল বলে নয়, দর্শকের সঙ্গে সরাসরি সংলাপ তৈরি করতে চাইছি। ক্ষমতা-র প্রসঙ্গটা তুলে আনার জন্যেই তো এ-নাটক করা, সে ক্ষেত্রে লেডি ম্যাকবেথ-এর ভিতরের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, হিংস্রতা, পুরুষের মতো প্রতাপ— সে সম্পর্কে আমার ভাষ্যটা নিজেই আসলে পৌঁছতে চাইছি দর্শকের কাছে। লিঙ্গ-রাজনীতির দিক থেকেও এই কথাগুলি বলা এখন খুব জরুরি।’ অবন্তী এক দশকের ওপর নির্দেশকের কাজ করে চলেছেন বঙ্গরঙ্গমঞ্চে। তাঁর নির্দেশনায় মেডেয়া, রক্তগাঁথা, রঞ্জাবতী সেন, ইচ্ছের অলিগলি, চৈতালি রাতের স্বপ্ন, তিন কন্যা, নাগমণ্ডল, ইলিয়াড-এর মতো প্রযোজনা ইতিমধ্যেই সাড়া তুলেছে। আমেরিকার ইয়েল স্কুল অব ড্রামা থেকে ফেলোশিপ নিয়ে নির্দেশনার কাজ শিখেছেন, পরে নির্দেশক-প্রশিক্ষক হয়ে গিয়েছেন ইতালির অ্যাকাদেমিয়া দেল আর্তে-এ। এ দেশেও শিক্ষকতা করেছেন দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা, লখনউয়ের ভারতেন্দু নাট্য অ্যাকাডেমিতে। নির্দেশনার জন্য সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি থেকে ২০১০-এ সম্মানিত হয়েছেন ‘উস্তাদ বিসমিল্লা খান যুব পুরস্কার’-এ। নান্দীপট আয়োজিত ‘নারীর মঞ্চ’ নাট্যোত্‌সবে ১৪ মার্চ গিরিশ মঞ্চে সন্ধে সাড়ে ৬টায় প্রথম মঞ্চস্থ হবে ‘লেডি ম্যাকবেথ’। পরে পারাদিপ, ঢাকা, মহিশুরে প্রযোজনাটি মঞ্চস্থ হবে।

ভাস্কর

ওঁর কাজে একটা মোচড় দেওয়া ব্যাপার আছে, অহেতুক সুন্দর করার প্রবণতা নেই, বলছিলেন শিল্পী রবীন মণ্ডল, সে কারণেই ওঁর কাজ ভালো লাগে। ভাস্কর বিপিন গোস্বামীর জন্ম উত্তর কলকাতায় ১৯৩৪-এর ১৪ ডিসেম্বর। আঁকিবুঁকি, অবয়বের প্রতি অন্তরের টান ছোট থেকে। কাদামাটির প্রাথমিক পাঠ সুনীলকুমার পালের কাছে। ওঁরই আগ্রহে ১৯৫১-য় সরকারি আর্ট কলেজে। সতীর্থ হলেন শর্বরী রায়চৌধুরী, উমা সিদ্ধান্ত, মাধব ভট্টাচার্যদের। শিক্ষক ভাস্কর প্রদোষ দাশগুপ্তের সেই ছাত্রধারা আজও গর্ব করার মতো। আর এক সহপাঠী গণেশ হালুই ওঁকে ডাকতেন ‘নিমু’ নামে। কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হন ১৯৫৬-তে। দুই বছর পর তিনি ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজের ভাস্কর্যের বিভাগীয় প্রধান হন, পরে অধ্যক্ষ। ছিলেন বিশ্বভারতী কলাভবনের রিডার, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো। পেয়েছিলেন যুগোস্লাভিয়া সরকারের বৃত্তি (১৯৫৯-৬১)। প্রদর্শনী হয়েছে দেশবিদেশে। ওঁর মনোযোগ আবর্তিত মানবশরীরকে কেন্দ্র করে। আগ্রহের বিষয় প্রকৃতিও। পেয়েছেন বহু পুরস্কার। ন্যাশনাল গ্যালারি, ললিতকলা অ্যাকাডেমি সহ নানা সংগ্রহে রয়েছে ওঁর কাজ। কর্মজীবনের ষাট বছর পূর্তিতে সম্প্রতি লেক ভিউ রোডের আলতামিরা আর্ট গ্যালারিতে আয়োজিত হয়েছে ওঁর ভাস্কর্য ও চিত্রকলা নিয়ে একটি প্রদর্শনী। স্পেকট্রাম আর্টিস্টস সার্কেলের সহযোগিতায় প্রদর্শনীটি চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত, ৩-৮ টা প্রতি দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkatar karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE