মোবাইল চুরি আটকাতে গত বছরই লাগানো হয়েছিল অতিরিক্ত ক্যামেরা। বাড়ানো হয় পুলিশি টহলদারিও। তা সত্ত্বেও কলকাতা বিমানবন্দরে মোবাইল চুরি যে বন্ধ হয়নি, তা প্রমাণ হয়েছে বার বার। এ বার দিল্লি থেকে আসা একটি পণ্য বিমানে নব্বইটি মোবাইল চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশের অনুমান, বিমানবন্দরে পরপর ঘটে যাওয়া মোবাইল চুরির ঘটনায় তাঁরা যুক্ত।
বিমানবন্দর সূত্রে খবর, গত বছর ১১ ডিসেম্বর দিল্লি থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করে ইন্ডিগোর ৬ই২০৯ বিমানটি। তাতে কলকাতার এক সংস্থায় মোবাইল ভর্তি ৩৪টি বাক্স পাঠানো হয়েছিল। ওই সংস্থার কর্মীরা বিমানবন্দরে ফোন নিতে এসে দেখেন একটি বাক্স কম। পুলিশ জেনেছে, বাক্সে থাকা ৯০টি মোবাইলের বাজার দর প্রায় ৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। পরে ১০ জানুয়ারি সংস্থার তরফে থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের হয়।
পুলিশ জানায়, নিখোঁজ মোবাইলের আইএমইআই নম্বর ধরে শুরু হয় তল্লাশি। পরে বিমানবন্দরের ২ নম্বর গেটের কাছে একটি মোবাইলের সিগন্যাল পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে, খিদিরপুরের ফ্যান্সি মার্কেট থেকে ওই মোবাইলটি কিনে এনে তা ব্যবহার করছেন সুজিত নন্দী নামে জেট এয়ারওয়েজের এক ভেন্ডর। ফ্যান্সি মার্কেট পৌঁছে পুলিশ জানতে পারে, মোবাইলটি সেখানে বিক্রি করেন ইন্ডিগো বিমান সংস্থার পণ্য বিভাগের দুই অস্থায়ী কর্মী দীপক রায় ওরফে জয় ও সঞ্জয় রায় ওরফে নানু।
পুলিশ জানিয়েছে, ইন্ডিগোর বিমান থেকে পণ্য নামিয়ে তা গাড়িতে করে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেন জয় ও নানু। তাঁদের কাছ থেকেই কয়েক দফায় নানা বাজার ঘুরে ফোনটি সুজিতবাবুর হাতে পৌঁছয়। এর পরেই গত বুধবার ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর আদালতে অভিযুক্তদের আট দিন পুলিশ হেফাজত হয়।
সূত্রের খবর, বিমানবন্দরে মোবাইল চুরি বেড়ে যাওয়ায় বেশ কিছু ক্যামেরা লাগিয়ে সেখানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। টহলদারিও নিয়মিত হয়। তা সত্ত্বেও এমন কিছু জায়গা রয়েছে, যা ক্যামেরা ও পুলিশি নজরদারির আওতার বাইরে থাকে। পুলিশের অনুমান, ওই জায়গা দিয়ে পণ্য নিয়ে যাওয়ার সময়েই অভিযুক্তেরা মোবাইল সরান। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে রাজু নামে সোদপুরের এক মোবাইল ব্যবসায়ীকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, রাজু স্বীকার করেছেন, বেশির ভাগ ফোন তিনি নিজে বিক্রি করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি মোবাইলের খোঁজ চলছে। পণ্য বিভাগের অন্য চুরির ঘটনায় অভিযুক্তদের যোগাযোগ রয়েছে কি না, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy