Advertisement
১৯ মে ২০২৪

চাপান-উতোরে আটকে হস্তান্তর

আবাসন তৈরি। মোট ৩২টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ২৮টি বিলির ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে। বাকি চারটি পরিবার ফ্ল্যাট না নেওয়ায় তৈরি হয়েছে সমস্যা। তাই আটকে রয়েছে বেহালা ব্যানার্জিপাড়ায় নির্মাণ-পেশাভিত্তিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আবাসন হস্তান্তরের কাজ।

আবাসন তৈরি। আটকে হস্তান্তর। ছবি: অরুণ লোধ।

আবাসন তৈরি। আটকে হস্তান্তর। ছবি: অরুণ লোধ।

কৌশিক ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৪ ০৪:৪২
Share: Save:

আবাসন তৈরি। মোট ৩২টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ২৮টি বিলির ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে। বাকি চারটি পরিবার ফ্ল্যাট না নেওয়ায় তৈরি হয়েছে সমস্যা। তাই আটকে রয়েছে বেহালা ব্যানার্জিপাড়ায় নির্মাণ-পেশাভিত্তিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আবাসন হস্তান্তরের কাজ।

পুরসভা সূত্রে খবর, চারটি পরিবার ফ্ল্যাট নিতে অস্বীকার করেছে। তার পরিবর্তে কারা ওই চারটি ফ্ল্যাট পাবেন তা ঠিক হয়নি। যদিও নির্মাণ-পেশাভিত্তিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দাবি, নতুন চারটি নাম ঠিক করার এক্তিয়ার রয়েছে শুধু তাঁদেরই। কেন না জমিটি তাঁদের। এই পরস্পর বিরোধী দাবি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।

পুরসভার তরফে জানান হয়েছে, নির্মাণ-পেশাভিত্তিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী বেহালার ব্যানার্জিপাড়ায় প্রায় আট কাঠা জমি ২০০৫-এ পুরসভাকে শর্তসাপেক্ষে হস্তান্তর করে। সিদ্ধান্ত হয়, আবাসন তৈরি করে দারিদ্রসীমার নীচে বসাবসকারী নির্মাণগোষ্ঠীর সদস্যদেরই হস্তান্তর করা হবে। ২০০৯-এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। দরপত্রের মাধ্যমে একটি বেসরকারি সংস্থাকে পাঁচতলা আবাসন তৈরির বরাত দেওয়া হয়। ২৭০ বর্গফুটের ৩২টি ফ্ল্যাট তৈরি করতে বলা হয়। মোট খরচ ধরা হয় প্রায় ১ কোটি টাকা।

পুরসভা জানিয়েছে, ২০১০-এ আবাসন তৈরির কাজ শুরু হয়। ২০১৩-তে কাজ শেষ হয়। ঠিক ছিল কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পের মোট খরচের ৫০ শতাংশ দেবে। ৩০ শতাংশ দেবে রাজ্য সরকার। বাকি ২০ শতাংশ অর্থ কলকাতা পুরসভা এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা দেবেন। হিসেব করে ঠিক হয় সদস্যদের ফ্ল্যাট পেতে ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। ২০১০-এ বেহালা ব্যানার্জিপাড়ায় একটি সমীক্ষা করে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের বেছে নেওয়া হয়। তার মধ্যে চূড়ান্ত তালিকায় ঠাঁই হয় ৩২ জনের।

পুর-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ফ্ল্যাট হস্তান্তরের সময় দেখা যায়, ৩২টি পরিবারের মধ্যে চারটি পরিবার ফ্ল্যাট নিতে চাইছেন না। স্বনির্ভর গোষ্ঠী তার বদলে নতুন চারটি পরিবারের নাম দেয়। কিন্তু তা মানতে অস্বীকার করছে পুরসভা। মেয়র পারিষদ (বস্তি) স্বপন সমাদ্দার জানান, কে ফ্ল্যাট পাবে, তা ঠিক করার এক্তিয়ার পুরসভার। নিয়মানুযায়ী যাঁরা ফ্ল্যাট পাবেন তাঁদের দারিদ্রসীমার নীচে থাকতে হবে। তাঁদের নাম পুরসভার খাতায় লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। কিন্তু পুরসভার যুক্তি মানতে নারাজ নির্মাণ-পেশাভিত্তিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংগঠক শঙ্কর দাস। তাঁর দাবি, “উপভোক্তাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য হওয়াই একমাত্র শর্ত ছিল। পুরনো চার জনের নাম পুরসভায় লিপিবদ্ধ ছিল ঠিকই। যে নতুন চার জনের নাম দেওয়া হচ্ছে তাঁরাও স্বনির্ভর গোষ্ঠীরই সদস্য। শর্তানুযায়ী, আমরা যে নাম দেব সেই নামের ভিত্তেতেই ফ্ল্যাট বিলি করতে হবে।”

মেয়র পারিষদের জবাব, “বাম আমলের এই প্রকল্পটির ভাবনাই অবাস্তব ছিল। বর্তমান বোর্ডকে এখন তার মাসুল গুনতে হচ্ছে। এই সমস্যার যাতে দ্রুত সমাধান করা যায়, সে ব্যাপারে চেষ্টা চলেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

koushik ghosh behala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE