Advertisement
২৯ মে ২০২৪

নয়া সাজে সেজে উঠছে শহরের তিনটি পার্ক

ভোল বদলাচ্ছে কলকাতার তিনটি পার্কের। ভবানীপুরের নর্দার্ন পার্ক এবং অ্যালবার্ট রোডের ভিক্টোরিয়া স্কোয়ার সাজানোর কাজে হাত দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে টালা জিমখানা পার্কেও। সাতের দশকের প্রথমার্ধে নর্দার্ন পার্কের নাম বদল করে নতুন নাম হয় সুভাষ উদ্যান। বসানো হয় সুভাষচন্দ্রের মূর্তি। পুরসভার ৯০ নম্বর ওয়ার্ডে জাস্টিস দ্বারকানাথ রোড এবং বলরাম ঘোষ রোডের মধ্যে ওই পার্কটি দীর্ঘকাল অবহেলায় পড়ে ছিল।

সংস্কার চলছে নর্দার্ন পার্কে। —নিজস্ব চিত্র।

সংস্কার চলছে নর্দার্ন পার্কে। —নিজস্ব চিত্র।

অশোক সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪৫
Share: Save:

ভোল বদলাচ্ছে কলকাতার তিনটি পার্কের। ভবানীপুরের নর্দার্ন পার্ক এবং অ্যালবার্ট রোডের ভিক্টোরিয়া স্কোয়ার সাজানোর কাজে হাত দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে টালা জিমখানা পার্কেও।

সাতের দশকের প্রথমার্ধে নর্দার্ন পার্কের নাম বদল করে নতুন নাম হয় সুভাষ উদ্যান। বসানো হয় সুভাষচন্দ্রের মূর্তি। পুরসভার ৯০ নম্বর ওয়ার্ডে জাস্টিস দ্বারকানাথ রোড এবং বলরাম ঘোষ রোডের মধ্যে ওই পার্কটি দীর্ঘকাল অবহেলায় পড়ে ছিল। মেয়র পারিষদ (পার্ক ও উদ্যান) দেবাশিস কুমার এবং স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পুরসভার চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হয়েছে বড় মাপের সংস্কার। পুরসভার ডিরেক্টর জেনারেল (উদ্যান) দেবাশিস চক্রবর্তী এ কথা জানিয়ে বলেন, “এই সৌন্দর্যায়নের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৪৮ লক্ষ টাকা। টাকা দিচ্ছে রাজ্য অর্থ কমিশন।”

সচ্চিদানন্দবাবু বলেন, “পার্কের সীমানার পাঁচিল, গ্রিল নতুন করে তৈরি হচ্ছে। এর পরে হবে বসার জায়গা, পার্কের ভিতরে টালি বিছানো হাঁটাপথ। কিছু চারা বসানো হয়েছে। বর্ষায় আরও কিছু চারা বসানো হবে।” ডিজি (উদ্যান) জানিয়েছেন, কাজ শেষ হতে আরও তিন মাস লাগবে।

৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে অ্যালবার্ট রোড এবং অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর সরণির সংযোগস্থলে ভিক্টোরিয়া স্কোয়ারে বছর ছয়েক আগে কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পে (কেইআইপি) সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়েছিল। কিন্তু দেখভালের অভাবে জলাশয়টি শ্যাওলা ও কচুরিপানায় ঢেকে যায়। চারপাশে গজিয়ে ওঠে ঝুপড়ি। দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “প্রথমে জলাশয় সাফাই ও ঝুপড়ি উচ্ছেদ হয়েছে। ঝুপড়িগুলি ছিল মূলত পুরসভার সাফাইকর্মীদের। তাঁদের পার্কের এক দিকে ছোট জায়গায় সরানো হয়েছে।” আশপাশের কিছু রেস্তোরাঁর উচ্ছিষ্ট এই জলাশয়ে ফেলা হত। তা-ও কড়া ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” ঘটনাস্থলে রাখা হয়েছে মালি। জলাশয়ে ছাড়া হয়েছে দু’টি হাঁস। পুরসভা সূত্রের খবর, এই সৌন্দর্যায়নের জন্য দুই পর্যায়ে প্রায় ৪৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।

ভিক্টোরিয়া স্কোয়ার সৌর্ন্দযায়নের পাশাপাশি ওই পার্ক এবং জলাশয়ের ব্যাপারে স্থানীয় আবাসিকদেরও আগ্রহী করার চেষ্টা হচ্ছে। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা সাত নম্বর বরো কমিটির চেয়ারপার্সন সুস্মিতা ভট্টাচার্য বলেন, “সম্প্রতি ওখানে আমরা পুষ্প প্রদর্শনী করেছি। স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার কথাও ভাবছি।” তিনি জানান, প্রায় ৪০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ওই জলাশয়টি এতটাই গভীর যে কখনওই জলের অভাব হয় না। ভবিষ্যতে ওতে ঝর্ণা বসানো এবং নৌ-বিহারের ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছোটদের মন কাড়তে পার্কের দেওয়ালে মজার ছবি আঁকানোর চেষ্টাও চলছে বলে জানান সুস্মিতাদেবী।

কাজ চলছে টালা জিমখানা ক্রিকেট মাঠেও। পুরসভার ডিজি বলেন, “২১ বিঘার ওই পার্কের কিছুটা দখল হয়ে গিয়েছিল। দখলদার ১৬টি পরিবারকে মাঠের পাশে এক ধারে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরো মাঠ এবং তাঁদের অংশ পৃথকভাবে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে।” স্থানীয় কাউন্সিলর তথা ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, “দেড় মিটার গাঁথনি তুলে তার উপরে আড়াই মিটার গ্রিল দিয়ে ঘেরা হবে পুরো মাঠটি। প্রাথমিক টাকা মিলেছে রাজ্য অর্থ কমিশনের কাছ থেকে।”

উল্লেখ্য, এর আগে ৩৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ভূকৈলাশ ময়দান সংস্কারের কাজ করেছে কলকাতা পুরসভা। পার্কটির তত্ত্বাবধানে একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। পুরসভার ডিজি (প্রোগ্রাম মনিটরিং ইউনিট) সুব্রত শীল বলেন, “নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে ওই মাঠের পাশে ভূকৈলাশ রাজবাড়ি সংস্কারের কাজও চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE