পলিতে এমন ভাবেই আটকে গিয়েছে জেটি। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
গঙ্গার পাড়ে স্তূপ হয়ে জমেছে পলি। সেই পলিমাটিতে অনেকখানি ডুবে পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছে একটি লঞ্চ। জেটিও হেলে পড়েছে এক দিকে। এমনই হাল কলকাতার আউট্রাম ঘাটে রিভার ট্রাফিক পুলিশের জেটির। ফলে যথারীতি অসুবিধায় পড়েছেন রিভার ট্রাফিক পুলিশকর্মীরা। এখন পলি সরিয়ে জেটির সংস্কার কে করবে তা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে দুই দফতরে।
কলকাতা বন্দরের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “জেটির পরিকাঠামো কলকাতা বন্দরের। কলকাতা রিভার ট্রাফিক এই জেটি ব্যবহার করে। সুতরাং জেটি সারানোর দায়িত্ব তাঁদেরই। কলকাতা পুলিশ বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে জেটি সারানোর ব্যাপারে অনুমতি চেয়েছিল। আমরা সেই অনুমতি দিয়েছি।”
অন্য দিকে, কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (বন্দর) ভি সলোমন নিশাকুমারের কথায়, “কলকাতা বন্দরকে রিভার ট্রাফিকের জেটি সারানোর ব্যাপারে চিঠি দিয়েছি। এই জেটি বন্দরের। তাদেরই সেটি সরানোর কথা। আলোচনা চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”
নিয়ামানুযায়ী, গঙ্গায় জলের উপরে জেটি ভেসে থাকার কথা। দীর্ঘদিন ধরে গঙ্গার পলি সংস্কার না হওয়ায় জেটির নীচে জমি হয়ে গিয়েছে। যখন নদীতে ভাটা আসে, তখন গঙ্গার ধার থেকে জল সরে যাওয়ায় পলিমাটিতে জেটি আটকে যায়। ফলে, জেটির সামনের অংশটি সামনের দিকে হেলে যায়। এমনকী, জেটির সঙ্গে বাঁধা লঞ্চও জোয়ারের সময়ে মাটিতে বসে যায়। রিভার ট্রাফিক ছাড়াও কাস্টম্স বিভাগ এই জেটি ব্যবহার করে।
কলকাতা জল পুলিশের আওতায় থাকা প্রায় ২২ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৩৫ কিলোমিটার) এলাকা মূলত এই ঘাট থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয়। জল পুলিশের লঞ্চ প্রতিদিনই কলকাতা রিভার ট্রাফিক পুলিশের অধীনস্থ দক্ষিণের বজবজ থেকে উত্তরের কোন্নগর পর্যন্ত এলাকা পরিদর্শন করে। কলকাতা রিভার ট্রাফিক পুলিশের দু’টি জেটির মধ্যে একটি অকেজো হয়ে গিয়েছে। একটি দিয়েই কাজ চালাতে হয়। বিভিন্ন সংস্থা গঙ্গার পাড় থেকে মাটি কেটে নিয়ে যায়। কিন্তু সরকারি ভাবে এই সমস্যার সমাধানে কোনও ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। কলকাতা বন্দরের এক আধিকারিকের দাবি, রিভার ট্রাফিক পুলিশকে তাদের জেটির পাশেই রাজ্য পর্যটন দফতর ব্যবহৃত একটি ঘাট ব্যবহার করার জন্যও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ট্রাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানান, রিভার ট্রাফিকের নিজস্ব জেটি ছাড়াও সংলগ্ন ঘাটের দু’টি জেটি একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পলি তুললেও এই দু’টি জেটি থাকায় জলস্রোত রিভার ট্রাফিকের ঘাট পর্যন্ত আসতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। কাজেই অন্য জেটি দু’টি সরানো দরকার। অথবা, বিকল্প হিসেবে বর্তমানের জেটির দৈর্ঘ্য বাড়ালেও এই সমস্যা মিটতে পারে বলে রিভার ট্রাফিকের এক আধিকারিকের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy