Advertisement
২২ মে ২০২৪

বিতর্কে আটকে জিঞ্জিরা বাজারের স্থায়ী ভবন

খরচ হয়ে গিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। প্রায় অর্ধেক কাজও শেষ হয়েছে। তার পরে কাজ বন্ধ। বাম আমলে শুরু হওয়া হেমন্ত বসু মার্কেট বা জিঞ্জিরা বাজারের স্থায়ী ভবন আদৌ সম্পূর্ণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বাজারের কয়েকশো ব্যবসায়ীর ভবিষ্যৎ। আট বছর আগে রাজ্য বিপণন পর্ষদ, হেমন্ত বসু মার্কেটের স্থায়ী ভবন নির্মাণ শুরু করে। তখন ক্ষমতায় বাম সরকার।

জিঞ্জিরা বাজারের অসমাপ্ত ভবন। —নিজস্ব চিত্র।

জিঞ্জিরা বাজারের অসমাপ্ত ভবন। —নিজস্ব চিত্র।

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

খরচ হয়ে গিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। প্রায় অর্ধেক কাজও শেষ হয়েছে। তার পরে কাজ বন্ধ। বাম আমলে শুরু হওয়া হেমন্ত বসু মার্কেট বা জিঞ্জিরা বাজারের স্থায়ী ভবন আদৌ সম্পূর্ণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বাজারের কয়েকশো ব্যবসায়ীর ভবিষ্যৎ।

আট বছর আগে রাজ্য বিপণন পর্ষদ, হেমন্ত বসু মার্কেটের স্থায়ী ভবন নির্মাণ শুরু করে। তখন ক্ষমতায় বাম সরকার। কিন্তু পালা বদলের পরে নতুন সরকার জানায়, বাজার তৈরির আগে রাজ্যের বিপণন পর্ষদের বিভাগীয় অনুমতি না নিয়েই কাজে হাত দেওয়ায় প্রকল্পের কোনও বৈধতা নেই।

হেমন্ত বসু বাজার সমিতি সূত্রের খবর, তারাতলা রোডের উপর অবস্থিত জিঞ্জিরা বাজারটি প্রায় ৪০ বছরের পুরনো। ১৯৭৪ সাল থেকে এখানে বড়সড় করে বাজার বসা শুরু হলেও, এখানে আগেই ছোট বাজার ছিল। কিন্তু বাজারটি রাস্তার উপরে। তাই বাম আমলেই ব্যবসায়ীরা রাজ্য সরকারে কাছে ওই এলাকার মধ্যে অন্য একটি জায়গায় স্থায়ী বাজারের জন্য আবেদন করেন। সেইমতো তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার অস্থায়ী এই বাজারের পাশেই তারাতলা রোডের উপর বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি খালি জমি চিহ্নিত করে এবং কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। সরকারি এই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৫ বছরের জন্য ওই জমিটি লিজ দেন।

রাজ্য বিপণন পর্ষদ সূত্রের খবর, এককালীন টাকা এবং মাসিক ভাড়ার শর্তে খালি জমিটি ২০০৫-এ লিজ নেওয়া হয়। ভবন তৈরির জন্য দরপত্রের মাধ্যমে একটি ঠিকাদারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরের বছর কাজও শুরু হয়ে যায়।

বাম আমলেই এই প্রকল্পকে ঘিরে নানা বিতর্ক তৈরি হয়। দু’টি ব্লক তৈরির পরে ব্যবসায়ীরা দেখেন, বাজারটি শপিং মলের মতো তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষিজ পণ্যে বিক্রি করতে সমস্যা হবে। আপত্তি তুলে রাজ্য বিপণন পর্ষদের সঙ্গে বার বার আলোচনায় বসেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সমস্যার সমাধান না করে, পুরো ভবন তৈরি হওয়ার আগেই ২০১১-এর ১ মার্চ তা উদ্বোধন করে দেওয়া হয়।

কিন্তু উদ্বোধন হলেও এখনও দোকান বণ্টন হয়নি। এর মধ্যেই আবার বিতর্ক শুরু হয়। সেই সময় দায়িত্বে থাকা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বাজার সমিতির পক্ষ থেকে বাজার উদ্বোধন করার আগে জিঞ্জিরা বাজারের ব্যবসায়ী সমিতিকে একটি লিখিত চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে ৪১২ জনের বদলে ৩৮৯ জন ব্যবসায়ীকে স্থায়ী বাজারে জায়গা দেওয়ার কথা বলা হয়। সেই বিতর্ক মেটার আগেই বাজারটি কলকাতা বাজার সমিতির অধীনে স্থানান্তরিত হয়। হেমন্ত বসু বাজার সমিতির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১১ সালে বলা হয়েছিল এ-ব্লকের চার তলা এবং বি-ব্লকে বেসমেন্ট-সহ তিন তলার যে নকশা তাতে ৪১২ জন জায়গা পাবেন না। তাই অবিলম্বে যেন নকশা পাল্টে ব্লকের কিছু অংশ পুনর্নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এখন

দোকান বণ্টন দূর অস্ৎ বাজার সম্পূর্ণ হবে কি না, সেই ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। রাজ্য বিপণন সূত্রের খবর, বাজারটি নিয়ে গত কয়েক মাসের প্রতিটি বোর্ড মিটিংয়েই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনও সমাধান সূত্র না মেলায় বাজারের কাজ বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় নেই। রাজ্যের কৃষি-বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “বিষয়টি আমার অজানা। খোঁজ নিয়ে দেখব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

diksha bhuniya jinjira market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE