Advertisement
০২ জুন ২০২৪

বেহাল রাস্তা, নিত্য ভোগান্তি

কোথাও রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। অনেক সময় সেই গর্তে জল জমে থাকে। একটু অসতর্ক হলেই ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। কোথাও পিচ উঠে মাটি বেরিয়ে পড়ছে। ছবিগুলি তারাতলা রোড-সহ মহেশতলা পুরসভার একাধিক রাস্তার।

তারাতলা রোডের হাল।  ছবি: অরুণ লোধ।

তারাতলা রোডের হাল। ছবি: অরুণ লোধ।

জয়তী রাহা
শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৪ ০১:৩৩
Share: Save:

কোথাও রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। অনেক সময় সেই গর্তে জল জমে থাকে। একটু অসতর্ক হলেই ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। কোথাও পিচ উঠে মাটি বেরিয়ে পড়ছে। ছবিগুলি তারাতলা রোড-সহ মহেশতলা পুরসভার একাধিক রাস্তার।

মহেশতলা পুরসভার বরকমতলা, দৌলতপুর, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের চটা, চালকিপাড়া, খালপাড়ের শাস্ত্রীপাড়া রোড, নুঙ্গি স্টেশন রোড, সুকান্ত পল্লি, কদিরহাটি রোড, ঘোষপাড়া রোড, রবীন্দ্রনগর, মোল্লাপাড়া রোড, শ্যামপুর রোড সব জায়গায়ই রাস্তা কমবেশি খারাপ। কোথাও রাস্তার পিচ উঠে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কোনওক্রমে সেই গর্ত বাঁচিয়ে চলতে হয়। গর্তে পড়ে সাইকেল, অটো, রিকশার উল্টে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লির বাসিন্দা সমর মান্না জানান, কয়েক মাস আগে ভূগর্ভ বিদ্যুতের কেব্ল সারাই করতে সিইএসসি মাটি খুঁড়েছিল। তখন থেকেই রাস্তা এবড়ো-খেবড়ো অবস্থায় পড়ে আছে। ভাঙা কালভার্টে পা ঢুকে কয়েক জন পড়েও গিয়েছেন। স্থানীয় পুর প্রতিনিধিকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। বাসিন্দাদের দাবি, বেহাল অবস্থা দৌলতপুর মেন রোডেরও। কদিরহাটি রোডের মাদার ডায়েরি গেট এলাকায় উঁচু-নিচু ইটের রাস্তা দিয়ে কোনও ক্রমে বাইক, রিকশা নিত্য যাতায়াত করে। বাদামতলা-বটতলা এলাকার রাস্তা কাঁচা, নর্দমা নেই। বর্ষায় জল জমে বেহাল দশা হয়। প্রতি বার ভোটের আগে শুধুই প্রতিশ্রুতি মেলে বলে জানান বাসিন্দারা। চটা থেকে মোষগোট পর্যন্ত সাত-আট কিলোমিটার রাস্তায় পিচ উঠে ইট বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এই রাস্তায় অটো, রিকশা এবং লরি চলে। মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে এখানে। বছরখানেক আগে এখানে দুর্ঘটনায় একটি বাচ্চা মারা গিয়েছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। অভিযোগ, এর পরেও টনক নড়েনি প্রশাসনের। আক্রার বাসিন্দা তরুণ বিশ্বাস বলেন, “আমাদের এখানে আক্রা স্টেশন রোডের অবস্থা খুব খারাপ। যাতায়াতে খুবই সমস্যা হয়।”

কলকাতা ও মহেশতলার মধ্যের প্রধান যোগসূত্র তারাতলা রোড। তারাতলা থানা, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, সেরিব্রাল পলসি ইনস্টিটিউট-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার অফিস এই রাস্তার উপরে রয়েছে। এই এলাকার কিছু অংশের দায়িত্ব কলকাতা পুরসভা। বাকি অংশ মহেশতলা পুরসভার। এই রাস্তা গর্তে ভরা। নিত্যযাত্রী স্বরূপ মৈত্রের অভিযোগ, “ব্রেস ব্রিজের দিকে যেতে জে স্টোন বাসস্টপের পাশে অনেক দিন ধরে জল জমার সমস্যা রয়েছে। প্রচণ্ড গরমেও রাস্তা জলে ভিজে থাকে। ওই জল-কাদার মধ্যে দাঁড়িয়ে বাস ধরতে হয়। এমনিতেই রাস্তার হাল ভাল নয়। তার মধ্যে জল জমে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।” তারাতলা থানার ঠিক সামনে রাস্তার অবস্থাও খুব খারাপ। এখানে কয়েক বার গর্তে অটো পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান নিত্যযাত্রীরা।

কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্ত ঘোষ বলছেন, “এলাকাটি দু’টি পুরসভার দায়িত্বে থাকায় সংস্কারের কাজে কিছু সমস্যা হয়। তা ছাড়া তারাতলা রোডের দু’ধারে কিছু দূর পর্যন্ত কলকাতা পুরসভার অধীন হলেও রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বন্দর-কর্তৃপক্ষের।” পোর্ট ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “টেন্ডারের কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই ওল্ড তারাতলা এবং নিউ তারাতলা রোডের মেরামতির কাজ শুরু হবে। পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তার জন্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা খরচ হবে।”

মহেশতলা পুরসভার পুর প্রধান দুলাল দাস বলেন, “তারাতলা রোডের দায়িত্ব আমাদের নয়। মহেশতলা পুরসভায় ১২০টি পাকা রাস্তা আছে। এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি রাস্তার অবস্থা হয়ত খারাপ। গত ফেব্রুয়ারিতেই টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। কয়েকটির কাজ বাকি রয়েছে। সেগুলিও হয়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jayati raha dilapidated road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE