শুরু হয়েছে সংস্কারের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
ছবিটা এ বার বদলাবে। দীর্ঘ দিন অবহেলায় পড়ে থাকার পরে বেঙ্গল জিমখানা গ্রাউন্ডে শুরু হয়েছে সংস্কারের কাজ। ফলে এই মাঠটিকে ঘিরে উৎসাহ ফিরছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
উত্তর কলকাতার টালা এলাকায় জনসংখ্যার তুলনায় সবুজ বেশি। সবুজায়ন বজায় রাখতে পুরসভা নানা ভাবে উদ্যোগীও হয়। যদিও বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওয়ার্ডের ফাঁকা জায়গার কিছু অংশ এখনও অপচয় হচ্ছে। বছরের পর বছর চরম অবহেলায় পড়ে থাকে বিস্তীর্ণ প্রান্তর। বেঙ্গল জিমখানা গ্রাউন্ড এমনই একটি মাঠ।
স্থানীয়দের কাছে এই মাঠের পরিচয় টালা ক্রিকেট মাঠ। তবে নামেই ক্রিকেট মাঠ। প্রায় ১৬ একর মাঠের চার দিকে কোথাও নিচু পাঁচিল আর রেলিং-এ ঘেরা। কোথাও বা পাঁচিল ভাঙা। কোনও কোনও স্থানীয় ক্লাব মাঠে নিজের এলাকা চিহ্নিত করে নামমাত্র পরিচর্যা করে থাকে। সবটাই অপরিকল্পিত ভাবে। বাকি অংশে রয়েছে অযত্নের ছাপ। মাঠের যত্রতত্র উঁচু ঢিবি, এবড়ো খেবড়ো জমি। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা হাঁড়ি-কড়াই, থালা-বাটি, গৃহস্থালির টুকিটাকি। মাঠের এ দিক ও দিক জড়ো করে রাখা শুকনো পাতা, ডালপালা, বস্তা বোঝাই আবর্জনা। বড় রাস্তার দিক ঘেঁষে মাঠের ভিতর সার সার ঝুপড়ি জবর দখল করে নিয়েছে মাঠের অনেকটা অংশ। বস্তা, বেড়া আর প্লাস্টিকে ঘেরা ঝুপড়িতে প্রায় তিরিশ ঘর জবরদখলকারী বেশ কিছু বছর ধরে এখানেই রয়েছে। সব মিলে মোট সদস্য সংখ্যা তিনশোর কাছাকাছি। মাঝে মধ্যে পুরসভার তরফে নামকাওয়াস্তে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও ফলটা হয় যে কে সেই।
টালা ঝিল পার্কে গত পনেরো বছর ধরে প্রাতর্ভ্রমণে আসছেন অরিজিৎ বসুরায়। তিনি বলেন, “আগে এই মাঠে আন্তঃস্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, চারুচন্দ্র শীল ফুটবল টুর্নামেন্ট-সহ বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হত। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সে সব অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বর্ষায় মাঠে জল
দাঁড়িয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যায় ক্রিকেট শিবিরও।”
পুরসভা সূত্রের খবর, ‘বেঙ্গল জিমখানা গ্রাউন্ডে’র এক দিক মন্মথ দত্ত রোড, অন্য দিক তারাশঙ্কর সরণি। এই দুই দিক ধরেই প্রথম পর্যায়ের ফেন্সিং-এর কাজ শুরু হবে। এক মিটার উঁচু পাঁচিল এবং দেড় মিটার গ্রিল দিয়ে প্রায় আট ফুট উচ্চতার ফেন্সিং করা হবে। এর জন্য খরচ হবে ৪৭ লক্ষ টাকা। টাকা দিচ্ছে স্টেট ফিনান্স কমিশন।
স্থানীয় তৃণমূল পুর প্রতিনিধি ও এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, “দখলদারী উচ্ছেদ করেই কাজ শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী ধাপে এঁদের পুনর্বাসনও দেওয়া হবে। এক সঙ্গে পুরো ফেন্সিং করা সম্ভব না হওয়ায় ফের উচ্ছেদকারীরা দখল করতে পারে। সে ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করতে হবে।” অযত্নে পড়ে থাকা ওয়ার্ডের ফাঁকা জায়গা প্রসঙ্গে তরুণবাবু জানান, ট্র্যাফিক ট্রেনিং স্কুলের পাশের আবর্জনার স্তূপ করে রাখা জায়গাটা ঘিরে বাগান করা হয়েছে। এই ওয়ার্ডে অনেক ফাঁকা জায়গা রয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে এলাকাটি সুন্দর রাখার। খেলাৎবাবু লেনের এক বাসিন্দা বলেন, “ইচ্ছে করলে এত বড় মাঠটা পুরসভা অনেক সুন্দর করে রাখতে পারত। কিন্তু ন্যূনতম চেষ্টা কোনও বোর্ড করেনি। এত দিনে টনক নড়ল।
তবে মাঠের পুরো কাজ শেষ না হলে সুফল মিলবে না। ফলে এই টাকা খরচ করাটাই বৃথা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy