কিন্তু সব মামলাই কি আদালতের বাইরে মিটিয়ে নেওয়া যায়?
মূলত দেওয়ানি মামলা— যেমন জমিজমা, সম্পত্তি ভাগাভাগি, পাওনা টাকা উদ্ধার, ক্ষতিপূরণ, বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে সন্তানের অধিকার বা ব্যবসা সংক্রান্ত আর্থিক মোকদ্দমা মেটানো চলে। প্রতারণা, মানহানি, ভয় দেখানো বা চেক বাউন্সের মতো মামলাতেও আদালতের বাইরে রফা করে নেওয়া যেতে পারে।
কী ভাবে হবে রফা?
প্রথমেই দু’পক্ষে একটা সমঝোতা হতে হবে। ধরা যাক, চেক বাউন্সের মামলা হয়েছে। যিনি সেই চেকটি দিয়েছিলেন তিনি বললেন, নগদে টাকা মিটিয়ে দেবেন। এর পর মামলা চালিয়ে যাওয়ার মানে থাকে না। রফার পথ খোলে।
রফার পরে কী?
দেওয়ানি মামলায় দু’পক্ষ আদালতে মামলা তোলার আবেদন করবে। আদালত তা বিচার করে মামলা খারিজ করে দিতে পারে।
ফৌজদারি ক্ষেত্রে আবেদন করতে হবে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী। তবে যে কোনও ক্ষেত্রেই হোক, আদালত যদি আঁচ পায় যে রফার পিছনে গড়বড় আছে— ভয় দেখিয়ে ‘রফা’ করানো হয়েছে বা সমঝোতার শর্ত নিয়ে কোনও এক পক্ষে সংশয় আছে, তবে মামলা তোলার আর্জি নাকচও করে দিতে পারে।
কোন মামলা তোলা যায় না?
গুরুতর অপরাধের মামলা ইচ্ছে মতো তোলা যায় না। যেমন খুন, খুনের চেষ্টা, বড়সড় ডাকাতি-রাহাজানি বা ধর্ষণের মামলা তোলা যায় না।
দু’টি বদল: ১.আগে ধর্ষণে অভিযুক্ত অভিযোগকারিণীকে বিয়ে করে রফা করতে চাইলে এবং নির্যাতিতা রাজি থাকলে আদালত মামলা খারিজ করে দিতে পারত। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিয়ে করলেও ধর্ষণের অপরাধ লঘু হয় না। তাই মামলা তোলা যাবে না। ২. আগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ ধারায় বধূ নির্যাতনের মামলা রফার ভিত্তিতে তোলা যেত না। এখন বলা হচ্ছে, স্বামী যদি নিজেকে শুধরে নেয় ও স্ত্রীকে নির্যাতন না করার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং স্ত্রী যদি ফের তার সঙ্গে থাকতে সম্মত হন, তবে আদালত মামলা খারিজ করে দিতে পারে।
মোদ্দা কথা, আদালতের বাইরে মামলা মেটানো গেলে সব পক্ষেরই মঙ্গল। যদি কিছুটা মানিয়ে নিতে হয় বা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, ক্ষতি নেই। বরং লাভের ভাগই বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy