প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘ টালবাহানার পরে অবশেষে খুলল জমি-জট। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে অবশেষে যুক্ত হতে চলেছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। এর ফলে যানজটের যন্ত্রণা থেকে অনেকটাই রেহাই মিলবে বলে আশা করছেন প্রশাসনের কর্তারা। ওই দুই এক্সপ্রেসওয়ের সংযুক্তির ফলে যশোর রোডই শুধু নয়, ব্যারাকপুরের দিক থেকেও খুব কম সময়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে কলকাতা বিমানবন্দরে। উত্তর কলকাতার সঙ্গে উত্তর শহরতলির যোগাযোগও মসৃণ হবে।
দুই রাস্তার সংযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় জমি কিনতে বরাদ্দ হয়েছিল ২০০ কোটি টাকার মতো। সেই টাকায় ইতিমধ্যেই প্রায় এক হাজার অনিচ্ছুক জমিদাতার কাছ থেকে ‘বাজারমূল্যে’ জমি কিনে নিয়েছে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর। সেই জমি পূর্ত দফতরকে হস্তান্তরিত করা হয়েছে। এই খবর জানিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন এই কাজ আটকে ছিল। এখন জমি কিনে পূর্ত দফতরকে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। ওই রাস্তা তৈরি হলে যাতায়াতে গতি আসবে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই এক্সপ্রেসওয়ে সংযোগকারী রাস্তাটি দেড় কিলোমিটারের মতো দীর্ঘ হবে। তৈরি হবে উড়ালপুলও। সেই কাজের জন্য দরপত্রও ডাকা হয়েছে।
দুই এক্সপ্রেসওয়ের সংযুক্তির জন্য বছর দশেক আগে তৎকালীন বাম সরকার জমি অধিগ্রহণ শুরু করে। বিরাটির এম বি রোডের কাছে শরৎপল্লি, কেশব সেন স্ট্রিট, বিদ্যাসাগর পল্লির মতো কিছু এলাকায় জমি-জটে সেই কাজ আটকে যায়। তখন শ’দুয়েক পরিবার জমি দিলেও প্রায় এক হাজার বাসিন্দা সরকারের নির্ধারিত দামে জমি দিতে বেঁকে বসেন। জমির জন্য আরও বেশি টাকা দাবি করে তাঁরা কোর্টেও যান। ফলে ২০১০ সালে বেলঘরিয়া ও কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে সংযুক্তির প্রক্রিয়া থমকে যায়। নিমতার কাছে ১৬ একরের মতো জমি অধিগৃহীত না হয়েই পড়ে থাকে। ওই এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ির ফলে ভাঙা রাস্তায় জল-কাদা মাখামাখি হয়ে সেখান দিয়ে যাতায়াতই দুর্বিষহ হয়ে পড়ে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি রাজস্ব) দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘২০০ কোটি টাকায় এক হাজার জন জমিমালিকের প্রায় সবার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ১৬ একর জমি কিনে নেওয়া হয়েছে। জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ তাঁরা চেকও নিয়ে নিয়েছেন। এ বার পূর্ত দফতর কাজ শুরু করবে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে আরও খবর, ওই এলাকার দু’-একটি পরিবার বাইরে থাকে। কয়েকটি পরিবারে শরিকি বিবাদও রয়েছে। সেই কারণে এখনও তারা ক্ষতিপূরণ নেয়নি। তবে সেই প্রক্তিয়াও দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে।
উত্তর ২৪ পরগনার নিমতা থেকে নদিয়ার কল্যাণী পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির চাপ বাড়ছেই। কলকাতা থেকে নদিয়া হয়ে উত্তরবঙ্গে যেতে এই এক্সপ্রেসওয়ে ধরেই যাতায়াত করে অনেক গাড়ি। এক দিকে বি টি রোড, অন্য দিকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর থেকে চাপ অনেকটাই কমিয়েছে এই রাস্তাটি।
বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উপরেও বাড়ছে চাপ। ওই রাস্তার সঙ্গে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে যুক্ত হলে বাংলাদেশে পণ্য পরিবহণেও সুরাহা হবে। জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানান, এ বার ওই জমির মিউটেশন হবে। ছোট কিছু আইনি জটিলতা কাটলে কাজ শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy