বিধাননগরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন দ্বিজেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যু হয় তাঁর।
বছর চারেক আগে প্রয়াত হন গায়ক দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর ভোট পড়ল বিধাননগর পুরনির্বাচনে। শনিবার সকালে বিধাননগর পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের এএইচ কমিউনিটি হলের ভোটকেন্দ্রে কিছু ‘বহিরাগত’ ঢুকে ভোট দিতে শুরু করেন। সেই সময়েই প্রয়াত দ্বিজেনের ভোট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাম নেতৃত্বের।
বিধাননগরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন দ্বিজেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু তার পরেও ভোটার তালিকায় তাঁর নাম কী করে থেকে গেল, সে প্রশ্নই উঠছে। ওই ওয়ার্ডের বামপ্রার্থী বাসব বসাকের দাবি, সিরিয়াল নম্বর ১৭৪-এ দ্বিজেনের নাম ছিল। সিপিএমের বিধাননগর ১ নম্বর এলাকা কমিটির সম্পাদক বুম্বা মৈত্রের অভিযোগ, ‘‘সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পরে এক দল বহিরাগত এইচএ কমিউনিটি হলের বুথে ঢুকে ভোট দেওয়া শুরু করে। সব সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এক জন সিরিয়াল নম্বর ধরে ধরে নাম ডাকছিল, আর এক জন ভোট দিয়ে যাচ্ছিল। ওই সময়েই আমরা লক্ষ করি, সিরিয়াল নম্বর ১৭৪-এ দ্বিজেনবাবুর নাম ডাকা হয়েছে।’’ প্রয়াত গায়কের পরিবারের সঙ্গেও এ বিষয়ে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। পরিবারের তরফে জানানো হয়, তাঁরা এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না। শুনে বিস্মিতই হন তাঁরা।
বুম্বা জানান, বিধানসভা নির্বাচনের পর ওই ওয়ার্ডের যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের নামের তালিকা প্রিসাইডিং অফিসারকে জানানো হয়েছিল। বাসব বলেন, ‘‘শুধু দ্বিজেনবাবুই নন, অভিজিৎ মণ্ডল নামেও আরও এক মৃত ব্যক্তির নামেও ভোট দেওয়া হয়েছে ওই বুথকেন্দ্রে।’’ বিধাননগরে এক নম্বর এরিয়া কমিটির কোষাধ্যক্ষ অনুপম ভুঁইয়া জানান, অভিজিতের সিরিয়াল নম্বর ২০৫।
বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী মলি পাল। তিনি বলেন, ‘‘আরও অনেক মৃত ব্যক্তির ভোট পড়েছে বলে শুনেছি। ভোট-পর্ব মিটলে সব তথ্য জোগাড় করে কমিশনে জানাব।’’ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ‘‘ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম ভোটার তালিকা নেই। থাকলে তাঁর ভোটও পড়ে যেত।’’
যদিও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি এ বিষয়েও কিছুই জানেন না। তাঁর কথায়, ‘‘সিপিএমের কিছু বলার নেই, তা এ সব বাজে কথা বলছে। এখানে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। সিপিএমের যে প্রার্থী এই অভিযোগ করছেন, উনি আগে প্রক্সি মাস্টার ছিলেন।’’
প্রশ্ন উঠছে, ভোটার তালিকা থেকে কেন মৃতদের নাম বাদ দেওয়া হয়নি? যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে ভোটার তালিকা তৈরি করেছে, সেই তালিকাই ব্যবহার করা হয়েছে পুরভোটে। তা হলে গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় তৈরি হওয়া তালিকা থেকে কেন বাদ দেওয়া হল না দ্বিজেনের নাম? উঠছে এ প্রশ্নও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy