বাংলা ভাগের বিরোধিতা করে পথে নামল বামেরা। সোমবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
বাংলা ভাগের চেষ্টার বিরুদ্ধে শিলিগুড়িতে অরাজনৈতিক মিছিলে জনস্রোত উপচে পড়ার তিন দিনের মাথায় পথে নামল বামেরা।
সোমবার বিকেলে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে বামপন্থী দলের নেতা-কর্মীরা অশোক ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিম ও জীবেশ সরকারের নেতৃত্বে মিছিল করেন। মিছিল সুশৃঙ্খল থাকলেও ভিড়ের নিরিখে গত শুক্রবারের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেননি বামেরা। ফলে, ঘরে-বাইরে নানা প্রশ্নও উঠেছে। দলের অন্দরেই এক পক্ষ বলছেন, তড়িঘড়ি করে মিছিল না করে কনভেনশন করলেই হতো। আরেক পক্ষ মনে করেন, যে শহরের পুরসবা এখনও বামেদের দখলে সেখানে অরাজনৈতিক মিছিলে উপচে পড়া ভিড় দেখে ঘরে বসে থাকলে জনসমর্থন তলানিতে যাওয়া রুখতে সঙ্গে সঙ্গে নামার সিদ্ধান্ত সঠিক। যেমন সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশবাবুর দাবি, ‘‘অরাজনৈতিক মিছিলের নামে শাসক দলের মিছিল নয়। বামফ্রন্টের তরফে এ দিন সত্যিকারের সম্প্রীতি মিছিল হয়েছে।’’ বিধানসভার মুখ্য সচেতক সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যুদ্ধ-যুদ্ধ মনোভাব নিয়ে সমস্যার সমাধান হয় না। রাজ্যের তা বোঝা উচিত। মুখ্যমন্ত্রীকে যারা মা বলেছিলেন এই পরিস্থিতির জন্য দায় কি তাঁদের? না মুখ্যমন্ত্রীরও আছে? কেন্দ্র, রাজ্যকে নিয়ে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার মধ্য দিয়েই সমাধান করতে হবে।’’
ভিড় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, হাজার দু’য়েক লোক হয়েছিল। পুলিশের হিসেব তো আরও কম। বামফ্রন্টের তরফে জীবেশবাবুর দাবি, ‘‘তিন হাজারের অনেক বেশি মানুষ ছিলেন।’’ কিন্তু কত? তা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে চাননি।
ছোট রাজ্যের পক্ষে হলেও তারা পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের পক্ষে নয় তা বিজেপি নেতৃত্বও জানিয়েছেন। পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে অবশ্য বিজেপি তৃণমূল দুই পক্ষই তালগোল পাকাচ্ছে বলে দাবি সুজনবাবুর। তাঁর কথায়, জিটিএ চুক্তির সময় ‘গোর্খাল্যান্ড’ কথাটি রাখার মধ্য দিয়েই আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে মুখ্যমন্ত্রী। সে সময়ই তারা বারণ করেছিলেন বলে দাবি করেন।
এ দিন মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘সমতল থেকেও কোনও কোনও মন্ত্রী প্ররোচনা দিচ্ছেন। আমরা রাজ্য ভাগের বিরুদ্ধে। পাহাড়ে যে আন্দোলন চলছে তার বিরুদ্ধে। পাহাড়, সমতলের ঐক্য চাই।’’
তবে এ দিন বামেদের মিছিল এবং শাসকদলকে বামেদের আক্রমণ নিয়ে পর্যটনমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন। পর্যটনমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সিপিএম নেতাদের কাছে জানতে চাই তাঁরা পাহাড়ে হিংসাত্মক আন্দোলন, সরকারি অফিস, গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার নিন্দা করছেন কি না? ক্যাবিনেট বৈঠকের সময় সকলে আক্রান্ত হলেন। সেটাতে তারা সমর্থন করছেন কি সেটা জানান।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আলোচনা চাইছেন বামেরা। অথচ সর্বদলে আসেননি। তা দুর্ভাগ্যজনক।’’
শিলিগুড়ির মেয়রের কথায়, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, সরকারি অফিস ভাঙচুর তারা সমর্থন করেন না। শিলিগুড়িতেও বাংলা ভাগের বিরোধিতার নামে বিদ্বেষ ছড়াক সেটাও তাঁরা চান না বলে অশোকবাবুর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy