চরম আকালের দিনে আরও নীচে না নামার স্বস্তিটুকু রইল বাম শিবিরে। ফাইল ছবি।
একা লড়েও লাভ হল না। উপনির্বাচনে খড়দহ ও শান্তিপুরে প্রার্থী দিয়েছিল সিপিএম। দিনহাটায় ফরওয়ার্ড ব্লক এবং গোসাবায় আরএসপি প্রার্থী লড়াই করেছিলেন। সবগুলিতেই তিন নম্বর। চার কেন্দ্রের মধ্যে তিনটিতেই জামানত জব্দ। ব্যতিক্রম শান্তিপুর। এবং এই শান্তিপুরের ফলই যেন উপনির্বাচনের পর ঈষত্ প্রশ্বাসের বাতাস দিল সিপিএম তথা বামেদের।
কংগ্রেস সঙ্গ ত্যাগ করে বামফ্রন্ট এ বার ৪ আসনেই লড়াই করতে নেমেছিল। ফল প্রকাশের পর যথারীতি হাতে রইল পেনসিল।
২০০৬ সালের পর থেকে সিপিএম তথা বামফ্রন্টের ভোট কমার শুরু। সে বছর একা সিপিএম ৩৭.৯৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। তার পর থেকেই কিন্তু বামেদের লাগাতার রক্তক্ষরণ নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ বছরের নীলবাড়ির লড়াইয়ে এই ভোট নামতে নামতে এসে দাঁড়িয়েছিল ৪.৭ শতাংশে। বিপন্ন সিপিএম-কে সামান্য হলেও আলোর দিশা দেখাচ্ছে এই উপনির্বাচনের ভোট শতাংশের হিসেব। চার কেন্দ্র মিলিয়ে বাম প্রার্থীরা পেয়েছেন ৮.৪৯ শতাংশ ভোট। যা মাস ছয়েক আগের বিধানসভা ভোটে প্রাপ্ত ভোট শতাংশের দ্বিগুণের কাছাকাছি।
এটা ঘটনা যে ২৯২ কেন্দ্রের ভোট শতাংশ আর ৪ কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ভোট শতাংশ এক বিষয় নয়। তবে আপাতত নিজেদের এই চরম আকালের দিনে আরও নীচে না নামার স্বস্তিটুকু রইল বাম শিবিরে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূলকে ছাড়া বাকি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলতে চায় বামফ্রন্ট। আগামী দিনেও সেই কাজই করে যাবে। তৃণমূল ও বিজেপি-র চেষ্টা সত্ত্বেও বামেরা আত্মপ্রত্যয় নিয়ে লড়াই করে বুঝিয়ে দিয়েছে, তারাই প্রকৃত অর্থে বিকল্প শক্তি।’’
এই প্রেক্ষিতে বাম কর্মী-সমর্থকদের কথায় উঠে আসছে শান্তিপুর আসনের উপনির্বাচনের কথা। সেখানে সিপিএম প্রার্থী সৌমেন মাহাতো পেয়েছেন মোট প্রদত্ত ভোটের ১৯.৫৭ শতাংশ। গত বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। জোটের হয়ে লড়াই করেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছিলেন ৪.৪৮ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস এ বারও লড়েছে। পেয়েছে মাত্র ১.৪১ শতাংশ ভোট। সেখানে সিপিএম প্রায় ২০ শতাংশ। এই অঙ্কই সিপিএম তথা বামেদের সার্বিক ভোট শতাংশকে বেশ খানিকটা উপরে তুলে নিয়ে গিয়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটি অংশের মতে, উপনির্বাচনে সাধারণত শাসক দলের ব্যবধান বাড়ে। সে ক্ষেত্রে, বামেদের এই ভোট বৃদ্ধিকে তাঁরা গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন। তাঁরা মনে করছেন, প্রধান বিরোধী দলের রঙ বদলানোর সময় সিপিএম-এর যে ভোট বিজেপি-র ঝুলিতে চলে গিয়েছিল, তার কিছুটা হয়তো ফিরেছে। আবার সেই ভোটের বেশ কিছুটা অংশ যে তৃণমূলেও গিয়েছে, তা নিয়েও নিশ্চিত পর্যবেক্ষকরা। এই দু’য়ের ফলেই তৃণমূল ও সিপিএম ভোট শতাংশ বাড়িয়েছে। যদিও এখনও বিজেপির থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বামেরা।
বিধানসভার তুলনায় উপনির্বাচনে বামেদের ভোট শতাংশ বৃদ্ধি থেকে ভবিষ্যতের দিশা পাওয়ার চেষ্টা করছেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। তবে কি কংগ্রেস সঙ্গ ত্যাগ করেই সুবিধা হল আলিমুদ্দিনের!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy