সিঙ্গুরে সাইকেলে: প্রচারে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। ছবি: দীপঙ্কর দে।
সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শনিবার তুলোধোনা করলেন হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমো যে সিঙ্গুরের চাষিদের জন্য কিছুই করেননি, এমন অভিযোগ জানালেন সরাসরি।
এ দিন আক্রমণাত্মক লকেটের অভিযোগ, ‘‘সিঙ্গুরকে সিঁড়ি করে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা। কিন্তু গদিতে বসেই সব ভুলে গিয়েছেন। এখানকার মানুষ সরকারি প্রকল্পগুলির ন্যূনতম কোনও সুযোগ পান না। সিঙ্গুরের মানুষ বিজেপি-র পাশে থাকলে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুবিধা পাবেন এলাকার সব মানুষ।’’
চড়া রোদে সিঙ্গুরের সিংহের ভেড়ি এলাকায় এ দিন লকেটের পদযাত্রা ঘিরে মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। এক সময় গ্রামের মেঠো পথে তিনি সাইকেল চালাতে শুরু করেন। দলনেত্রীকে নতুন ভূমিকায় গ্রামের পথে দেখে উৎসাহীরা পিছুপিছু ছুটতে শুরু করেন। চোখে রোদচশমা আর শাড়ি পরে সাইকেল চেপে স্বচ্ছন্দ ছিলেন বিজেপি প্রার্থী। প্রায় আধ কিলোমিটার মেঠো পথে সাইকেল চালান তিনি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
লকেটের প্রশ্ন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এক সময় সিঙ্গুরের মাঠে সর্ষে দানা ছড়িয়ে ছিলেন। এই জমিতে না কি চাষ হবে? আসলে শিল্পের জন্য জমির মাটিতে নানা রাসায়নিক দেওয়া হয়েছিল। গ্রামের মানুষ জানেন না, ওই মাটিতে আর কোনওদিনই ফসল হবে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই রাজ্যে ক্ষমতায় এসে প্রথমেই তৃণমূলের সিন্ডিকেট রাজ বন্ধ করব। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তোলাবাজি করেই এই রাজ্যে সব কিছুকে ধ্বংস করছে শাসক দল।’’ এ দিন সন্ধ্যায় সিঙ্গুরে একটি মিছিলের শেষে কর্মিসভা করেন তিনি। স্থানীয় একটি মন্দিরে পুজোও দেন।
এ দিন লকেটের সুরে সুর মিলিয়েছেন এলাকার বহু বাসিন্দাই। সিংহের ভেড়ির বাসিন্দা বিশ্বনাথ দাস বলেন, ‘‘তৃণমূল সিঙ্গুরের চাষিদের সামনে রেখে ক্ষমতায় এল। ঝুড়ি ঝুড়ি প্রতিশ্রুতি দিল। আর এতদিনে ইন্দিরা আবাসের ঘরই পেলাম না। ক্ষমতার বদল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের দিন বদল হয়নি।’’ সিংহের ভেড়ি এলাকার বাসিন্দা সমীর দাসের ক্ষোভ, ‘‘রাজ্য সরকার বলেছিল, সাড়ে পাঁচ টাকা দরে সহায়ক মূল্যে আলু কিনবে। কিন্তু কিছুই হল না। চাষি তো সেই কম দামেই ফড়েদের কাছে আলু বিক্রি করেছে।’’
সিঙ্গুর আন্দোলনের অন্যতম মুখ, বিধায়ক বেচারাম মান্না অবশ্য লকেটের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘ভোটের সময় ওঁরা পরিয়ায়ী পাখির মতো সিঙ্গুরে আসেন। কিন্তু সিঙ্গুরের মানুষ জানেন, রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য কী করছে। মানুষ এখনও রাজ্য সরকারের চাল আর টাকা নিয়মিত পাচ্ছেন। সিঙ্গুরের মানুষকে অত সহজে ভুল বোঝানো যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy