নিরাপত্তা রক্ষী চেয়ে বিএসপি প্রার্থীর আবেদনপত্র। নিজস্ব চিত্র।
জঙ্গলমহলের রাজনীতিতে জাতিসত্তার দাবি ঢুকেছে আগেই। এই আবহে এ বার জনজাতি সংরক্ষিত ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের এক প্রার্থী কেবলমাত্র বিশেষ জনজাতি সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা রক্ষী চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছেন। বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) প্রার্থী অরুণকুমার হাঁসদার এমন আবেদন পেয়ে বিস্মিত পুলিশ-প্রশাসনিক মহল।
সূত্রের খবর, এর আগে কখনও কোনও প্রার্থী বিশেষ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তারক্ষী চাননি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, কোনও প্রার্থী নিরাপত্তা রক্ষী চাইলে তাঁর নিরাপত্তায় পুলিশ কর্মী দিতে হবে। প্রার্থীর নিরাপত্তার বিষয়টি মূল্যায়ন করে সংশ্লিষ্ট থানা বা জেলা পুলিশ লাইন থেকে এক বা একাধিক সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী দেওয়া হয়। তবে বিএসপি প্রার্থী অরুণকুমার হাঁসদা তাঁর আবেদনপত্রে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যে কোনও পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি সাঁওতাল সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা রক্ষী চান। অরুণকুমার নিজেও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের। যদিও পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, এ ভাবে সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে নিরাপত্তা রক্ষী দেওয়ার কোনও বিধান নেই। দ্বিতীয়ত, অরুণকে সেই সুযোগ দেওয়া হলে সেটা দৃষ্টান্ত হয়ে যাবে। তখন অন্য প্রার্থীরাও সম্প্রদায় ভিত্তিক প্রার্থী চাইতে পারেন। কারণ ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনটি জনজাতি প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত। এ ভাবে সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে কাউকে নিরাপত্তা রক্ষী দেওয়া হয় না। ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলছেন, ‘‘বিএসপির প্রস্তাবিত প্রার্থীর আবেদনপত্র পেয়েছি। নির্বাচন কমিশনের গাইড লাইন অনুযায়ী প্রার্থীর জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।’’
বেলপাহাড়ির গণ্ডাপালের বাসিন্দা অরুণকুমার অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী। তিনি বিএসপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতিও। কেন এমন আবেদন? অরুণকুমার বলছেন, ‘‘রাতদিনের প্রচারে গিয়ে কোনও গ্রামে হয়তো চাটাইতে ঘুমোতে হতে পারে, কখনও পান্তা ভাতও খেতে হতে পারে। কোনও জায়গায় রাতে মাটিতে ঘুমোতে হতে পারে। এ ব্যাপারে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু অন্যরা অভ্যস্ত না-ও হতে পারেন। সেই কারণেই সাঁওতাল সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা রক্ষী চেয়েছি।’’
মায়াবতীর নেতৃত্বাধীন দলটির ঝাড়গ্রাম জেলায় সেই অর্থে সংগঠন নেই। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের বিএসপি প্রার্থী অশোককুমার মুর্মু পেয়েছিলেন মাত্র ১১,৩২৪ ভোট (০.৮%)। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও ঝাড়গ্রাম জেলার খুবই সামান্য ভোট পান বিএসপি প্রার্থীরা। অরুণকুমার জানাচ্ছেন, জঙ্গলমহলে জল-জঙ্গল-জমির অধিকার, ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র বাতিল, তফসিলি, জনজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণির প্রকৃত উন্নয়ন সহ বহুবিধ দাবি নিয়ে তাঁদের কার্যক্রম চলছে। তিনি আরও জানান, কারও সঙ্গে বিএসপি-র জোট নেই। সারা দেশে এবার পাঁচশো প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy