Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গি ঠেকাতে ঝাঁটার দাওয়াই

বিধানসভায় নিজের ঘরে ডেঙ্গির ঠেকানোর আগাম পর্যালোচনা করতে বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা। সেখানে হাজির ছিলেন কলকাতা ও আশপাশের পুরসভার মেয়র-চেয়ারম্যানেরা। ছিলেন সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৮ ০৩:৫০
Share: Save:

ডেঙ্গির দাওয়াই শুধুমাত্র স্বচ্ছতা।

অন্তত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেমনই মনে করছেন। তাই মরসুম শুরুর ছ’মাস আগেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভাগুলিকে রাস্তা ঝাঁট দেওয়া থেকে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পুরসভাগুলি ডেঙ্গি ঠেকাতে শহরকে নির্মল রাখার কাজ কেমন করছে, তা জেলা সফরে গিয়ে পরখ করে দেখবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরও ‘সকাল-সন্ধ্যায় ঝাঁট’ দেওয়ার কাজেই আপাতত মনোনিবেশ করার নির্দেশ জারি করেছে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় নিজের ঘরে ডেঙ্গির ঠেকানোর আগাম পর্যালোচনা করতে বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা। সেখানে হাজির ছিলেন কলকাতা ও আশপাশের পুরসভার মেয়র-চেয়ারম্যানেরা। ছিলেন সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারাও। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন, অগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাস থেকেই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ে। এ বার এখন থেকেই পরিচ্ছন্নতার কাজে নামতে হবে।

মশাবাহিত এই রোগের কবলে পড়ে গত বার বেশ কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। সরকার যদিও ডেঙ্গির বিপদকে প্রথমে স্বীকার করতেই চায়নি। বেসরকারি হাসপাতালের ঘাড়েও এই রোগের দায় চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে চেয়েছিল বলেও গত বার অভিযোগ উঠেছিল। ভিন রাজ্য থেকে ডেঙ্গি এ রাজ্যে চলে আসার কাহিনীও বার বার উঠে এসেছিল সরকারি কর্তাদের মুখে। সেই হিসাবে শীত কাটতেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর নেমে পড়ার ঘটনায় অনেকে আশার আলো দেখছেন। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য,‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নজর রয়েছে জানলে পুরসভাগুলি আরও সতর্ক হবে। গত বার ৩০ কোটি টাকা দেওয়া হলেও তার যথার্থ ব্যবহার নিয়ে সংশয় রয়েছে। না হলে ডেঙ্গির এমন বহর দেখা যেত না।’’

মুখ্যমন্ত্রীর সক্রিয় হওয়ায় এ বার অবশ্য ভিন্ন কথা। পুরসচিব ওঙ্কার সিংহ মিনা মমতার বৈঠকের পর দিনই পুর চেয়ারম্যানদের উদ্দেশে বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘অন্তত ছ’টি নির্দেশ পাঠিয়ে শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার কথা আগেই বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জেলায় গিয়ে কিন্তু আপনাদের কাজের হিসাব বুঝে নেবেন। তাই এখন থেকেই সক্রিয় হোন।’

কী কী করতে হবে?

পুরসচিব লিখেছেন, রোজ সকাল-সন্ধ্যায় পুর এলাকায় রাস্তা ঝাঁট দিতে হবে, নালা-নর্দমা থেকে প্ল্যাস্টিক,আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে, ঘরে ঘরে প্রতিদিন আবর্জনা সংগ্রহ করতে হবে, পচনশীল ও অন্যান্য আবর্জনা আলাদা করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলে আসতে হবে, রাস্তাঘাট, রেলিং নিয়মিত সাফ করে পুরনো হোর্ডিং-ব্যানার সরিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের অভিযোগ জানানোর জন্য নির্দিষ্ট ফোন নম্বর দিয়ে সকলকে জানাতে হবে।

পুরসচিব এও জানিয়েছেন, জেলাশাসকরা পুর এলাকার জন্য ভাগাড়ের জমির ব্যবস্থা করবেন। কম্প্যাক্টর, ডাম্পার, টিপার যত সংখ্যায় লাগবে পুর দফতর তা পাঠাবে। সেই সঙ্গে অর্থ কমিশন, গ্রিন সিটি প্রকল্প, ওয়েস্টবেঙ্গল আরবান এমপ্লয়মেন্ট স্কিম থেকে টাকাও মিলবে।

পুর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের স্পষ্ট,‘‘ অর্থ ও পরিকাঠামো দেওয়া হচ্ছে। এ বার পুর চেয়ারম্যানদের কাজ করে দেখাতে হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE