Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Mamata Banerjee's Foreign Visit

বিদেশের মাটিতে প্রথম হল বাংলার রাজ্য সঙ্গীত, দুবাইয়ে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’, প্রবাসীদের ফেরার ডাক দিদির

স্পেনের মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার পর বৃহস্পতিবার দুবাই এসে পৌঁছন মমতা। শুক্রবার তাঁর ঠাসা কর্মসূচি ছিল। বাণিজ্য বৈঠকও করেন মুখ্যমন্ত্রী। লুলুর এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর ও আমিরশাহির মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা।

Mamata Banerjee meets Indian diaspora and others at Dubai

প্রবাসীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

অনিন্দ্য জানা
দুবাই শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৫৭
Share: Save:

বিধানসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, পয়লা বৈশাখ দিনটি পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন করা হবে। এ-ও ঠিক হয়েছিল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটি হবে রাজ্য সঙ্গীত। সেই সিদ্ধান্তের পর কয়েক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। তার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম বিদেশের মাটিতে গাওয়া হল রাজ্য সঙ্গীত। যিনি রাজ্য দিবস ও রাজ্য সঙ্গীতের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন, সেই মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিই দুবাইয়ে গানের মূর্ছনা। গলা মেলালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

স্পেনের মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার পর বৃহস্পতিবার দুবাই এসে পৌঁছন মমতা। শুক্রবার তাঁর ঠাসা কর্মসূচি ছিল। বাণিজ্য বৈঠকও করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে শিল্পগোষ্ঠী লুলুর এগ‌্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর আশরফ আলি এবং আমিরশাহির বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জ়েয়াউদির সঙ্গে পৃথক ভাবে একান্ত বৈঠক করেন মমতা। তার পর তিনি মিলিত হয়েছিলেন প্রবাসীদের সঙ্গে। সেই অনুষ্ঠানের শেষেই গাওয়া হয় রাজ্য সঙ্গীত। শেষে পরিবেশিত হয় জাতীয় সঙ্গীতও।

শুক্রবারের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রবাসীদের উদ্দেশে রাজ্যে বিনিয়োগের আবেদন জানান। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা ফিরে আসুন। আমাদের সব কিছু তৈরি রয়েছে। আপনাদের সবারে করি আহ্বান।’’ কী ভাবে তাঁর সরকার বাংলার মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে, সেই প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। দুবাইয়ের প্রবাসীদের উদ্দেশে মমতা আরও বলেন, ‘‘আপনারা আমাদের ভুলে যাবেন না। আমরা আপনাদের ভুলব না। আমি ট্রানজিট প্যাসেঞ্জার হিসাবে অনেক বার দুবাই এসেছি। কিন্তু এই প্রথম সাধারণ নাগরিকের মতো এলাম। ডাক পেলে আবার আসব।’’

বোরহা মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে জাতীয় পতাকা হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বোরহা মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে জাতীয় পতাকা হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।


নিজের বক্তৃতায় রাজ্যের দুর্গাপুজো থেকে পর্যটনে ইউনেস্কোর স্বীকৃতির কথা তুলে ধরেন মমতা। শুক্রবারের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দাউদি বোরহা মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিরাও। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতার বোরহা মসজিদে এক বার গিয়েছিলেন। সেই অভ্যর্থনার কথা আজও তাঁর স্মৃতিতে রয়েছে। আরবি কবি ও লেখক শেহাদ খানেম মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন তাঁর লেখা বইয়ের বাংলা অনুবাদ। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর বক্তৃতায় জানান, ইতিমধ্যেই তাঁর লেখা ১৩৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে। দুবাইয়ের ইন্ডিয়া ক্লাবের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ বালাচন্দ্রন উপস্থিত ছিলেন শুক্রবারের অনুষ্ঠানে। তিনি আসলে কেরলের ভূমিপুত্র। সিদ্ধার্থ বলেন, ‘‘ভারত মা হলে প্রতিটি রাজ্য তার সন্তান। আর তাদের মধ্যে সবচেয়ে কাছাকাছি বাংলা এবং কেরল। খাওয়াদাওয়া, ফুটবল প্রেম, চলচ্চিত্র— সবেতেই মিল রয়েছে দুই রাজ্যের।’’

গোটা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রারম্ভিক ভাষণ দেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের প্রধান সচিব বন্দনা যাদব, দুবাইয়ের ভারতীয় উপরাষ্ট্রদূত আমন পুরী। দুবাইয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রাক্তনীদের সংগঠনের তরফেও মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মান জানানো হয় শুক্রবারের সন্ধ্যাবাসরে। বাংলার বদল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতার নেতৃত্বের প্রশংসা শোনা যায় সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাক্তনী কল্যাণ ভট্টাচার্যের গলায়।

মুখ্যমন্ত্রী জানান যুদ্ধধস্ত ইউক্রেন থেকে কী ভাবে বাংলার পড়ুয়াদের ফিরিয়ে এনে রাজ্যে পড়ানোর বন্দোবস্ত করেছিলেন। যা দেখে পরে সেই পথে হাঁটে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল। মমতা এ-ও জানান, প্রবাসীদের যে কোনও অসুবিধায় রাজ্য সরকার পাশে রয়েছে। সেই কারণেই ‘আপন বাংলা’ অ্যাপ আনা হচ্ছে। মাদ্রিদ ও বার্সেলোনাতেও প্রবাসীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন মমতা। শুক্রবার হলেন দুবাইতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE