সাগরসাক্ষী: শুধু পৌষসংক্রান্তির মেলা নয়। সারা বছরই গঙ্গাসাগরে পর্যটকের মেলা চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে আয় বাড়বে সরকারের। বুধবার সাগরে দাঁড়িয়েই মুখ্যসচিব মলয় দে-কে পর্যটন-পরিকাঠামো উন্নত করার নির্দেশ দেন মমতা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
পৌষসংক্রান্তির গঙ্গাসাগর মেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম তো আছেই। সারা বছরই পর্যটকের ভিড়ে গমগম করুক সাগর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, দিঘা-মন্দারমণির মতো সব অর্থেই পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠুক ওই মোহনা।
সাগরমেলার প্রস্তুতি দেখতে তিন দিনের সফরে মঙ্গলবার সাগরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। মাত্র এক দিন ঘুরেই বুধবার তাঁর মনে হয়েছে, পর্যটক আকর্ষণের যাবতীয় রসদ মজুত রয়েছে এখানে। দরকার শুধু পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর। সে-দিকে নজর রেখে যা করার, সেটা দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব মলয় দে-কে। পুরোদস্তুর পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারলে সাগরে সরকারের আয়ের একটা উৎস তৈরি হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা।
কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগমক্ষেত্র গঙ্গাসাগর মেলাকে সফল রূপ দিতে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাজ্য সরকার। রাস্তা, পানীয় জল, আলো, থাকা-খাওয়া— সব মিলিয়ে এলাহি আয়োজন। সাগরের পরতে পরতে তখন উন্নয়নের গন্ধ।
এই মেলার হাত ধরে সাগর কি পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পেরেছে?
মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, কলকাতা থেকে সাগর যাতায়াত, সেখানে থাকার স্থায়ী ব্যবস্থা, সৌন্দর্যায়ন— স্থায়ী পর্যটন কেন্দ্রের জন্য এখনও অনেক কাজ করতে হবে সরকারকে। তিনি সেই কাজেরই দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যসচিবকে। আর নিজে মুড়িগঙ্গা নদীতে রেল তথা সড়কসেতু নির্মাণের জন্য
রাজি করিয়েছেন কেন্দ্রকে।
এ দিন সাগরের রুদ্রনগরে এক পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্র-রাজ্যের আলোচনায় নীতিগত ভাবে ঠিক হয়েছে, দিঘার কাছে তাজপুর এবং সাগরে দু’টি বন্দর তৈরি করবে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথমে বন্দর গড়া হবে তাজপুর। মুড়িগঙ্গায় কেন্দ্র সেতু নির্মাণ করে দেবে, এই শর্তেই তাজপুর বন্দরের ৭৪% অংশীদারি ছাড়া হয়েছে তাদের হাতে। বাকি ২৬% রাজ্যের। এই নিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র ও মুখ্যসচিবের সঙ্গে জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের তিন বার আলোচনা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘তাজপুর বন্দরের ৭৪% শেয়ার কেন্দ্রকে ছেড়ে দিয়ে বিনিময়ে সাগরকে সংযুক্ত করার একটি জরুরি পরিকাঠামো প্রকল্প (সেতু গড়তে খরচ হবে ৪০০০ কোটি) আদায় করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এটা কম কথা নয়।’’
আরও পড়ুন: তিন দিন ধরে মৃত বোনের দেহ আগলে বসে দাদা
প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সার্বিক পরিকাঠামো উন্নত করে সাগরকে পর্যটন কেন্দ্রের চেহারা দেওয়া হবে। তাতে আয় হবে সরকারের। এখন গঙ্গাসাগর মেলার জন্য যাবতীয় খরচ সামলায় রাজ্য। কিন্তু মেলা থেকে যে-আয় হয়, তার পুরোটাই যায় কপিলমুনি আশ্রমের পরিচালন ট্রাস্টের হাতে। শেষ পর্যন্ত সেই অর্থ চলে যায় ভিন্ রাজ্যে। পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে সরকারের কোষাগারেও অর্থ ঢুকবে, যেমনটা হয় অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের ক্ষেত্রে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy