Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

উচ্ছ্বাস মতুয়া ভক্তদের, ক্ষুব্ধ মমতা ঠাকুর

সিএবি-র বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব তৃণমূল শিবির। সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরও এ দিন জানিয়ে দিলেন, বিল তিনি সমর্থন করছেন না।

মমতা ঠাকুর।

মমতা ঠাকুর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা ও কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩৭
Share: Save:

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) নিয়ে ভাগ আরও স্পষ্ট হল মতুয়াদের মধ্যে। এক দল ডঙ্কা-কাঁসি, মতুয়াদের লাল-সাদা নিশান নিয়ে বৃহস্পতিবার দিনভর উৎসবে মাতলেন। বিজেপিকে সাধুবাদ জানাতেও মুখ খুললেন। ভিড় করলেন গাইঘাটায় মতুয়াদের পীঠস্থান ঠাকুরবাড়িতে। যে বাড়ির এক প্রান্তে থাকেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। অন্য প্রান্তে থাকেন শান্তনুর জেঠিমা, তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতা ঠাকুর। ভিড়টা এ দিন ছিল মূলত শান্তনুর বাড়ির দিকেই। অন্য দিকে, সুনসান মমতার আঙিনা।

সিএবি-র বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব তৃণমূল শিবির। সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরও এ দিন জানিয়ে দিলেন, বিল তিনি সমর্থন করছেন না। এর আগে কলকাতায় সিএবি বাতিলের দাবিতে ধর্নায় হাজির ছিলেন না মমতা। নাগরিকত্ব নিয়ে মতুয়াদের দীর্ঘ দিনের ইচ্ছে পূরণ হওয়ায় সঙ্ঘাধিপতি মমতার সিএবি বিলের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় সমস্যা ছিল। এই পরিস্থিতিতে তাঁর গরহাজিরা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। তবে মমতা এ দিন নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দাবি ছিল, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দিতে হবে। নতুন বিলে তার উল্লেখ নেই। কেন্দ্রের তরফে বলা হচ্ছে, নথিপত্র ছাড়াই নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তা হলে কেন আবার আবেদনের কথা বলা হবে?’’ তাঁর মতে, আবেদন করার মধ্যে ‘রহস্য লুকিয়ে আছে।’ প্রাক্তন সাংসদের দাবি, ও পার বাংলা থেকে যাঁরা যখনই এসে থাকুন, তাঁদের সকলকে নিঃশর্তে নাগরিকত্ব দিতে হবে। এই দাবিতে তাঁরা শীর্ঘ্রই আন্দোলন শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

তবে তাঁর দল তৃণমূল যেখানে বিলের বিরুদ্ধে সরব, সেখানে মমতা ঠাকুরের পক্ষে পৃথক অবস্থান নেওয়া শক্ত ছিল বলেই মনে করছেন মতুয়াদের অনেকে। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ মতুয়া ভক্তেরা যে বিল পাস করা নিয়ে বিজেপিকেই অকুণ্ঠ সমর্থন জানাচ্ছেন, তা অজানা থাকার কথা নয় মমতার।

মতুয়া ধর্মপ্রচারক রবি হালদার বলেন, ‘‘আমাদের ধর্মগুরু প্রমথরঞ্জন ঠাকুর, বড়মা বীণাপানিদেবীরা যে দাবি তুলেছিলেন, আমরা তার শরিক ছিলাম। কেন্দ্র দাবি মেনে নেওয়ায় আমরা খুশি।’’ অন্য দিকে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের কথায়, ‘‘বাহাত্তর বছর পরে হিন্দু উদ্বাস্তুরা এ দেশের স্থায়ী নাগরিকত্ব পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’’ এ দিন বিলের সমর্থনে বনগাঁয় একাধিক মিছিলও করেছে বিজেপি। নদিয়াতেও মতুয়া ভক্ত প্রচুর। তাঁদের মধ্যেও সিএবি নিয়ে ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলপন্থী মতুয়াদের নেতা প্রমথরঞ্জন বসু বলেন, “মতুয়ারা এই বিলকে কোনও ভাবেই সমর্থন করবেন না। কারণ, এতে ২০১৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যাবে না। যে সব হিন্দু বাংলাদেশ থেকে আসবেন, তাঁদেরই নাগরিকত্ব দিতে হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE