কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশ এবং অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতির অনুরোধ সত্ত্বেও একটি কাজ না-হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করল উচ্চ আদালত। কাজটা হল না কেন, ৪ অগস্ট আদালতে হাজির হয়ে তা ব্যাখ্যা করার জন্য শুক্রবার রাজ্যের অর্থসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর।
কাজটা কী?
কাজটা হল, অর্থ লগ্নি সংস্থা এমপিএস-এর আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে হাইকোর্টের গড়ে দেওয়া কমিটিকে সাহায্য করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে এক জন নোডাল অফিসার নিয়োগ।
রাজ্য সরকারকে ওই নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি চেল্লুর স্বয়ং। তারও আগে একই কাজের জন্য রাজ্যের অর্থসচিবকে অনুরোধ করে একটি চিঠি দিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদার। কিন্তু তালুকদারের অনুরোধ বা চেল্লুরের নির্দেশ— কোনওটাতেই কাজ হয়নি। লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দিতে গড়া তালুকদার কমিটিকে সাহায্য করার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও নোডাল অফিসার নিয়োগ করেনি সরকার। এই গড়িমসির জন্য প্রশাসনকে জোর ধমক দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
ওই বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর জন্য প্রাক্তন বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারকে চেয়ারম্যান করে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি চেল্লুর। এক সদস্যের সেই কমিটিকে সাহায্য করার জন্য নোডাল অফিসার হিসেবে কাউকে নিযুক্ত করতে গত ১৬ জুন রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতিই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকার সেই নোডাল অফিসার নিয়োগ না-করায় ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি এ দিন বলেন, ‘‘বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’
আবেদনকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও শুভাশিস চক্রবর্তী এ দিন আদালতে জানান, নোডাল অফিসার নিয়োগ করার জন্য উচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছে মাস দেড়েক আগে। বিষয়টি কিন্তু ঝুলে আছে তারও বেশ কিছুটা আগে থেকে। টাকা ফেরতের কমিটি গড়ার পরেই বিচারপতি তালুকদার রাজ্যের অর্থসচিবকে একটি চিঠি দিয়ে নোডাল অফিসার নিয়োগের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। সেই চিঠি লেখা হয়েছিল ৮ জুন অর্থাৎ নোডাল অফিসার নিয়োগের ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেওয়ার দিন আষ্টেক আগে। অভিযোগ, নোডাল অফিসার নিয়োগ করা তো দূরের কথা, অর্থসচিব এখনও পর্যন্ত বিচারপতি তালুকদারের সেই অনুরোধের চিঠির জবাবটুকুও দেননি।
সরকার পক্ষের কৌঁসুলি প্রণব দত্ত জানান, বিচারপতি তালুকদারের লেখা ওই চিঠির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। কী কারণে এখনও নোডাল অফিসার নিযুক্ত করা হয়নি, রাজ্য সরকারের কাছে তিনি তার ব্যাখ্যা চাইবেন। প্রণববাবুর বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘চিঠিটা যখন অর্থসচিবকে লেখা হয়েছে, তখন তিনিই হাজির হয়ে জানান, কী কারণে নোডাল অফিসার নিয়োগ হয়নি।’’
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন আরও জানায়, বিভিন্ন অর্থ লগ্নি সংস্থার আমানতকারীরা টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে জনস্বার্থে যত মামলা দায়ের করেছেন, সেই সমস্ত মামলারই শুনানি হবে পৃথক একটি আদালতে। সেই আদালত পরিচালনা করবেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy