সংঘর্ষ: পুরীগেট উড়ালপুলে দুর্ঘটনার পরে। নিজস্ব চিত্র
বাঁকেই বিপদ!
আর তার জেরে ফের দুর্ঘটনা খড়্গপুর আইআইটি সংলগ্ন পুরীগেট উড়ালপুলে। শনিবার সকালে ওই উড়ালপুলে পুলিশের বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে মোটরবাইক আরোহী দু’জনের। মৃতেরা হলেন খড়্গপুর গ্রামীণের হিরাডির কেশিয়াশোলের বাসিন্দা ডমন হেমব্রম (২৫) ও খালশিউলির বিনোদ মুর্মু (২৮)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জন্য খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে টিকিট করতে জামাইবাবু বিনোদের সঙ্গে বাইকে এসেছিলেন ডমন। বাড়ি ফেরার সময়ে উল্টো দিক থেকে আসা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ লাইনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বাইকটির। দুই আরোহীর কারও হেলমেট ছিল না।
‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ স্লোগান সামনে পুলিশ যেখানে দুর্ঘটনা ঠেকানোর প্রচার চালাচ্ছে, সেখানে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটায় প্রশ্ন উঠেছে। দুর্ঘটনার পরে পুলিশের বাসের চালক পালিয়েছিলেন। তবে পরে ওই কনস্টেবল থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রেলশহরের সঙ্কীর্ণ এই উড়ালপুলের বাঁকে বারবার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ছে বাইক। গত বছর ৯ জুলাই মৃত্যু হয়েছিল বিভাস চক্রবর্তী নামে খরিদা কুমোরপাড়ার এক যুবকের। ওই বছরই ১৬ এপ্রিল উড়ালপুলের বাঁকে গার্ডওয়ালে নিয়ন্ত্রণহীন বাইকের ধাক্কায় প্রাণ যায় ইন্দার দুই যুবকের। এ দিনও বাঁকেই ঘটে দুর্ঘটনা। বাইক চালাচ্ছিলেন ডমন। দ্রুত গতিতে বাঁক ঘুরে আইআইটির দিকে নামার সময় বাঁ-দিক থেকে বাইকটি ডানদিকে চলে আসে। তখন জেলা পুলিশ লাইনের ফাঁকা বাসটি দ্রুত গতিতে উড়ালপুলে উঠছিল। বাসের ডান দিকে ধাক্কা মারে ডমনদের বাইক। এরপর বাইক সমেত দুই আরোহীকে মাটিতে পিষে ডানদিকে চলে আসে পুলিশের বাসটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বিনোদ ও ডমনের। পরে দেহ খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।
একই উড়ালপুলে বারবার দুর্ঘটনা ঘটায় শহরবাসী ক্ষুব্ধ। কেন উড়ালপুলে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই, সেই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। খরিদার বাসিন্দা সুখময় প্রধানের কথায়, “ওই উড়ালপুলে দু’দিকে বাঁক আর মাঝে তিন রাস্তার সংযোগস্থল দুর্ঘটনাপ্রবণ। তার উপর যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় বারবার দুর্ঘটনা হচ্ছে।” ডমনের পরিচিত হিরাডির বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ দাসও বলেন, “বেপরোয়া গাড়ি ঠেকাতে এই উড়ালপুলে যান নিয়ন্ত্রণ জরুরি।”
এ প্রসঙ্গে খড়্গপুরের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডলের বক্তব্য, “ওই উড়ালপুলের নকশায় সমস্যা রয়েছে। আপাতত ওই উড়ালপুলে কিছু স্পিড ব্রেকার দেওয়ার জন্য আমরা পূর্ত দফতরের কাছে আবেদন করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy