প্রতীকী ছবি।
কোথাও পঞ্চায়েতের দু’একটি আসন জিতেছে তাঁরা, কোথাও আবার তাঁরাই পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ! শুধু শাসক নয়, নির্দল কাঁটায় বিদ্ধ বাম-কংগ্রেসও! নির্দল ঠিক দলের তাই নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
তৃণমূলের অনেকেই টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে ভোটে লড়েন। বাম ও বিজেপি সমর্থিত অনেক নির্দলও রয়েছে। সবংয়ের বুড়াল ও দণ্ডরা গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনও নির্দল প্রার্থী জেতেননি। কিন্তু ব্লকের বাকি ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সবক’টিতেই কম-বেশি আসনে নির্দল প্রার্থী রয়েছেন। সার্তা গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েছেন নির্দলরা। ১৪টি আসনের মধ্যে ৬টিতে তৃণমূল ও ৮টি আসনে নির্দলরা জিতেছেন। এই পঞ্চায়েতে নির্দলরা বোর্ড গড়বেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার তৃণমূল বিক্ষুব্ধ এক জয়ী নির্দল প্রার্থী বলছেন, “আমি আদতে মানস ভুঁইয়ার অনুগামী। কিন্তু এখানে অমূল্য মাইতির অনুগামী ও সিপিএম-কংগ্রেস জোটের নির্দলও জিতেছে। এ ক্ষেত্রে কারা বোর্ড গড়বে তা বোঝা যাচ্ছে না।”
তৃণমূলের নতুন-পুরনো কর্মীদের বিবাদে এ বার বেশ কয়েকটি এলাকায় তৃণমূলের দলীয় প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত হতে হয়েছে। এই ঘটনায় ফের প্রকাশ্যে সাংসদ মানস ভুঁইয়ার অনুগামীদের সঙ্গে জেলা পরিষদের জয়ী প্রার্থী অমূল্য মাইতির অনুগামীদের সংঘাত। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, যেখানে যাঁদের দাপট বেশি সেখানে নির্দলদের জয়ের পিছনে তাঁদের মদত রয়েছে। এই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যেও জোর তরজাও শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফল ঘোষণার পরে বোর্ড গড়তে নির্দলদের এখন দলে টানতে মরিয়া তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তবে সবংয়ে নির্দলদের নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূলের নতুন-পুরনো দুই গোষ্ঠীই। দু’পক্ষ দলের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষায় নির্দলদের দায় নিতেও অস্বীকার করছে। ফলে জয়ী নির্দল প্রার্থী কোন দলের, তাই নিয়েই শুরু হয়েছে সংশয়। এই প্রশ্নে দুই গোষ্ঠী একে-অপরের দিকে আঙুল তুলছে। এই সুযোগে নির্দলদের অধিকাংশ তাঁদের দলের ফসল বলে দাবি করছে সিপিএমও।
তবে সিপিএমের এক সূত্রে খবর, নিজেদের সমর্থিত নির্দলদের হিসাব মেলাতেও পারছেন না সিপিএম নেতারা। বোর্ড গঠনের সময় নির্দলদের কে কোথায় ঝুঁকবেন তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।
অমূল্যবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রভাত মাইতির দাবি, “আমাদের কোনও নির্দল নেই। জয়ী প্রার্থীদের অধিকাংশই দলের নতুন আসা। কোথাও নতুনরা সরাসরি নির্দল প্রার্থী দিয়েছিল। আবার কোথাও সিপিএম-কংগ্রেস জোটের নির্দলদের সমর্থন করেছিল। তাই এমন অবস্থা হয়েছে।’’
যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে মানসবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আবু কালাম বক্সেরও দাবি, “নির্দলদের অধিকাংশ পুরনো তৃণমূলের। ব্লক সভাপতি হিসাবে তাই দায় এড়াতে প্রভাতবাবু আবোল-তাবোল বলছেন। দলে পর্যালোচনা হোক।”
নির্দলদের অনেকেই তাদের জোট প্রার্থী বলে দাবি করছে কংগ্রেস ও সিপিএমের নেতারাও। কংগ্রেসের জেলা নেতা চিরঞ্জিৎ ভৌমিকের দাবি, “দলীয় প্রতীকে ৪ জন জিতেছেন। আর ৭ জন প্রার্থী জোটের প্রার্থী হিসেবে জিতেছেন।” সুযোগ বুঝে নিজেদের জয়ী প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা বাড়াচ্ছে বামেরাও। সিপিএম নেতা চন্দন গুছাইতের দাবি, “আমাদের দলীয় প্রতীকে ৪ জন জিতেছেন। তাছাড়াও আরও ৩১ জন নির্দল আমাদের সমর্থনে জিতেছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy