ভোট মিটেছে। কিছু ক্ষেত্রে জয়ও এসেছে। কত কিছুই তো ঘটতে পারে। গ্রাম পঞ্চায়েত গঠন না করা পর্যন্ত সোয়াস্তি নেই। তাই ঝুঁকি না নিয়ে গোয়ালতোড়ের বিভিন্ন পঞ্চায়েত আসনে জয়ী প্রার্থীদের জন্য নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করছে বিজেপি।
প্রতি জয়ী প্রার্থী পিছু দু’জন নিরাপত্তারক্ষী। তবে প্রথাগত অর্থে নিরাপত্তারক্ষী বলতে যা বোঝায় বিষয়টা তেমন নয়। দলের একেবারেই বিশ্বস্ত কর্মীদের নিরাপত্তার কাজে লাগানো হচ্ছে। যতদিন না পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হচ্ছে ততদিন থাকবে এই বন্দোবস্ত। গোয়ালতোড়-সহ আশেপাশের গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট ৪২ জন জয়ী প্রার্থীর জন্য এই নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু কেন এই ব্যবস্থা? গোয়ালতোড়ের বিজেপি নেতা তথা দলের জেলা সহ সভাপতি পশুপতি দেবসিংহ বলেন, ‘‘গোয়ালতোড় ব্লকের যে ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত আমরা দখল করেছি, সেগুলির দখল নিতে তৃণমূল উঠেপড়ে লেগেছে। আমাদের জয়ী প্রার্থীদের হুমকি দিচ্ছে। অপহরণের ভয় দেখাচ্ছে, মোটা অঙ্কের টাকার টোপ দিচ্ছে। সেজন্যই এই ব্যবস্থা নিয়েছি।’’ অর্থাৎ সরাসরি দল ভাঙানোর অভিযোগ। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে গোয়ালতোড়ে তৃণমূলের নেতা চন্দন সাহা বলেন, ‘‘আমরা এখন নিজেদের সামলাতেই ব্যস্ত। তাছাড়া আমাদের এত টাকাই বা কোথায় যে ওদের জন্য খরচ করব, যতসব ফালতু অভিযোগ।’’
বিজেপি অবশ্য নজরদারিতে কোনও শিথিলতা দেখাতে রাজি নয়। দলীয় সূত্রের খবর, শুধু নিরাপত্তারক্ষী নয়, জয়ী প্রার্থীদের বাড়ি যেসব পাড়ায় সেখানে ঢোকার সমস্ত রাস্তাতেই দলীয় কর্মীদের পাহারায় বসানো হচ্ছে। দলের নিরাপত্তারক্ষীরা সন্দেহজনক কিছু বুঝতে পারলেই তাঁরা তৎক্ষণাৎ খবর দেবেন দলের উপর তলার নেতাদের। এমনকি জয়ী প্রার্থীদের মোবাইল ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এত নজরদারির প্রয়োজন হচ্ছে কেন? তবে কি জয়ী প্রার্থীদের উপর ভরসা রাখতে পারছেন না? পশুপতিবাবুর জবাব, ‘‘জয়ী প্রার্থীদের উপর ভরসা আছে। তবে সকলেই খুব গরিব মানুষ। তা ছাড়া অনেকেই রাজনীতিক সচেতন নয়। তৃণমূলের হাত থেকে বাঁচাতেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ পিংবনি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৬ টি, তৃণমূল ৪ টি আসনে জয়ী হয়েছে। এই পঞ্চায়েত ‘দখল’ করতে তৃণমূলের দরকার আরও দু’টি আসন। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল ইতিমধ্যে দল ভাঙানোর চেষ্টা শুরু করেছে। অপরদিকে জিরাপাড়া, মাকলি ও আমলাশুলি অঞ্চলের জয়ী বিজেপি প্রার্থীদেরও নানাভাবে ভয় দেখিয়ে প্রলোভন দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও বিজেপির তোলা সমস্ত অভিযোগই ‘অবাস্তব’ বলে উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘অবাস্তব অভিযোগ, ওরা জোরজুলুম করে ভোটে জিতেছে, মানুষ ওদের সঙ্গে থাকবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy