দিঘায় ওড়িশার ইলিশ। নিজস্ব চিত্র।
জামাই আদরে ভরসা এ বার পড়শি রাজ্যের ইলিশ।
সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নিষেধাজ্ঞার সময় ফুরোচ্ছে আগামী ১৪ জুন। দীর্ঘ দু’মাসের ‘ব্যান পিরিয়ড’ কাটিয়ে মৎস্যজীবীরা ফের সমুদ্রমুখী হবেন ১৫ তারিখ থেকে। আর ১৬ জুন হল জামাই ষষ্ঠী। ফলে, ওই দিন টাটকা ইলিশ বাজারে আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
অথচ আদরের জামাইদের রসনাতৃপ্তিতে ইলিশ মাছের নানা পদের চাহিদা বরাবরের। করোনা আবহে সে চাহিদা কিছুটা কমলেও ইলিশের কদর থাকবেই। আর সে ক্ষেত্রেই সহায় হতে চলেছে ওড়িশার ইলিশ। জানা যাচ্ছে, কার্যত লকডাউনের বিধি-নিষেধের মধ্যেই 'চোরাপথে' ওড়িশা থেকে বেশ কিছু পরিমাণ ইলিশ মাছ এ রাজ্যের উপকূল এলাকায় ঢুকেছে। শুক্রবার নিউ দিঘায় এক ব্যবসায়ীর আড়তে যথেষ্ট ইলিশ মাছ দেখা গিয়েছে। এক-একটি মাছের গড় ওজন ৩০০-৫০০ গ্রাম। কোনও কোনওটি আবার বেশ বড়— প্রায় দেড় কেজির। ওই মাছ ব্যবসায়ী বলছেন, "৩০০ গ্রামের ইলিশ ৩০০ টাকা কেজি, ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।" ওড়িশার এই ইলিশ দিঘা, কাঁথি ও পূর্ব মেদিনীপুরের সীমানা পেরিয়ে পাশের জেলা হাওড়া এবং কলকাতাতেও পৌঁছচ্ছে বলে খবর। জোগান যথেষ্ট না হলে দাম আরও চড়ারই সম্ভাবনা।
করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউনের জেরে গত বছর এমনিতেই ইলিশের আমদানি কম হয়েছিল। তারপর যেটুকু সংরক্ষণ করা গিয়েছিল, ‘ইয়াসে’-র ধাক্কায় প্রবল জলোচ্ছ্বাসে সে সব তছনছ হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মাছের আড়ত ও বাজার। মৎস্যজীবী গ্রামগুলি সব ভেসে গিয়েছে। ভেঙে চুরমার হয়েছে বহু ট্রলার ও মাছ ধরার নৌকা। এই পরিস্থিতির আগেই অবশ্য গত ১৫ এপ্রিল থেকে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। ফলে, নতুন করে ইলিশ ধরাও পড়েনি।
কিন্তু সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা তো উপকূলবর্তী সব জেলার জন্যই প্রযোজ্য! আর ‘ইয়াসে’ ওড়িশাতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তা হলে ওড়িশার ইলিশ এ রাজ্যের বাজারে আসছে কী করে?
মাছ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ওড়িশার তালসারি এবং পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জায়গায় ছোট ছোট নৌকো নিয়ে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে যাচ্ছেন। তাঁদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে। চোরাপথে তাই আসছে দিঘার বাজারে। বিষয়টি স্বীকার করে নিচ্ছে সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগও। তিনি বলেন, "এখানকার কোনও ট্রলার কিংবা লঞ্চ সমুদ্রে গিয়ে ইলিশ মাছ নিয়ে আসেনি। ওড়িশা থেকে অত্যন্ত গোপনে ইলিশ মাছ এখানে নিয়ে এসে ব্যবসা করা হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি।’’ এই প্রবণতা ঠেকাতে আন্তঃরাজ্য সীমানাগুলিতে যাতে যথাযথ নজরদারি ও তল্লাশি চালানো হয় সে ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বলেও জানান সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy