খড়্গপুরের গোল্ডেনচক এলাকা। রামপ্রসাদ সাউয়ের তোলা ছবি।
অন্ধকার রাস্তায় ঝুঁকির যাত্রা!
রাতে রাস্তায় বেরিয়ে বিপদে পড়লেন খড়্গপুরের ইন্দার বাসিন্দা প্রহ্লাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। মোটরবাইকে খরিদা থেকে গোলবাজার ছাড়িয়ে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আলো ঝলমলে এক কিলোমিটার রাস্তা পেরোতে তাঁর পাঁচ মিনিট সময় লেগেছিল। তারপরে ট্রাফিক থেকে ইন্দা মোড়় রাস্তা অন্ধকারে হাতড়ে পেরোতে লাগল ১২ মিনিট। কোনও ক্রমে আঁধার রাস্তা পেরিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন প্রহ্লাদবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘শহরের রেল এলাকার অধিকাংশ রাস্তায় পথবাতি নেই। একে অন্ধকার, তার উপরে বাইকের আলো চোখে পড়ে ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। এতে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ শুধু প্রহ্লাদবাবু নন, আঁধার পথে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তায় বেরিয়ে বিপদেও পড়ছেন অনেকে।
খড়্গপুর শহরের পুর এলাকায় হাই মাস্ট ও মিনি মাস্ট বাতিস্তম্ভ বসিয়েছে পুরসভা। যদিও খড়্গপুর পুরসভার আটটি ওয়ার্ড রেল এলাকার অধীন। এই এলাকার রাস্তায় পথবাতি বসানোর দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। যদিও কোথাও পথবাতিই বসেনি, আবার কোথাও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খারাপ পথবাতি। কোনও কোনও রাস্তায় পথবাতি থাকলেও আলো অপর্যাপ্ত।
শহরবাসীর অভিযোগ, অন্ধকার রাস্তায় বাইকের লেজার আলোয় চোখ বন্ধ হয়ে যায়। অন্ধকার রাস্তায় এ ভাবে বাইক চালালে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর অন্ধকারে বিপদে পড়তে পারেন যে কোনও পথচারীও।
রেল এলাকার কয়েকটি রাস্তায় মান্ধাতার আমলের টিউবলাইট টিমটিম করে জ্বলে। রেলস্টেশন থেকে পুরাতনবাজার, সাউথসাইড স্কুল থেকে আরপিএফ ট্রেনিং স্কুল, গেটবাজার থেকে নিমপুরা, বাসস্ট্যান্ড থেকে ইন্দা মোড়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাও অন্ধকারে ডুবে থাকে। এ ছাড়া নিমপুরা, মথুরাকাটি, পোর্টারখোলি, নিউ ডেভেলপমেন্ট, সাউথ ডেভেলপমেন্ট, রেল কলোনি এলাকার রাস্তাতেও পর্যাপ্ত আলো নেই।
ডেভেলপমেন্ট রেল কলোনির বাসিন্দা শান্তনু দত্ত বলেন, “বোগদা থেকে পুরাতনবাজার পর্যন্ত বিএনআর গার্ডেন, সঙ্ঘশ্রী-সহ বিস্তীর্ণ রেল এলাকার রাস্তা সন্ধের পরে অন্ধকারে ডুবে যায়। এ ছাড়াও রেল এলাকার কোনও রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই। গাড়ি চালানোর সময়ে পথে আলো না থাকায় সমস্যা হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘অন্ধকার রাস্তায় উল্টো দিক থেকে আসা বাইকের জোরালো লেজার আলো বিপদ আরও বাড়াচ্ছে।” চায়নাটাউনের বাসিন্দা পোলা রাওয়েরও অভিযোগ, “বস্তি এলাকায় এখনও রেল বিদ্যুৎ দেয়নি। গোটা এলাকা সন্ধের পরে অন্ধকারে ডুবে যায়। যে আলো রয়েছে তারও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। বাধ্য হয়ে অন্ধকারেই যাতায়াত করতে হয়।”
যদিও আঁধার কাটানোর আশ্বাস অবশ্য এখনই মিলছে না। এ নিয়ে খড়্গপুরের ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলা বলেন, “নতুন করে কোথাও আলো লাগানোর পরিকল্পনা আমাদের এখনই নেই। তবে যেখানে পথবাতির মেরামতির প্রয়োজন আমরা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy