শৌলায় জনসংযোগের ফাঁকে স্মৃতি ইরানি। —নিজস্ব চিত্র।
অধিকারী বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে দলীয় কর্মসূচি সারলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। শুক্রবার দিনভর থাকলেন কাঁথিতে। তবে অদূরে থাকা সত্ত্বেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর দেখা হল না।
এ দিন কাঁথিতে দলের একগুচ্ছ কর্মসূচিতে যোগ দেন স্মৃতি। বিকেল পাঁচটা নাগাদ বিজেপি কার্যালয়ের সামনে দিয়ে তিনি যখন হেঁটে যাচ্ছিলেন, তখন সামনেই ‘শান্তিকুঞ্জে’ ছিলেন শুভেন্দু। পরে মন্ত্রীর কনভয় শহরের অন্যত্র চলে যায়। তারপরেই বেরিয়ে যান শুভেন্দু। তবে শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী এবং তাঁর অন্য ঘনিষ্ঠদের বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন স্মৃতি।
জেলা বিজেপি সূত্রে খবর, ভগবানপুর-২ ব্লকে গোটা বিধানসভা এলাকার পাঁচটি মণ্ডলের সভাপতিদের নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকের পাশাপাশি বরিষ্ঠ কার্যকর্তাদের সংবর্ধনা জানানো হয়। তারপর স্থানীয় দুঃস্থ এক পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ সারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবে বৈঠকের শুরুতেই তাল কাটে বিজেপির আদি-নব্য দ্বন্দ্বে। চণ্ডীপুর বিধানসভা এলাকার এক পুরনো কার্যকর্তাকে সংবর্ধনা জানানোর পরে মাইক হাতে তিনি সরাসরি বর্তমান জেলা সভাপতি-সহ অন্য পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। ক্ষুব্ধ স্মৃতি তাণর হাত থেকে মাইক নিয়ে স্পষ্ট বলেন, ‘‘আপনাকে দল সম্মান জানাচ্ছে। তারপরেও দলের বিরোধিতা করছেন? ভাবনাচিন্তা করেই সাংগঠনিক রদবদল করেছে দল। আপনার অভিযোগ থাকলে লিখিতভাবে জানান।’’ ভগবানপুর ও কাঁথির কয়েকজন পুরনো কার্যকর্তা অভিযোগপত্র দিয়েছেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মঙ্গল পাণ্ডের হাতে।
বিকেলে কাঁথি-১ ব্লকের শৌলা মৎস্যজীবীদের সঙ্গে জনসংযোগ সারেন স্মৃতি। আয়লা কেন্দ্র, বৈদ্যুতিক চুল্লির দাবি জানান মৎস্যজীবীরা। পাশে বসে থাকা সৌমেন্দু অধিকারীকে ‘দাদা’ সম্বোধন করে পরিকাঠামো উন্নয়নে পদক্ষেপ করতে বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। পাঁচ মৎস্যজীবী প্রতিনিধিকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করানোর আশ্বাসও দেন। স্মৃতি বলেন, ‘‘প্রতিটি ঘরের মানুষ এখানকার শাসকদলের আচরণে অতিষ্ঠ। ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই, একথাও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে এসে শুনতে হচ্ছে।’’
সৌমেন্দু বর্তমানে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে সৌমেন্দুর বক্তব্য, ‘‘বাড়তি দায়িত্ব নয়। উনি আমাকে স্নেহ করেন। তাই দাদা বলেছেন। যাঁরা দিল্লি যাবেন, তাদের নাম সংগ্রহ করে পাঠাতে বলা হয়েছে আমাকে।"
আর স্মৃতির সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়া প্রসঙ্গে শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, ফোনে স্মৃতির সঙ্গে কথা হয় বিরোধী দলনেতার। নন্দীগ্রামে কর্মসূচি থাকায় তিনি যে থাকতে পারবেন না, সে কথাও হয়। সাংগঠনিক বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে দু’জনের। সৌমেন্দুও বলছেন, ‘‘বিরোধী দলনেতার আলাদা কর্মসূচি ছিল। তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসার আগেই তিনি বেরিয়ে গিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy