ভাতা পেতে আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন কারখানার শ্রমিকরা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
বন্ধ হয়ে যাওয়া সুতোকল ‘কেশর মাল্টিয়ান মিল’-এর কর্মীদের ভাতা দিতে পদক্ষেপ করল শ্রম দফতর। কর্মহীন থাকা ১৮০ জন শ্রমিক এবার থেকে ভাতা পাবেন। ইতিমধ্যেই আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা ঘাটালের একটি হিমঘরের শ্রমিকদেরও ভাতা মঞ্জুর করেছে সরকার। আবেদনপত্র পূরণ করে পাঠালে ভাতা পাবেন তাঁরাও।
মেদিনীপুরের সহ শ্রম কমিশনার দীপনারায়ণ ভাণ্ডারী বলেন, “আমরা সরকারি নিয়ম মেনে নাম পাঠিয়েছিলাম। তাতে কেশর মাল্টিয়ান মিলের ১৮০ জন ও ঘাটালের বঙ্কিম হিমঘরের ১২ জনের নাম অনুমোদন করেছে সরকার। আবেদনপত্র জমা দিলেই আমরা তা পাঠিয়ে দেব। এক বছরের পর থেকেই সকলে ভাতা পাবেন।”
মেদিনীপুর শহরের তাঁতিগেড়িয়ার এই সুতোকলটি বন্ধ হয়েছিল গত বছর ২৮ জানুয়ারি। ‘লক আউট’ নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকে বন্ধ কারখানা খোলার দাবিতে দিনের পর দিন অবস্থান বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। অর্থাভাবে কারখানা চালানো সম্ভব নয় বলে সাফ দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। এই সুতোকলে ১৮০ জন স্থায়ী শ্রমিক এবং প্রায় সাড়ে চারশো অস্থায়ী শ্রমিক কাজ করতেন। সরকারি আইন অনুযায়ী, কোনও শিল্প এক বছরের বেশি বন্ধ থাকলে সরকার কর্মীদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করে। এ ক্ষেত্রেও তাই করা হল। তবে ভাতা পাবেন শুধু স্থায়ী শ্রমিকেরা। এ জন্য চলতি মাসের ২৪ তারিখের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। অস্থায়ী শ্রমিকদের জন্যও কিছু একটা করার দাবি উঠেছে। কিন্তু শ্রম দফতর জানিয়েছে, অস্থায়ীদের ক্ষেত্রে এমন কোনও নিয়ম নেই।
ঘাটালের ‘বঙ্কিম হিমঘর’ বন্ধ হয়েছে গত বছর ১ জানুয়ারি। ফলে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকেই সেখানকার কর্মীদের ভাতা পাওয়ার কথা। আর কেশর মাল্টিয়ানের শ্রমিকেরা ২৮ জানুয়ারির পর থেকে ভাতা পাবেন। শ্রম দফতর সূত্রে খবর, ভাতার পরিমাণ মাসে দেড় হাজার টাকা। এ ছাড়া পুজোয় মিলবে দেড় হাজার টাকা বোনাস। চাকরির মেয়াদ যতদিন ততদিনই তিনি এই ভাতা পাবেন।
ভাতা পাওয়ায় কিছুটা সুরাহা হবে শ্রমিকদের। তবে তাঁরা চান, কারখানা ফের চালু হোক। স্থায়ী শ্রমিক অজয় পাত্রের কথায়, “কিছু টাকা পাব জেনে ভাল লাগছে। কিন্তু অস্থায়ী শ্রমিকদের কী হবে?” আইএনটিটিইউসি-র কেশর মাল্টিয়ান মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পার্থ ঘনা বলেন, “আগে স্থায়ী কর্মীদের ভাতা চালু হয়ে যাক। তারপর অস্থায়ীদের জন্যও চেষ্টা চালানো হবে।’’
কিন্তু কারখানা খোলার ব্যাপারে কী করা হচ্ছে? শ্রম দফতর জানিয়েছে, বারবার আলোচনাতেও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। তারপরই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি শশধর পলমল অবশ্য বলেন, “কারখানা চালুর ব্যাপারে আমরা শ্রম দফতরের আধিকারিক থেকে মন্ত্রী, সকলের কাছেই আবেদন জানিয়েছি। মিল কর্তৃপক্ষের দাবিগুলি সরকার সহানুভূতির সঙ্গে আলোচনা করছে। আশা করছি, সুতোকলটি খুলতে বেশি দিন সময় লাগবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy