Advertisement
১৬ মে ২০২৪

জেলার কাজে খুশি, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

তিন দিনের পূর্ব মেদিনীপুর সফরের প্রথম দিনেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা ছিল তিনি নন্দীগ্রামকে ভোলেননি। আর সফরের দ্বিতীয় দিনে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি জানালেন, জেলায় যা কাজ হয়েছে তাতে তিনি সন্তষ্ট। সঙ্গে দিঘার নিরাপত্তার জন্য শহরের রাস্তায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সোহম গুহ।

প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সোহম গুহ।

সুব্রত গুহ
দিঘা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০১:১২
Share: Save:

তিন দিনের পূর্ব মেদিনীপুর সফরের প্রথম দিনেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা ছিল তিনি নন্দীগ্রামকে ভোলেননি। আর সফরের দ্বিতীয় দিনে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি জানালেন, জেলায় যা কাজ হয়েছে তাতে তিনি সন্তষ্ট। সঙ্গে দিঘার নিরাপত্তার জন্য শহরের রাস্তায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার দিঘার দত্তপুরে মৎস্য দফতরের অতিথিশালা ‘ওশিয়ানা’য় জেলার সব স্তরের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। দুপুর ২টো থেকে সাড়ে তিনটে পর্যন্ত চলে বৈঠক। বৈঠকের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দিঘার প্রচুর উন্নতি হয়েছে। ২০১২ সালে এসে যা যা বলেছিলাম, তার সব প্রকল্পই হয়ে গিয়েছে। ২০ কিলোমিটারের যে মেরিন ড্রাইভ হওয়ার কথা ছিল, তার মধ্যে আর মাত্র ১০ কিলোমিটারের কাজ বাকি। ওই কাজ খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে।’’ শহরের নিরাপত্তার জন্য রাস্তার ধারে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশও দেন তিনি। আর শহরে যে সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে তাদের সাইকেল দেওয়ার কথাও বলেন।

কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্পের ৯৭ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী আশাবাদী। জানান, কেন্দ্রীয় অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। আর এই কাজ হলে দুই মেদিনীপুরেরই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। নন্দীগ্রামে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের দাবি ছিল, সোনাচূড়ায় বাস টার্মিনাস তৈরি করে দেওয়ার জন্য। মুখ্যমন্ত্রী সেই
দাবিও মিটেয়েছেন।

তবে জেলার বেশ কয়েকটি কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেন মমতা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইপদ মণ্ডলকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, এই জেলা থেকে কেন সব থেকে বেশি রোগী কলকাতায় রেফার করা হয়। সামান্য ধমকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জেলায় এত ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা রয়েছে। তাহলে কথায় কথায় কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় কেন? যতটা পারবেন নিজেরাই সামলান। একান্তই না পারলে কলকাতায় পাঠাবেন। কিন্তু রেফার হওয়া রোগীর সংখ্যা আমাদের কমাতে হবে।’’

একশো দিনের কাজ নিয়েও খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। পটাশপুর, এগরা আর দেশপ্রাণ ব্লকে একশো দিনের কাজ হয়নি কেন, তা নিয়েও সামান্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। জেলার রাস্তার হাল নিয়েও যে তিনি সন্তষ্ট নন, তাও পরিষ্কার করে দেন। ন্যাশনাল হাইওয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অসিত সাহাকে জি়জ্ঞাসা করেন, ‘‘শুভেন্দু আমাকে বলেছে, ১১৬ বি জাতীয় সড়কের কাজ খুব ঢিমেতালে চলছে। এরকম করলে হবে না। তাড়াতাড়ি কাজ সারুন।’ আর আইনি জটিলতায় যে প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে, সেই জটিলতা দ্রুত কাটানোর জন্য সচিবদের অনুরোধ করেন। প্রয়োজনে তাঁদের আদালতে তদ্বির করার পরামর্শও দেন তিনি।

সোমবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের তেখালিতে প্রশাসনিক সভা সেরে মুখ্যমন্ত্রী সাড়ে সাতটা নাগাদ দিঘায় ঢোকেন। রাতে সৈকতবাসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। রাতে সৈকতবাসের সামনে পায়চারি করেন, চা খান। মঙ্গলবার সাড়ে দশটা নাগাদ বিশ্ব বাংলা উদ্যানের সামনের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করেন। তাঁকে দেখে ভিড় জমে যায় পর্যটকদের। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলতে পড়ে যায় হুড়োহুড়ি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সৈকতাবাসে ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর রওনা দেন ওশিয়ানার উদ্দেশে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC east midnapur mamata banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE