‘সুফল বাংলা’ প্রকল্পের সুফল যাতে প্রকৃত গ্রাহকদের কাছে পৌঁছয়, সে জন্য গ্রাহক-কার্ড তৈরির ভাবনা শুরু করছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। এর ফলে ফড়েদের রমরমা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে অনুমান। পাশাপাশি, ক্রেতাদের মধ্যে আগ্রহও তৈরি করা যাবে।
কৃষিজ বিপণন দফতরের আওতাধীন সুফল বাংলা প্রকল্পে সরকারি স্টল থেকে সুলভ দামে আলু, সব্জি, মাছ, মাংস ও ডিম বিক্রি করা হয়। বীরভূম, হুগলি ও কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় সুফল বাংলার স্টলগুলিতে ভাল বিক্রিও হচ্ছে। চলতি বছরের মার্চ মাসের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পাঁচটি জায়গায় সুফল বাংলার স্টল চালু করার কথা ছিল। কিন্তু এখনও এই প্রকল্পটি রূপায়ণ করা যায়নি।
কৃষিজ বিপণন দফতর সূত্রের খবর, মেদিনীপুর, খড়্গপুর, ঘাটাল, চন্দ্রকোনা রোড ও ঝাড়গ্রামএই পাঁচটি জায়গায় পাঁচটি বাতানুকুল স্টল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে প্রকল্পটি চালু করার কথা ছিল। কিন্তু স্টলের জন্য বাজার এলাকায় উপযুক্ত জমি অথবা ভাড়া-বাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কারণে স্টল চালু করতে গড়িমসি হচ্ছে। প্রতিটি স্টলের জন্য ১২০০ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন। জেলা কৃষিজ বিপণন দফতরের সহ-অধিকর্তা উত্তম হেমব্রম বলেন, “বাজারের মধ্যে এই স্টল না হলে ক্রেতাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হবে না। তাই আমরা উপযুক্ত জায়গায় স্টল করতে চাইছি। তাই প্রকল্পটি রূপায়ণে সময় লাগছে।”
সুফল বাংলা প্রকল্পে নথিভুক্ত চাষি, মৎস্যজীবী ও খামার-পালকদের কাছ থেকে সরাসরি আলু, সব্জি, মাছ, ডিম ও মাংস কিনে নেওয়া হয়। নামমাত্র লাভ রেখে সরকারি স্টল থেকে সেগুলি বিক্রি করা হয়। চাষিরা ন্যায্য দাম পান। ক্রেতারাও সুলভ মূল্যে জিনিস কিনতে পারেন। কোনও কোনও এলাকায় রয়েছে ভ্রাম্যমান বিপণি। তবে আশঙ্কাও রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আলু, সব্জি-সহ মানুষের দৈনন্দিন হেঁসেলের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেঁধে দেওয়ার জন্য বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও অধিকাংশ বাজার ফড়েরাই নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ। সুফল বাংলার স্টল থেকে প্রত্যেক ক্রেতাকে নির্দিষ্ট ওজনের জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়। তা সত্ত্বেও অন্যান্য জেলায় কোনও কোনও ক্ষেত্রে ফড়েদের লোকজন ভুয়ো ক্রেতা সেজে জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপরই জেলায় প্রকল্পটিকে সফল করার জন্য তৎপর হচ্ছে কৃষিজ বিপণন দফতর। সঙ্গে গ্রাহক-কার্ড চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, “আগামী মে-জুন মাসের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় পাঁচ এবং প্রস্তাবিত ঝাড়গ্রাম জেলায় একটি স্টল চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” নির্মলবাবু জানান, জেলা পরিষদ ও কৃষিজ বিপণন দফতরের যৌথ উদ্যোগে গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কার্ড তৈরি করা হবে। ওই কার্ড দেখালে জিনিসপত্র কেনার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ও ছাড় পাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নির্মলবাবু বলেন, “গ্রাহক-কার্ডের পরিকল্পনাটি সফল হলে এটা দৃষ্টান্তযোগ্য হয়ে উঠবে বলে আশা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy