এক সারিতে: মনীষীদের সঙ্গে মমতার ছবি। নিজস্ব চিত্র
সুভাষচন্দ্র, বিবেকানন্দ, ভগৎ সিংহের মতো মনীষীদের ছবি সার দিয়ে টাঙানো দেওয়ালে। সেই সারিতেই একেবারে মাঝে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। কেশপুরে তৃণমূলের একটি কার্যালয়ে মনীষীদের ছবির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ঠাঁই পাওয়ায় কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। তৃণমূলকে তাঁদের খোঁচা— ‘তাহলে মমতা কি মনীষী হয়ে গিয়েছেন’! প্রসঙ্গত, প্রেক্ষিত ভিন্ন হলেও মঙ্গলবারই বিজেপি নেতা মুকুল রায় কটাক্ষ করেছিলেন, ‘‘রাজ্যের সবচেয়ে বড় মনীষীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’
কেশপুরের শ্যামচাঁদপুরে রয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল কার্যালয়। দোতলা ঝাঁ চকচকে ওই ভবনে ঢোকার মুখেই রয়েছে মমতা- মনীষীদের ছবির ফ্রেমের সারি। তাতেই শুরু হয়েছে জলঘোলা। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নেতাজি, স্বামীজির সঙ্গে একই সারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি? ভাবা যায়! মহাপুরুষদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রাখার ঔদ্ধত্য হয় কী করে তৃণমূলের? ওদের লজ্জা হওয়া উচিত।’’
তৃণমূল জিতলেও কেশপুরের এই এলাকায় এখন বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরে গোটা এলাকা পদ্ম-পতাকায় ছেয়ে গিয়েছে। ফলপ্রকাশের পরের দিন তৃণমূলের এই কার্যালয়ে বিজেপির লোকেরা হামলা চালিয়েছিল বলেও অভিযোগ। সাংসদ দেব এলাকায় আসবেন বলে গত সোমবার কার্যালয়টি খোলা হয়েছিল। তড়িঘড়ি সাফসুতরো করা হয়।
সেই কার্যালয়ে মনীষীর ছবির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রাখা নিয়ে কোনও ‘অসঙ্গতি’ দেখতে পাচ্ছে না তৃণমূল। কেশপুরের এক তৃণমূল নেতার আবার বক্তব্য, ‘‘গত ৩৪ বছরে কার্ল মার্কস, লেনিনের মতো কমিউনিস্ট নেতাদের ছবি দেখতে দেখতে আমরা আমাদের দেশের মনীষীদের কথা ভুলতে বসেছিলাম। তাঁদের স্মরণ করতেই আমরা দলের কার্যালয়ে মনীষীদের ছবি বসিয়েছি।’’
তার মানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি মনীষীদের তালিকায় পড়ছেন? কেশপুরের ওই তৃণমূল নেতার জবাব, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এই রাজ্যের কাণ্ডারি। জননেত্রী। সেই কারণেই তাঁর ছবি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে অন্য কিছুর গন্ধ খোঁজা ঠিক নয়।’’
প্রসঙ্গত, মনীষীদের ছবির পাশে তৃণমূলনেত্রীর ছবি রাখা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিতর্ক আগেও হয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, এক সময়ে বিবেক চেতনা উৎসব উপলক্ষে রাজ্য যুবকল্যাণ দফতরের পক্ষ থেকে হোর্ডিং-বিজ্ঞাপনে স্বামী বিবেকানন্দ এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছবির মাঝখানে মমতার ছবি ছাপা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে।
কেশপুরের ছবি-বিতর্ক প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তেমন জননেত্রীও বটে। অন্য যাঁদের ছবি রয়েছে তাঁদেরও অসীম অবদান রয়েছে। দলের কার্যালয়ে দলনেত্রীর ছবি বসিয়ে দলের কর্মীরা কোনও অন্যায় কাজ করেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy