মেয়ে ও জামাইয়ের আত্মহত্যার পর পুলিশের কাছে অসহায়তার কথা জানাচ্ছেন দেবাশিস ঘোষের শাশুড়ি মিতা বসু। নিজস্ব চিত্র
প্রৌঢ় দম্পতির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। শুক্রবার ঘাটাল শহরের আলমগঞ্জের ওই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহগুলি উদ্ধার করে। ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোটও। পুলিশের অনুমান, দেনার দায়ে জর্জরিত হয়েই ওই দম্পতি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
মৃত দম্পতির নাম দেবাশিস ঘোষ (৬৫) এবং জলি ঘোষ (৫৫)। ঘাটাল শহরের পুরসভার মোড়ের কাছে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়ায় থাকতেন তাঁরা। একই ফ্ল্যাটে অন্য ঘরে থাকতেন দেবাশিসের শ্বশুর-শাশুড়িও। দম্পতির দুই মেয়ে। এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অন্য মেয়ে পড়াশোনা করেন কলকাতায়। পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি ঘাটালের এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ঋণের আবেদন করেছিলেন দেবাশিস ঘোষ। কিন্তু বয়স-সহ বিভিন্ন কারণে ঋণ পাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে ঋণ না পেলে, তাঁদের আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না বলে জানিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে মেল করেছিলেন তিনি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ওই মেল পেয়ে থানায় জানিয়েছিলেন। তারপরই ঘাটাল থানার পুলিশ দম্পতির সঙ্গে কথাও বলে। তখনই পুলিশকে ওই দম্পতি জানিয়েছিলেন, প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে ব্যবসায়।
জানা গিয়েছে, দেবাশিস ওষুধের পাইকারি ব্যবসা করতেন। বেশ কয়েক বছর আগে থেকে এক বিদেশি সংস্থার হয়ে ‘গ্রসারি আইটেম’ বাড়ি বাড়ি সরবরাহের কাজও করতেন। এর জন্য ওই সংস্থায় প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা জমা রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু করোনার সময় ওই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। জানা গিয়েছে, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য অন্য অনলাইন ব্যবসার খোঁজ তিনি। কিন্তু ইদানিং হাতে টাকা না থাকায় অবসাদে ভুগছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে জলি গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়েন। এরপর স্ত্রীকে নামিয়ে, একটি সুইসাইড নোট লিখে ভোরের দিকে দেবাশিস নিজেও আত্মঘাতী হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy