গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের। গত দেড় মাসে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আটজন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে ডেঙ্গি ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা। ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ডেঙ্গি আক্রান্ত সংখ্যা বাড়তে পরে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে এগরা মহকুমায় সে ভাবে ডেঙ্গি আক্রান্তের ঘটনা দেখা যায়নি। এখনও পর্যন্ত এগরা পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ধরা পড়েনি। পুরসভার তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি সচেতনতা নিয়ে প্রচারাভিযান তেমন চোখে পড়েনি। গ্রামে জমা জল ও অস্বাস্থ্যকর নিকাশি নালায় মশা মারার তেল স্প্রে ও ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর কাজে স্বাস্থ্যকর্মীদের সেভাবে দেখা যাচ্ছে না বলে বাসিন্দাদের দাবি। সারাবছর নিয়মিতভাবে ডেঙ্গি সচেতনতা মোকাবিলায় পুরসভা ও ব্লকে মাসিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ হয়। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর্মীরা ও গ্রামসম্পদ কর্মীরা প্রতিটি বাড়িতে ঘুরে এলাকায় জমা জলে জীবাণুনাশক ছেটানো সহ মশা মারার তেল স্প্রে করার কাজ করতেন। ডেঙ্গি ক্যালেন্ডারে তারিখ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যকর্মীরা সেই কাজের বিবরণ নথিবদ্ধ করতেন। সেই তথ্য প্রতিটি বাড়িতে থাকত। অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে সেই কর্মসূচি অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। যার পরিণামে পুরসভার তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
পটাশপুর-২ ব্লকে ২০২০ সালে এক মহিলার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তারপরেও গত দু’বছরে গ্রামীণ এলাকায় সেভাবে ডেঙ্গি সচেতনতা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। গত বছরেও এগরা মহকুমায় ব্লক ও পুরএলাকায় একজনও ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী দেখা যায়নি। এবছর গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতর। অগস্ট মাসে মহকুমার গ্রামীণ এলাকায় পাঁচজন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঁচজনই চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু সেপ্টেম্বরে ফের তিনজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। গত দেড় মাসে মহকুমায় আটজন ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মেলায় উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, ডেঙ্গি আক্রান্তদের অধিকাংশই গ্রামীণ এলাকার। ডেঙ্গির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তও। গ্রামীন এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও ব্লক প্রশাসনের কাছে এখনও সেই তথ্য অজানা। তবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ডেঙ্গি ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
হাসপাতালের সুপার তথা মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সমীর আচার্য বলেন, ‘‘গত দু’মাসে আটজন ডেঙ্গি আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তিনজন এখনও চিকিৎসাধীন। এলাকাভিত্তিক ডেঙ্গি প্রতিরোধে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy