এই ঘরেই আটকে ছিল প্রিয়া। সঙ্গে মা বন্দনা মণ্ডল।— রামপ্রসাদ সাউ
ক্লাসঘরে আটকে পড়েছিল এক প্রতিবন্ধী ছাত্রী। তাকে ভেতরে রেখেই দরজায় তালা লাগিয়ে চলে যান শিক্ষকেরা। প্রায় দু’ঘণ্টা ক্লাসে বন্দি ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির ওই মূক ছাত্রী।
শনিবার দুপুরে শালবনির জামবনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনায় এলাকায় শোরগোল পড়ে। পরে গ্রামবাসীদের ফোন পেয়ে ফের স্কুলে আসেন শিক্ষকেরা। দরজার তালা খুলে প্রিয়া মণ্ডল নামে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
শিক্ষকদের দাবি, ভুলবশত এই ঘটনা ঘটেছে। এক ছাত্রী যে ক্লাসের মধ্যে ছিল, তা নজরে আসেনি। প্রধান শিক্ষিকা তৃপ্তি কিস্কু বলেন, “ভুল হয়ে গিয়েছে। এই ভুল আর হবে না।”
শিক্ষা দফতরের এক সূত্রে খবর, প্রশাসনিকস্তরে ঘটনাক তদন্ত শুরু হয়েছে। জেলার অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অরুণাভ প্রহরাজ বলেন, “শালবনির জামবনিতে যে ঘটনা ঘটেছে তা অনভিপ্রেত। শিক্ষকদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” শিক্ষা দফতরের এক সূত্রে খবর, স্কুলের দুই শিক্ষককে শো-কজ করা হতে পারে।
জামবনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়া মূক। শনিবার দুপুরে স্কুল ছুটির পরে সে না ফেরায় দুশ্চিন্তা বাড়ে পরিজনদেরা। মা বন্দনা মণ্ডল ছুটে স্কুলে। কিছু গ্রামবাসীও জড়ো হয়ে যায়। তখনই এক জন দেখেন, প্রিয়া ক্লাসে জানলার পাশে বসে বসে কাঁদছে। তখনই বোঝা যায় ওই ছাত্রী তালাবন্ধ ক্লাসে আটকে পড়েছে। প্রিয়ার মা বন্দনাদেবী বলেন, “কী ভাবে এটা হল বুঝতে পারছি না। দরজায় তালা দেওয়ার সময় তো একবার ভাল ভাবে ক্লাসঘরটা দেখা উচিত ছিল।” তাঁর কথায়, “মেয়েটা কথা বলতে পারে না। যদি জানলা দিয়ে দেখা না যেত তাহলে কী হত! রবিবার তো কেউ স্কুলে আসত না।” বলতে বলতে গলা ধরে আসছিল বন্দনাদেবীর। যদিও এক শিক্ষকের সাফাই, “দরজায় তালা দেওয়ার সময় ওই ছাত্রী বেঞ্চের নীচে ছিল। বই পড়ে যাওয়ায় তুলছিল। তাই তাকে দেখতে পাওয়া যায়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy