জেলাশাসকের ‘দরবার’। প্রতীকী চিত্র।
মেদিনীপুরে কালেক্টরেটে জেলাশাসকের দফতরে বসবে ‘দরবার’। সেখানে সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ, দাবিদাওয়া শুনবেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরী। চলতি মাস থেকেই বসতে পারে ‘দরবার’।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের সমস্যা শুনে সমাধানে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেই এই কর্মসূচি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এডিএম-রা থাকবেন। নোডাল অফিসারেরা থাকবেন। আশা করছি, সমস্যা সঙ্গে সঙ্গে মেটাতে পারব।’’ সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে এমন কর্মসূচি ঘিরে জল্পনাও রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, জনসংযোগ আরও বাড়াতে চাইছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, কালেক্টরেটে মাসে দু’বার ওই ‘দরবার’ বসবে, দু’সপ্তাহ অন্তর একবার।
জেলাশাসকের উপলব্ধি, ‘‘আমি দেখছি যে লোকজন এখানে (কালেক্টরেটে) আসছেন। বাইরে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ডিএম অফিসে ঢুকতে পারছেন না।’’ ওই ‘প্রাচীর’ কি কালেক্টরেটের কিছু কর্মীই তৈরি করছেন? সদুত্তরে না গিয়ে জেলাশাসক বলেছেন, ‘‘কোনও কোনও কারণে এটি হতে পারে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যে সীমানা থাকছে, সেটা আমি ভাঙতে চাই। তাই এই অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছি। মানুষের ছোটখাটো সমস্যা থেকে থাকে। ছোটখাটো নানা সমস্যার দ্রুত সমাধানে এই পদক্ষেপ।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, সমস্যা নথিভুক্ত করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দেবেন জেলাশাসক।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে প্রচুর অভিযোগ যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রিভান্স সেলে’। একাধিক মহলের অনুমান, ওই অভিযোগের সংখ্যা কমাতে জেলায় এই পদক্ষেপ হয়ে থাকতে পারে। জেলায় সুরাহা মিলে গেলে তখন স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রিভান্স সেলে’ পৌঁছনো অভিযোগের সংখ্যা কমে যাবে। কারণ, যে জেলায় সুরাহা পেয়ে যাবে, সে কখনও সমস্যার কথা ওই সেলে জানাবে না। জেলাশাসক বলেন, ‘‘গ্রিভান্স সেলে পৌঁছনো অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি করা আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যেই রয়েছে।’’
পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রিভান্স সেলে’ সব মিলিয়ে অভিযোগ গিয়েছে ৪৩,৬১৩টি (৫ এপ্রিল পর্যন্ত)। ৪,০৭৯টি অভিযোগের নিষ্পত্তি হওয়া বাকি ছিল।
জেলাশাসকের ‘দরবার’ নিয়ে অব্যাহত রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায়ের খোঁচা, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত ভোট। এখন অনেক দরবারই এ ভাবে খুলবে!’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ যদিও বলেন, ‘‘এটা ভাল উদ্যোগ। অনেকের সুরাহা হবে।’’ সাধারণ মানুষও খুশি। মেদিনীপুরের বাসিন্দা ইমতিয়াজ নওয়াজ বলছেন, ‘‘সোজা জেলাশাসকের কাছে যেতে পারব। এখন মনে হচ্ছে, আমাদের কথা শোনার জন্যও কেউ আছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy